দিল্লীর একেজি ভবনে সিপিএম পলিটব্যুরোর বৈঠক
দলের বিভিন্ন স্তরে শুধু বয়স-নীতি চালু করাই নয়। বয়সের সীমা মেনে যাঁদের সরে দাঁড়াতে হবে, তাঁদের অবসরকালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ভাবনা-চিন্তাও শুরু হল সিপিএমে। পেনশনের জন্য আলাদা তহবিল চালুর সিদ্ধান্ত নিয়ে এই ব্যাপারে দলকে পথ দেখাচ্ছেন কেরলের নেতৃত্ব।
চলতি সম্মেলন-পর্ব এবং তার পরে পার্টি কংগ্রেস থেকেই সিপিএমে বয়স-নীতি কার্যকর হবে। সেই নীতি অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকার সর্বোচ্চ বয়স হবে ৭৫। রাজ্য এবং জেলা কমিটির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা আরও কম হবে। বাংলায় ষেমন রাজ্য ও জেলা কমিটির সদস্যদের সর্বোচ্চ বয়ঃসীমা হবে যথাক্রমে ৭২ ও ৭০ বছর। এই নীতি প্রণয়নের সঙ্গে সঙ্গেই সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি সব রাজ্যে দলকে পরামর্শ দিয়েছে, যে সব নেতা-কর্মীরা দলের নীতি মেনে কমিটি বা সদস্যপদ থেকে সরে যাবেন, তাঁদের আর্থিক সহায়তার জন্য দলকেই রূপরেখা তৈরি করতে হবে। এই পামর্শের প্রেক্ষিতেই কেরলের সিপিএম সরাসরি পেনশন তহবিল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বঙ্গ সিপিএমে এই নিয়ে আলাপ-আলোচনা চললেও এখনও নীতি চূড়ান্ত হয়নি।
সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মীরা দলের কাছ থেকে ভাতা পান। আর যাঁদের নিজস্ব আয়ের সংস্থান আছে, তাঁদের দলকে চাঁদা ( লেভি) দিতে হয়। দলের বিধায়ক, সাংসদ-সহ জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের কাজের জায়গা থেকে যে বেতন পান, সেই টাকা দলের কাছে যায়। দল আবার সেখান থেকে চাঁদা কেটে নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের ভাতা দেয়। বিধায়ক-সাংসদদের পেনশনের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি, তবে অবশ্যই তাঁর অঙ্ক আলাদা। কেরল সিপিএমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৭৫ বছরের সীমা মেনে যাঁরা দলের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেবেন, তাঁদের পেনশন দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে তাঁদের চিকিৎসার জন্য সহায়তাও দলের তরফে থাকবে। ওই রাজ্যের প্রতিটি জেলা কমিটিকে এই কাজের জন্য পৃথক তহবিল করতে বলা হয়েছে। কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এই নির্দেশিকা রাজ্য কমিটিতে পাশ হয়েছে। তার পরে পলিটবুরোর সম্মতিও পেয়েছেন কেরলের সিপিএম নেতৃত্ব। প্রাক্তন বিধায়ক বা সাংসদেরা অবশ্য দলীয় পেনশনের আওতায় আসবেন না।
দক্ষিণী বিভিন্ন রাজ্যে রাজনৈতিক কারণে তহবিল বা চাঁদার আয়োজনে বরাবরই উদার হস্তে সাড়া মেলে সাধারণ ভাবে। সম্প্রতি ত্রিপুরায় বিজেপির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত সিপিএমের দফতর ও কর্মীদের সাহায্যের জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে আর্থিক সংগ্রহের ডাক দিয়েছিল দল। কেরল এক দিনে তুলে দিয়েছে ৬ কোটি টাকারও বেশি! এ বার জেলায় জেলায় দলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের জন্য পেনশনের তহবিলও জোগাড় করে ফেলা যাবে বলে পিনারাই বিজয়ন, এ বিজয়রাঘবনেরা আশাবাদী। প্রসঙ্গত, ‘শহিদ’ কর্মীদের পরিবারকে সাহায্য বা বিপন্ন পরিবারের কাউকে বাম পরিচালিত কোনও সংস্থা বা সমবায়ে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার চল আছে সিপিএমে। কেন্দ্র বা রাজ্যে দলের শীর্ষ স্তরের নেতাদের চিকিৎসার খরচের ব্যবস্থা করার রেওয়াজও আছে। তবে এই ধরনের পেনশন তহবিল এই প্রথম।
সিপিএম সূত্রের খবর, যে রাজ্যে দলের যেমন আয়ের সংস্থান, সেই অনুযায়ীই ‘প্রাক্তন’দের সহায়তার বন্দোবস্তের কথা ভাবা হচ্ছে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘সব রাজ্যের পরিস্থিতি সমান নয়। অবসরপ্রাপ্তদের আর্থিক সহায়তার ভাবনা কেন্দ্রীয় স্তর থেকেই হচ্ছে। তবে বয়স-নীতি মেনে কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেও তাঁদের মধ্যে যাঁরা এখনও সক্ষম, তাঁদের দলের কাজে যুক্ত রাখাটাও সেই সঙ্গে জরুরি। তাতে পুরনো নেতা-কর্মীদের মানসিক ভাবে ভাল থাকতে সুবিধা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy