Advertisement
০৩ জানুয়ারি ২০২৫

রাজ্যকে বিঁধেও সুর সাম্প্রদায়িকতা রোখার

বিধানসভার অধিবেশনের শেষ দিনে আলোচনা ছিল সাম্প্রদায়িকতা ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে দু’টি প্রস্তাবের উপরে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯ ০২:৫৭
Share: Save:

সাম্প্রদায়িকতার বিপদ মোকাবিলায় তিন অ-বিজেপি দলই একমত। কিন্তু রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতা ও প্রাদেশিকতার বাতাবরণ মাথাচাড়া দেওয়ার পিছনে শাসক দল তথা রাজ্য সরকারের ভূমিকার বিরুদ্ধেও সরব হল বিরোধী বাম ও কংগ্রেস।

বিধানসভার অধিবেশনের শেষ দিনে আলোচনা ছিল সাম্প্রদায়িকতা ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে দু’টি প্রস্তাবের উপরে। সাম্প্রদায়িকতা সংক্রান্ত প্রস্তাবের খসড়ায় সহমত তৈরি না হওয়ায় শাসক দলের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও সহযোগীদের তরফে দু’টি আলাদা প্রস্তাব জমা পড়েছিল। বাম ও কংগ্রেসের দাবি, সরকার উদারতা দেখালে অভিন্ন প্রস্তাবই গ্রহণ করা যেত।

প্রস্তাবের উপরে আলোচনায় পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থবাবু এবং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বৃহস্পতিবার বাম ও কংগ্রেসের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। সরকারের ভুল-ত্রুটি আপনারা ধরতেই পারেন। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে আলাদা লড়াই করবেন না।’’ তৃণমূলের প্রস্তাবে বাম ও কংগ্রেস পুরোপুরি সম্মত না হওয়ায় পরে সভার বাইরে উষ্মাও প্রকাশ করেছেন পার্থবাবু।

বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী দেশ জুড়ে সাম্প্রদায়িকতার বিকাশ এবং অতীতে পশ্চিমবঙ্গে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘এখানে ‘জয় শ্রীরাম’কে ‘জয় বাংলা’ দিয়ে ঠেকানো যাবে না। রাজ্য সরকারের ভূমিকা ঠিক থাকলে বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার এমন বিকাশ হত না।’’ প্রাদেশিকতার বিকাশ ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে সুজনবাবুর দেওয়া সংশোধনী অবশ্য গৃহীত হয়নি। মন্ত্রী ফিরহাদও ‘জয় শ্রীরাম’ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘মন্দিরে ‘জয় শ্রীরাম’ বা মসজিদে ‘আল্লা হো আকবর’ বলা পবিত্র। কিন্তু মানুষকে অপমান করার জন্য বললে অপবিত্র।’’ আবার পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বামের ভোট রামে যাওয়ার অভিযোগ উল্লেখ করেও সুজনবাবুদের মনোভাবের প্রশংসা করেছেন। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান দাবি করেছেন, কংগ্রেসই একমাত্র দল যারা কখনও সাম্প্রদায়িক শক্তির হাত ধরেনি।

তিন অ-বিজেপি দলের উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে বিজেপির পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গা দাবি করেন, তাঁদের দল সাম্প্রদায়িক নয়। গণপ্রহারের ঘটনার নিন্দা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও করেছেন। তাঁর অভিযোগ, বাংলায় রাজ্য সরকারই ইমাম ভাতা-সহ নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতার আবহ তৈরি করেছে, আইনশৃঙ্খলার সমস্যাও সামলাতে পারেনি। মনোজবাবুর মন্তব্য, ‘‘অ্যাকশন হলে তার রি-অ্যাকশন হবেই।’’

অন্য প্রস্তাবে এ দিন বিরোধিতা করা হয়েছে বাংলার ১০টি লাভজনক সংস্থা-সহ ৪৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণে কেন্দ্রের উদ্যোগের। কংগ্রেসের অসিত মিত্র প্রস্তাব দেন, সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের সর্বদল প্রতিনিধিরা দিল্লিতে দরবার করতে চলুন। পার্থবাবু জানান, বিষয়টি বিবেচনা করে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হবে। কংগ্রেস ও বাম বিধায়কেরা রাজ্যে মেট্রো ডেয়ারির বিলগ্নিকরণের প্রসঙ্গ তুললেও ‘বিচারাধীন বিষয়’ বলে তাতে আপত্তি তোলে সরকার পক্ষ। আপত্তি মেনে নেন স্পিকারও।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Assembly Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy