ভারতের ভোটে বিদেশি টাকার অভিযোগ ঘিরে কেন্দ্র এবং রাজ্যের কাছে শ্বেতপত্র প্রকাশ ও স্বাধীন, বিচারভাগীয় তদন্তের দাবি জানাল সিপিএম। এই সূত্রেই বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসকে এক পঙ্ক্তিতে বসিয়ে সরব হয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ভারতে ভোটের হার বাড়াতে ২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছিল তাঁদের প্রশাসন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে জলঘোলার মধ্যে এ বার সিপিএমের এমন দাবি ঘিরে চড়েছে রাজনৈতিক তরজা। যদিও সিপিএমের বক্তব্যে আমল দেয়নি কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দল।
হুগলির ডানকুনিতে দলের ২৭তম রাজ্য সম্মেলনের ফাঁকে রবিবার সেলিমের বক্তব্য, “মোদীর বন্ধু, ভারত-বিদ্বেষী ট্রাম্প নিজেই ভারতের নির্বাচনের জন্য টাকা পাঠানোর কথা বলেছেন। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে রাজ্যেও কেন্দ্রীয় বাহিনী, পর্যবেক্ষকদের নিজেদের হাতে রাখতে অঢেল টাকা ব্যবহার করা হয়েছিল। বিদেশি টাকা অন্য দেশের পথ দিয়ে তৃণমূল, বিজেপি, দু’পক্ষের কাছেই এসেছে।” এর পরেই সেলিমের দাবি, “এই নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ বিজেপিকে। রাজ্যও শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক। স্বাধীন, বিচারবিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থাও করা হোক। আমরা তো নির্বাচনী বন্ড, কর্পোরেট ফান্ডিং-এরও বিরোধিতা করেছি।”
রাজ্যে ২০১১-র পরে থেকেই বিদেশি টাকার ব্যবহার চলছে বলে অভিযোগ তুলে সেলিম নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর আন্দোলন পর্বের কথা উল্লেখ করে সরব হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, “আমরা তখন থেকেই বিদেশি হাতের কথা বলেছি। হাসাহাসি হয়েছিল। এখন বেরোচ্ছে যে, বিজেপি ও তৃণমূলের মতো দলগুলি বিভিন্ন সংস্থার টাকা নানা ভাবে এখানে কাজে লাগিয়েছে।” সিপিএমের আরও অভিযোগ, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে রাজ্যে নানা সংস্থার টাকা ব্যবহার করেই ‘বিভাজন’, গণনাকেন্দ্র ‘কেনা’র মতো নানা কাজ করা হয়েছে।
যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পাল্টা তোপ, “বিদেশি তহবিল ব্যবহারের অভিযোগ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে উঠেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মোদীকে হারাতে ১.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আনা হয়েছিল। আমাদের শ্বেত, রক্তিম কোনও পত্র প্রকাশেই অসুবিধা নেই। সেলিম না জেনে উল্টোপাল্টা বলছেন।” তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, “উনি যেখানে দাঁড়িয়ে বলছেন, সেখানে গত বিধানসভা নির্বাচনে ওঁর জামানত জব্দ হয়েছিল। তাই উন্মাদের মতো কথা বলছেন!”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)