সিপিএমের যুবনেত্রী মিনাক্ষি মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
ফেসবুক, টুইটারের মতো নেটমাধ্যমে অনুগামীদের চালানো ‘ফ্যান পেজ’ রাখা চলবে না। দলের নেতাদের এমনই নির্দেশ দিয়েছে সিপিএম রাজ্য কমিটি। সম্প্রতি সিপিএম-এর যুবনেত্রী মিনাক্ষি মুখোপাধ্যায়ের নামে চলা ফেসবুক পেজ ‘মিনাক্ষি মুখার্জি অফিসিয়াল’ হওয়া একটি পোস্ট নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনের প্রার্থীর নামে তৈরি ‘ফ্যান পেজ’-এ সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি পোস্ট করা হয়। সেই পোস্টে জোট সঙ্গী কংগ্রেস সম্পর্কে নানা বিরূপ মন্তব্য করা হয়েছিল। এর পরে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, সিপিএম-এর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নির্বাচনী লড়াই করা সত্বেও মিনাক্ষির নামের ওই পেজ থেকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিষোদ্বগার করা হচ্ছে কেন? এই প্রশ্ন ওঠায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছিল আলিমুদ্দিন ষ্ট্রিট। পরে দলীয় নির্দেশে ‘মিনাক্ষী মুখার্জি অফিসিয়াল’ ফেসবুক পেজ থেকে বিতর্কিত পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। তখন থেকেই নেটমাধ্যমে দলের নেতা-নেত্রীদের পোস্ট নিয়ন্ত্রণ করার ভাবনা চিন্তা শুরু হয়।
বিধানসভা ভোটের সময় যে ভাবে সিপিএম-এর নতুন প্রজন্মের নেতা-নেত্রীরা নেটমাধ্যমকে ব্যবহার করছেন, তাতে বিস্তর আপত্তি ছিল দলের একাংশের। বিধানসভা নির্বাচনের সময় মিনাক্ষির পাশাপাশি শতরূপ ঘোষ, দীপ্সিতা ধর, ঐশী ঘোষ, সৃজন ভট্টাচার্য, সায়নদীপ মিত্রর মতো প্রার্থীদের অনেকগুলি ‘ফ্যান পেজ’ চালু করে। মুজফ্ফর আহমেদ ভবন সূত্রে খবর, মিনাক্ষির ঘটনার পর থেকেই এ বিষয়ে রাশ টানার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। সম্প্রতি দলের ছাত্র-যুব সংগঠনের যাঁদের নামে এমন সব পেজ রয়েছে, তাঁদের উদ্যোগী হয়ে তা বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এ বিষয়ে ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তবে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট রাখায় কোনও অসুবিধা নেই বলেও নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
এমন নির্দেশের পরে সিপিএম-এর অনেক প্রবীণ নেতাও ‘ফ্যান পেজ’ বন্ধ করে দিচ্ছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন রাজ্য সম্পাদক তথা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও। এই প্রসঙ্গে সুজন বলেন, ‘‘এমন পেজ কে বা কারা করে থাকেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমাদের তা জানা থাকে না। তবে আমার ক্ষেত্রে একটি মাত্র পেজ রয়েছে যাঁর অ্যাডমিনকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। আমি তাঁকে পেজটি বন্ধ করতে বলেছি।’’ সিপিএম-এর এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘দলীয় আদর্শ ও নীতি অনুযায়ী কর্মসূচির ভিত্তিতে আমরা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। ব্যক্তির প্রতি আনুগত্যের কারণে নয়। তাই নিজস্ব অফিশিয়াল পেজ বা অ্যাকাউন্ট থাকলেও ‘ফ্যান-ক্লাব’ বা ‘ফ্যান পেজ’ না রাখাই ভাল।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালেই এ বিষয়ে দলের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল। তবে এখন এই সিদ্ধান্তে জোর দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলের অনেকরেই বলছেন, যে ভাবে লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে সিপিএম শূন্যে পৌঁছে গিয়েছে তাতে আগামী দিনে নেতাদের ফ্যান খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। সেই কারণেই এখন থেকে ‘ফ্যান পেজ’ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে রাখছে সিপিএম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy