পুরসভার ১১৮, ১১৯ এবং ১২৫-১৩২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে তৈরি বেহালা পশ্চিম বিধানসভা। এই ১০ টি ওয়ার্ড জুড়েই পোস্টারগুলি দেওয়া হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
নাম না করে স্থানীয় বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগের দাবিতে পোস্টার দিল সিপিএম। সম্প্রতি এমনই পোস্টার নজরে এসেছে বেহালবাসীর। সেই পোস্টারে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের জেলবন্দি বিধায়কের নাম উল্লেখ না করা হলেও, সেটি যে তাঁকে উদ্দেশ করেই করা হয়েছে, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও। এই পোস্টারটিতে বড় বড় করে লেখা হয়েছে “চোর তাড়াও বেহালা বাঁচাও।” এর নীচের ভাগে লেখা হয়েছে, “পরিষেবা কোথায় পাই, এলাকায় বিধায়ক নাই, চোর বিধায়কের পদত্যাগ চাই।” এই পোস্টারটি যে কলকাতা জেলা সিপিএমের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা রয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছর ২৩ জুলাই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে গ্রেফতার হন পার্থ। ২৯ জুলাই তাঁকে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকেই জেলবন্দি হয়ে রয়েছেন বেহালা পশ্চিমের ৫ বারের বিধায়ক। প্রায় নয় মাস হল বেহালা পশ্চিমকেন্দ্রে বিধায়ক না থাকায় সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন এলাকাবাসী। বিধায়ক না থাকার সমস্যাকে তুলে ধরেই পার্থর ইস্তফার দাবিতে সরব হয়েছে বেহালা পশ্চিমের সিপিএম। কলকাতা পুরসভার ১১৮, ১১৯ এবং ১২৫-১৩২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে তৈরি বেহালা পশ্চিম বিধানসভা। এই ১০ টি ওয়ার্ড জুড়েই পোস্টারগুলি দেওয়া হয়েছে।
সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার বলেন, “বিধায়ক না থাকায় বেজায় সমস্যার মধ্যে পড়েছেন বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের মানুষেরা। বিশেষ করে গরিব নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এলাকার বিধায়ক জেলবন্দি থাকায় তাঁরা কোনও সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না। তাই আমরা চাই মানুষ পরিষেবা পান, সেই কারণেই আমরা পোস্টারে চোর তাড়াও বেহালা বাঁচাও স্লোগান দিয়েছি।” সিপিএমের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে প্রাক্তন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ তথা ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থ সরকারের মোবাইলে ফোন করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে বিরোধী সিপিএমের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা অঞ্জন দাসের জবাব, “সিপিএম রাজনীতিগত ভাবে এমন দাবি করতেই পারে। তবে এর ফলে তাদের কোন রাজনৈতিক লাভ হবে বলে আমরা মনে করি না। মানুষ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চেনেন না। চেনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, আর চেনেন তৃণমূলের প্রতীককে।” আর বেহালার বিজেপি নেত্রী রাখী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি বেহালার বাসিন্দা হিসেবে বলতে পারি বিধায়ক জেলে থাকায় স্থানীয় মানুষের সমস্যা হচ্ছে। তিনি যে দল থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন, সেই দল যে সম্পূর্ণ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যতই তাঁকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল দুর্নীতির দায় ঝেড়ে ফেলুক, বেহালার মানুষ জানেন, পার্থবাবু তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি হিসাবে কী কী অন্যায় করেছেন।” তিনি আরও বলেন, “পার্থবাবুর পদত্যাগের যে দাবি উঠেছে, তাতে আমি বলব, আদালতে এসে যখন তিনি বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের মিথ্যে বিবৃতি দিতে পারছেন, তখন তিনি নিজের পদত্যাগের ঘোষণা করে বেহালা পশ্চিমের মানুষকে নতুন বিধায়ক নির্বাচনের সুযোগ দিতেই পারেন।”
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৮ মার্চ বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে একটি লিফলেট বিলি শুরু করেছিল বেহালা পশ্চিমের সিপিএম। শুধুমাত্র বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য এই লিফলেটটি তৈরি করা হলেও, সেই লিফলেটটি প্রকাশ করেছিল সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটি। লিফলেটে লেখা হয়েছিল, “চোর তাড়াও বেহালা বাঁচাও। চাকরি চোর ঘুষখোর, হাজতবাসী, অপদার্থ বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণ চাই।” নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি পার্থ জামিন পেলে প্রথম কোথায় যেতে চান? এমন প্রশ্নের জবাবে তৃণমূল বিধায়ক পার্থ জানিয়েছিলেন, নাকতলার বাড়িতে নয়। তিনি প্রথমেই যেতে চান তাঁর কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে— এমনই তাঁর ঘনিষ্ঠদের সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy