প্রতীকী ছবি।
হারের ধারা বন্ধ হয়নি। তৃণমূলের জয়যাত্রাও আরও নিরঙ্কুশ হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে বিজেপির সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে এনে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ের রসদ খুঁজছে সিপিএম। পরাজয়ের আবহেও ঠিক ৬ মাস আগের বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় সামান্য হলেও ভোট-প্রাপ্তির খাতায় লাভ হয়েছে বামেদের। তার নেপথ্যে অবশ্য শান্তিপুর।
উপনির্বাচনে চার কেন্দ্রের ফলের হিসেবে, বামফ্রন্ট পেয়েছে প্রায় ৮.৫% ভোট। গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় যা পরিমাণে সামান্য বেশি, তবে হিসেবে প্রায় দ্বিগুণ। আবার শুধু সিপিএমের ভোটের হিসেব ধরলে তারা পেয়েছে প্রায় ১৫%। শান্তিপুরে পাওয়া ২০% ভোটই এ ক্ষেত্রে দলের গড় পারফরম্যান্স উন্নত করতে সাহায্য করেছে। দিনহাটা ও গোসাবায় দুই বাম শরিক দল ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি-র ফল অবশ্য শোচনীয়!
শতাংশের হিসেবের বাইরে ভোটের সোজা পাটিগণিতের নিরিখে জয়ী তৃণমূলের ভোট বেড়েছে এক লক্ষ ৭০ হাজার ৬৮১। উল্টো দিকে বিজেপির ভোট বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় দু’লক্ষ ৫৮ হাজার ২৬০ কমেছে। আবার বাম বা সিপিএমের ভোট বেড়েছে ২৭ হাজার ২৯৬। শান্তিপুরের কল্যাণে এই বৃদ্ধি হলেও বিজেপির ভোট কমে যাওয়াকেই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বাম নেতৃত্ব। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, রামে চলে যাওয়া ভোট যে আবার বামে ফিরতে পারে, শান্তিপুরেই তার ইঙ্গিত রয়েছে।
চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনেই জয়ী তৃণমূলের চেয়ে বহু পিছিয়ে শেষ করেছে বামেরা। কয়েক বছর ধরে প্রায় সব ভোটেই বামেদের অনেকটা পিছনে ফেলে দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। রাজ্যে ৬ মাস আগের বিধানসভা ভোট এবং এক মাস আগে ভবানীপুর-সহ তিন কেন্দ্রের ভোটেও সেই প্রবণতা অব্যাহত ছিল। কিন্তু এ বারের উপনির্বাচনে শান্তিপুর ও খড়দহে বিজেপির ঘাড়ের কাছে উঠে এসেছে সিপিএম। ওই দু’টি কেন্দ্রেই এ বার সিপিএমের প্রার্থী ছিল। শান্তিপুরে তাদের ভোট বেড়েছে, খড়দহে কিছুটা কমেছে। কিন্তু বিজেপির ভোট-ক্ষয় বেশি হওয়ায় তাদের সঙ্গে সিপিএমের ব্যবধান কমে এসেছে। রাজ্যে ‘বিকল্প’ শক্তি হিসেবে বিরোধী রাজনীতির পরিসরে কোণঠাসা দশা কাটানোর জন্য বিজেপির শক্তিক্ষয় তাদের পক্ষে কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে বলে সিপিএম নেতৃত্বের আশা।
গেরুয়া শিবিরের ধাক্কা খাওয়ার দিকেই মনোনিবেশ করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘বিজেপির ফানুস ফাটতে শুরু করেছে। মোদী বা মমতা যে যা-ই করুন না কেন, মানুষ এটা বুঝতে পারছেন, বিজেপির দিক থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন। আমরা কী ভাবে মানুষের বিশ্বাসের যোগ্য হয়ে উঠতে পারব, সেটা আমাদের ভাবতে হবে। বিজেপি এখনও দ্বিতীয় আছে, সেটা আরও নামবে। কিছু জায়গায় আমরা নিজেদের অবস্থান রাখতে পারছি, এটা ধরে রাখতে হবে।’’ আর যাঁর লড়াই হারের মধ্যেও বাম শিবিরে ইতিবাচক বার্তা এনেছে, শান্তিপুরের সেই সিপিএম প্রার্থী সৌমেন মাহাতো বলছেন, ‘‘ভোট বৃদ্ধি হয়েছে অনেকটা। এই ফল কর্মীদের মনোবল বাড়াবে এবং আগামী দিনে লড়াইয়ের রসদ জোগাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy