প্রতীকী ছবি।
নব্বইয়ের দশকে ফুলবাগান থানার ব্যারাকে ধর্ষণের ঘটনা। খবর জানাজানির পরেই থানার সামনে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ সভা করে নজর কেড়েছিলেন সিপিএম নেত্রী শ্যামলী গুপ্ত। পরবর্তী কালে তিনি হয়েছিলেন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সভানেত্রী। সেই মহিলা সমিতিই এখন কোনও ঘটনা ঘটলে রাস্তায় নেমে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য আলাদা দল গড়ল। যার পোশাকি নাম ‘ডেকো বাহিনী’।
ঘটনা ঘটলে দ্রুত রাস্তায় নেমে পড়া রাজনৈতিক দলের ধর্ম। চিরকাল সব রাজনৈতিক দলের কর্মীরা সেই কাজই করে এসেছেন। বিরোধী ভূমিকায় থাকার সময়ে সঙ্গে কে থাকল বা না থাকল, তার পরোয়া না করে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েই মানুষের আস্থা অর্জন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন সিপিএমের মহিলা সংগঠনকে কেন পুলিশ বা দমকলের কায়দায় ‘কুইক রেসপন্স’-এর জন্য আলাদা বাহিনী গড়তে হচ্ছে, তাতেই বিস্মিত রাজনৈতিক শিবিরের বড় অংশ।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘রাস্তায় নেমে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই রাজনীতিকদের কাজ। তবে সময়, পরিস্থিতি বদলেছে। তাই দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য আলাদা টিম গড়লে সুবিধা হবে বলে মনে করছেন অনেকে।’’ সাম্প্রতিক কালে সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লকের যুব সংগঠন এবং প্রদেশ কংগ্রেস দ্রুত প্রতিক্রিয়ার জন্য এমন বাহিনী গড়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই ভাবনা আর রাস্তায় সে ভাবে নামেনি।
ডাকলেই ছুটে আসেন, এমন বাছাই করা মহিলা কর্মীদের নিয়ে ‘ডেকো বাহিনী’ তৈরি করেছেন মহিলা সমিতির কলকাতা জেলা নেতৃত্ব। সংগঠনের এক রাজ্য নেত্রীর কথায়, ‘‘প্রতিটি জেলায় এমন বাহিনী তৈরি করার ভাবনাও রয়েছে। সংগঠনে এমন অনেক কর্মী রয়েছেন, যাঁদের ডাকলেই পাওয়া যায়। সেই কারণেই বাহিনীর এই নাম।’’ সিপিএমের এক নেত্রীর দাবি, ‘‘কলকাতায় ৪০টি অঞ্চল থেকে ৮-১০ মহিলাকে নিয়ে ‘ডেকো বাহিনী’ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বাহিনীর সদস্য সংখ্যা তিনশোর কিছু বেশি। আরও বহু কর্মী বাহিনীতে যুক্ত হচ্ছেন।’’
মহিলা সংগঠনের একাংশের ব্যাখ্যা, রাজ্যে বিরোধী দলের পরিসর দখল করে নিয়েছে বিজেপি। কোনও ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে রাস্তায় নামতে দেখা যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের ‘দুর্গা বাহিনী’কে। আবার তৃণমূলও নির্দিষ্ট কাজের জন্য তৈরি করেছে ‘বঙ্গজননী’ বাহিনী। ওই অংশের মতে, মহিলা সমিতিও এ বার একই পথে হাঁটতে চাইছে।
মহিলা সমিতির সদ্য অনুষ্ঠিত কলকাতা জেলা সম্মেলনের খসড়া প্রতিবেদনে ‘ডেকো বাহিনী’র উল্লেখ রয়েছে। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘কর্মসূচি পালনে আমরা একাধিক আঞ্চলিক কমিটিকে যুক্ত করে জমায়েত করেছি। যে কোনও ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সমাবেশ ঘটাতে ‘ডেকো বাহিনী’ তৈরি করেছি।’
এক সিপিএম নেত্রীর আরও ব্যাখ্যা, ‘‘কলকাতা রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র। কলকাতায় কোনও ঘটনা ঘটলে যেমন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ামূলক কর্মসূচি নিতে হয়, আবার রাজ্যে নারীসমাজ ও গণআন্দোলনের উপরে আক্রমণ হলে বা সামাজিক কোনও ঘটনা ঘটলে জেলা কমিটিকে বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy