প্রতীকী ছবি।
একসঙ্গে তিন স্তরের ভোট করতে হয় বলে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ব্যালটেই হয়। আগামী বছর পুরভোটেও বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রের (ইভিএম) বদলে ব্যালট ফেরাতে চায় রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার বিরোধিতা করতে গিয়েও উভয় সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে সিপিএম এবং কংগ্রেসকে!
আলিমুদ্দিন স্ট্রিট ও বিধান ভবনের নেতারা চান না, বাংলা পুরোপুরি ব্যালটের যুগে ফিরে আসুক। কিন্তু দু’দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই লোকসভা ভোটের আগে ২১ দলের দাবিপত্রে সই করেছিলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ইভিএমে কারচুপির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছিলেন। ভোটে বিরোধীদের ভরাডুবির পরে কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে ইভিএম নিয়ে, কমিশনে ফের দরবারও করেছে। এখন বাংলায় মমতা ইভিএমে পুরভোট চাওয়ায় রাজ্যের সিপিএম ও কংগ্রেস নেতারা প্রমাদ গুনছেন। তাঁদের মাথায় ঘুরছে পঞ্চায়েত ভোটে ব্যালটের গোছা ছিনতাই করে দেদার ছাপ্পা দেওয়া এবং বুথের আশেপাশের এলাকায় ছাপ মারা ব্যালট উদ্ধারের ঘটনা। কিন্তু সরাসরি ব্যালটের বিরোধিতা করতে গেলে নিজেদের সর্বভারতীয় অবস্থানেরই উল্টো দিকে যেতে হয়!
দ্বিধায় পড়ে আপাতত ভারসাম্যের কৌশলই নিতে হচ্ছে দুই বিরোধী দলকে। সিপিএম নেতারা বলছেন, ইভিএম নিয়ে অভিযোগের জেরেই ভিভিপ্যাট চালু করতে হয়েছিল। কমিশনে গিয়েও ইভিএম বাতিলের দাবি তাঁরা করেননি। তাঁদের দাবি ছিল, বিশেষজ্ঞ কমিটিকে দিয়ে ইভিএমে কারচুপির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হোক। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ভোটে জিতলে ইভিএম ভাল আর হারলেই খারাপ, এই অবস্থান চলতে পারে না। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলায় তৃণমূল এবং ত্রিপুরায় বিজেপি, দু’পক্ষই মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে না পারলে ইভিএমেই কী আর ব্যালটেই বা কী!’’
লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। কিন্তু যিনি ব্যালটের দাবি করছেন, তিনি বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটে কী করেছেন?’’ সিপিএম ও কংগ্রেস নেতাদের আশঙ্কা, বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেখানে দাঁড়িয়ে, ব্যালটে পুরভোট করতে গেলে অশান্তি বাধবে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের মতে, ‘‘সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করার দায়িত্ব আগে নিক রাজ্য প্রশাসন ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন।’’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, ‘‘সাতের দশকে কংগ্রেস আমল বা ৩৪ বছরের বাম জমানাতেও তো ব্যালটে ভোট লুঠের বহু ঘটনাই ঘটেছে! আসল কথা হল আইনশৃঙ্খলা। ইভিএমে প্রযুক্তিগত ভাবে জালিয়াতি করার সুযোগ আছে। যে কারণে বহু উন্নত দেশ ব্যালটে ফিরে গিয়েছে। আমরা সে কথাই বলতে চাইছি।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy