রবিবার সন্ধ্য়ায় বালিগঞ্জে মিছিল করল সিপিএম, ছিলেন পরাজিত প্রার্থী সায়রা হালিমও। নিজস্ব চিত্র
বালিগঞ্জের ভোটে দু’নম্বরে শেষ করেছেন সিপিএম প্রার্থী! তা সত্ত্বেও রবিবার সন্ধ্যায় 'অভিনন্দন মিছিল' করল সিপিএম। বালিগঞ্জ ফাঁড়ি এলাকা থেকে রিপন স্ট্রিট পর্যন্ত এই মিছিল হয়। বালিগঞ্জ এলাকার ভোটারদের ধন্যবাদ জানাতে এই মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন বামফ্রন্টের বিজিত প্রার্থী সায়রা হালিমও। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমত এই ভোটে যাঁরা আমাদের ভোট দিয়েছেন, তাঁদের আমরা অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। অনেক সামাজিক সংগঠনও আমাদের সমর্থন করেছিল। এনআরসি ও সিএএ নিয়ে যাঁরা প্রতিবাদ করেছিলেন, তাঁদেরও সমর্থনও আমরা পেয়েছি। তা ছাড়া যাঁরা এই রমজান মাসেও আমাদের ভোট দিতে বেরিয়েছিলেন, সমর্থন জানাতে বেরিয়েছিলেন, তাঁদেরও ধন্যবাদ।’’ তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে সায়রা আরও বলেন, ‘‘গুন্ডা বদমায়েশদের সাহায্য ছাড়াই এই সমর্থন ছিল। নীতিগত দিক থেকে আমাদের লড়াই সফল। এই সাফল্যে ভর করেই আমরা আগামী নির্বাচন লড়ব।’’ সায়রার সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, কলকাতা জেলা কমিটির সদস্য ফৈয়াজ আহমেদ খান।
সিপিএম নেতৃত্বের একাংশের দাবি, বালিগঞ্জ উপনির্বাচন অনেক দিক থেকেই সিপিএমকে নতুন করে অক্সিজেন দিয়েছে। বিধানসভা নির্বাচন তো বটেই শেষ কয়েকটি উপনির্বাচনে ভোট বাড়লেও, কোথাও সম্মানজনক স্থান পায়নি সিপিএম। প্রায় সবকটি উপনির্বাচনেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে বাম প্রার্থীদের। আর বালিগঞ্জে শুধু সায়রা হালিম দ্বিতীয় স্থানেই শেষ করেনি। বালিগঞ্জ বিধানসভার সাতটি ওয়ার্ডের মধ্যে দু'টিতে জয় পেয়েছে সিপিএম। উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর বাড়ি ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে। সেই ওয়ার্ড থেকে এ বার অনেক ভোটে জিতেছেন সায়রা। এমনই সব বিষয়ে চোখ রেখে বালিগঞ্জ উপনির্বাচনের ফলাফলকে অন্ধকারে আলোর রেখা হিসেবেই দেখছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
শনিবার ভোট গণনা শেষে দেখা যায়, কলকাতা পুরসভার ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৯১৮ ভোটে এগিয়ে ছিলেন সিপিএম প্রার্থী। পাশের ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডে সায়রা এগিয়েছিলেন ২২৪ ভোটে। বাকি পাঁচটি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করেছেন তিনি। কলকাতা পুরসভার ৬০, ৬১, ৬৪, ৬৫, ৬৮, ৬৯ ও ৮৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে তৈরি হয়েছে বালিগঞ্জ বিধানসভা। ৬০,৬১,৬৪ ও ৬৫ ওয়ার্ডে আধিক্য সংখ্যালঘু ভোটারদের। এই উপনির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওয়ার্ডের দু'টিতে সিপিএম প্রার্থীর এগিয়ে থাকাকে ইতিবাচক বার্তা হিসেবেই দেখছেন বামেরা। সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটি দাবি করছে, ভোটদাতারা তৃণমূল সরকারের ভ্রান্ত সংখ্যালঘু নীতির কথা বুঝতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি আনিস খান হত্যা ও রামপুরহাটের বগটুই-কাণ্ড তাঁদের চোখ খুলে দিয়েছে। এ বারের ভোটে বালিগঞ্জে শুধু দু’টি ওয়ার্ডে জেতাই নয়, অন্য দু’টি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওয়ার্ডেও ভাল ভোট পেয়েছেন তাঁরা। ভোট পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করে সিপিএম নেতৃত্বের আরও দাবি, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম বালিগঞ্জ আসনে ৮,৪৭৪ ভোট পেয়েছিল। ডিসেম্বরের পুরভোটে ওই বিধানসভা কেন্দ্রের সাতটি ওয়ার্ড মিলিয়ে সেই সংখ্যা পৌঁছেছিল ১১,২৪২-এ। আর এ বারের উপনির্বাচনে সেই বালিগঞ্জের ভোট বেড়ে হয়েছে ৩০,৮১৮।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy