রাজ্যে হারানো জমি পুনরুদ্ধারে এ বার গোটাদশেক লোকসভা আসন বেছে নিয়ে ঝাঁপানোর পরিকল্পনা করছে সিপিএম। প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে গত লোকসভা ভোটেই শূন্যে নেমেছিল সিপিএম। তার পরে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও তার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। রাজ্যে হারানো জমি পুনরুদ্ধারে এ বার গোটাদশেক লোকসভা আসন বেছে নিয়ে ঝাঁপানোর পরিকল্পনা করছে তারা। যা থেকে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের রসদ পাওয়া যেতে পারে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি বাংলায় এসে এ রাজ্যে বিজেপির জন্য ৩৫টি লোকসভা আসনের লক্ষ্য ঘোষণা করে গিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ মহলে ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাজ্যের মোট ৪২টি আসনের মধ্যে অন্তত ২২টিতে তাঁরাই এগিয়ে এবং স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে থাকবেন। বাকি ২০টি আসনে লড়াই হতে পারে। সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও লক্ষ্য নির্ধারণে যাচ্ছেন না। সাংগঠনিক ভাবে তাঁরা সেই ধরনের আসন চিহ্নিত করতে চাইছেন, যেখানে তৃণমূল ও বিজেপি, দু’পক্ষকেই কড়া লড়াইয়ে ফেলে নিজেদের আগের অবস্থা থেকে উঠে আসা যেতে পারে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিও দলে বার্তা দিয়েছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে কোথায় কাদের সঙ্গে সমঝোতা হতে পারে এবং কত আসনে ভাল লড়াই করা যাবে, সে সব চিহ্নিত করে এখন থেকেই প্রস্তুতিতে নেমে পড়তে হবে রাজ্যগুলিকে।
বাংলায় গত দু’টো বিধানসভা নির্বাচনেই বামেরা কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে লড়েছিল। কিন্তু গত লোকসভা ভোটে শেষ মুহূর্তে সমঝোতা ভেস্তে গিয়েছিল। কংগ্রেস যে দু’টি আসনে শেষ পর্যন্ত জিতেছিল, সেই বহরমপুর ও মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে অবশ্য প্রার্থী দেয়নি বামেরা। জয়ী হয়েছিলেন অধীর চৌধুরী ও আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী। এ বার কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেই বিজেপি ও তৃণমূলের সঙ্গে লড়াইয়ের পক্ষপাতী সিপিএম। বিশেষত, সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জোট করে সাফল্য পাওয়ার পরে এই সমঝোতার পক্ষে যুক্তি জোরালো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে সিপিএম নেতৃত্বের ভাবনা, কংগ্রেস সঙ্গে থাকলে সংখ্যালঘু ভোটের অংশ তৃণমূলের বাইরে তাঁদের দিকেও আসতে পারে। যার ইঙ্গিত সাগরদিঘিতে পাওয়া গিয়েছে।
সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ ও মুর্শিদাবাদের ৬টি আসনেই এ বার ভাল লড়াই করা যাবে। কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই অঞ্চলে বিজেপি ও তৃণমূলের ঘর থেকে কয়েকটা আসন বার করে আনার সম্ভাবনা আছে, এমনই মনে করছে তারা। বীরভূম জেলায় তৃণমূলের ‘দখল’ আলগা হচ্ছে, সেখানে জমি ফিরে পাওয়ার জন্য মাটি কামড়ে লড়াই চালানোর কথা বলছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তেমনই দক্ষিণবঙ্গে বসিরহাট, দমদমের মতো কয়েকটি কেন্দ্রে নজর দেওয়ার কথা বলছেন তাঁরা। কোথাও সংখ্যালঘু প্রভাব, কোথাও মধ্যবিত্ত অংশের প্রাধান্যের অঙ্ক তাঁদের হিসেবে রয়েছে। সিপিএমের অন্দরের আলোচনায় আসছে, রাজ্যে সাম্প্রতিক দুর্নীতি-কেলেঙ্কারির বেশি প্রভাব মধ্যবিত্ত অংশের উপরেই পড়ছে। এবং তাঁদের মতে, এই অংশ এখন আর বিকল্প হিসেবে বিজেপিকে নিয়ে তেমন মাথা ঘামাচ্ছে না।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। তৃণমূল এবং বিজেপি, দু’টো দলের জন্যই অস্বস্তির কারণও বাড়ছে। সেই জায়গায় নিজেদের গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে আমাদের। কিছু আসন বেছে নিয়ে আগে থেকে সাংগঠনিক স্তরে কাজ শুরু করতে পারলে ভাল ফল পাওয়ার সুযোগ আছে।’’ তার আগে পঞ্চায়েত ভোটে অবশ্য এক প্রস্ত সাংগঠনিক পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে বামেদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy