ধর্মতলায় আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ। —ফাইল ছবি।
প্রশ্ন অনেক! উত্তর নেই!
এক কথায় রাজ্যে বিরোধী বাম ও কংগ্রেস শিবিরে ছবিটা অনেকটা এই রকম। পুজোর মরসুম ফুরোতে না ফুরোতেই রাজ্যে ৬টি বিধানসভা আসনে হতে চলেছে উপনির্বাচন। আর জি কর-কাণ্ডের পরে উত্তপ্ত আবহে এই উপনির্বাচনের ফলকে নানা ভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা যে হবে, তা প্রত্যাশিতই। কিন্তু তার আগে বিরোধী শিবিরে রয়েছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। উপনিবার্চনে শাসক দল ও প্রশাসনের যৌথ দাপট মোকাবিলার শক্তি দেখানো যাবে? লোকসভা ভোটের অব্যবহিত পরে চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে চুটিয়ে জিতেছিল শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকি, লোকসভা নির্বাচনে এগিয়ে বা পিছিয়ে থাকার সমীকরণ মাসখানেকের মধ্যে উল্টে গিয়েছিল একেবারে! এখন আর জি কর-কাণ্ডের কোনও প্রভাব বৃহত্তর জনসমাজে পড়েনি, এই ছবি উঠে আসাই শাসক শিবিরের কাছে কাঙ্ক্ষিত। তার মোকাবিলায় বিরোধীরা কী করবে? লোকসভা নির্বাচন এবং তার পরের উপনির্বাচনের মতো এ বারও কি বাম ও কংগ্রেসের সমঝোতা হবে? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে অধীর চৌধুরীর বিদায়ের পরে রাজ্য কংগ্রেস কি বামেদের হাত ধরেই চলবে? নাকি নিজেদের শক্তি যাচাই করতে ‘একলা চলো’র নীতি নেবে? এবং এই ৬ আসনে প্রার্থী হবেন কারা?
সিপিএম সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে মাসদুয়েক ধরে টানা নাগরিক আন্দোলনের যে ঢেউ দেখা যাচ্ছে, তাকে বিবেচনায় রেখে প্রার্থী বাছাইয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রাথমিক ভাবনাচিন্তা হচ্ছে। গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সমর্থনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি কিছু মুখকে সামনে রেখে সেই পরীক্ষা করা যেতে পারে। তবে সেখানেও প্রশ্ন ‘উপযুক্ত মুখ’ খুঁজে পাওয়ার। আবার এই কৌশল নিয়ে দ্বিধাও আছে দলের অন্দরে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থায় দলীয় প্রতীকই বেশি পরিচিত। তার বাইরে কিছু করতে গেলে প্রতীক চেনানোর একটা ব্যাপার থাকে। তবে চেনা ছকের বাইরে হেঁটে দেখাও যেতে পারে। বিষয়টি আলোচনাসাপেক্ষ।’’ সিপিএম নেতৃত্বকে মাথায় রাখতে হচ্ছে, কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে কিছু আসনে দলীয় বৃত্তের বাইরে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের প্রার্থী করা হয়েছিল ২০১৬ সালে। কিন্তু তাঁরা দাগ কাটতে পারেননি।
পরিস্থিতি মাথায় রেখে তৃণমূলের তরফে কুণাল ঘোষ মন্তব্য করে রেখেছেন, ‘‘ভোটের ‘কার্নিভালে’ আসুন! মুখে তো অনেক হল। এ বার জনতার দরবারে বিচার হোক। চ্যালেঞ্জ করছি, আসন্ন উপনির্বাচনে তিন-চার জন উস্কানিদাতা সিনিয়র ডাক্তার বা অতিবিপ্লবী নব্য নেতা, কোনও জুনিয়র ডাক্তার সিপিএমের প্রার্থী হয়ে দেখান!’’ যদিও সরকারি চিকিৎসকদের ভোটে দাঁড়িয়ে পড়া এমন মুখের কথা নয়।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এখন ছুটি নিয়ে বাইরে। তাঁর ফিরতে ফিরতে উপনির্বাচনে মনোনয়ম জমা দেওয়ার সময় (২৫ অক্টোবর) পেরিয়ে যাওয়ার কথা। কোনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট জেলা নেতৃত্বের কাছে উপনির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম চেয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। যে ৬ আসনে উপনির্বাচন, তার মধ্যে মেদিনীপুর সিপিআই এবং মাদারিহাট আরএসপি লড়ে। সেই কারণে বামফ্রন্টকেও আলোচনায় বসতে হবে। গত ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে হাড়োয়া আইএসএফ এবং সিতাই কংগ্রেসকে ছেড়েছিল সিপিএম। সেই হিসেবে দেখলে নৈহাটি ও তালড্যাংরা থাকছে সিপিএমের জন্য।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরে এখনও সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক বার্তা বিনিময় হয়নি। কংগ্রেস সূত্রের খবর, সাংগঠনিক শক্তি যাচাই করতে দলের বেশ কিছু জেলা সভাপতি একা লড়ার পক্ষে। জেলার কাছে ৬ আসনের জন্যই নাম চেয়ে রাখা হয়েছে। তবে দলেরই একাংশ মনে করাচ্ছে, লোকসভা ভোটের পরে বাগদা বিধানসভার উপনির্বাচনে আলাদা লড়ে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের চেয়ে কম ভোট পেয়েছিল কংগ্রেস। প্রদেশ সভাপতির বক্তব্য, ‘‘সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy