Advertisement
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
CPIM

আসন ভাগ শক্তি মেপে, নির্বাচনী প্রস্তুতি বামফ্রন্টে

রাজ্যে গত দু’টি বিধানসভা নির্বাচনেই কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা হয়েছিল বামেদের।

প্রস্তুতী শুরু বামেদের।

প্রস্তুতী শুরু বামেদের। প্রতীকী চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৩৬
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনের পরে দু’দফায় ১০টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয়ের সঙ্গে সঙ্গেই আগামী বিধানসভা ভোটের সলতে পাকানো শুরু করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগাম প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল বাম শিবিরেও। পুরনো প্রথা থেকে বেরিয়ে শরিকদের মধ্যে আসন ভাগে এ বার ‘বাস্তবসম্মত সূত্র’ নিতে চাইছে বামফ্রন্ট। বিধানসভার কোন কোন আসনে লড়াই করার মতো সাংগঠনিক পরিস্থিতি তাদের রয়েছে, তার হিসেব করে তালিকা চাওয়া হয়েছে সব শরিক দলের কাছে। সেই তালিকা ‘যাচাই’ করে আসন বণ্টনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। হাত দেওয়া হবে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজে।

রাজ্যে গত দু’টি বিধানসভা নির্বাচনেই কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা হয়েছিল বামেদের। তার জেরে বামফ্রন্টের মধ্যে ১৯৭৭ সাল থেকে চলে আসা আসন বণ্টনের ছক আগেই ভেঙে গিয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে আসন-রফার সময়ে শরিক দলগুলির একাংশের তরফে নানা আপত্তি এসেছে। বিশেষ করে, বারবার ‘বিদ্রোহী’ হয়ে উঠেছে ফরওয়ার্ড ব্লক! সূত্রের খবর, সদ্য হয়ে যাওয়া ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কোচবিহারের সিতাই আসন কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়ার যে সম্ভাবনা ছিল, তাতেও বাধা হয়েছিল ফ ব-ই। যদিও ভোটে তাদের ফল শোচনীয়। মাদারিহাটে আর এক শরিক আরএসপি-ও সুবিধা করতে পারেনি। এই পরিপ্রেক্ষিতে আসন ভাগের সূত্র নতুন করে ভাববে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।

সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী আসন বণ্টন সংক্রান্ত প্রস্তাব বামফ্রন্টে পেশ করেছেন বিমান বসু। সেই প্রস্তাবের সার কথা, ৪০ বা ৪৫ বছর ধরে যে আসনে লড়েছি, সেই আসনে লড়েই যাব— এই ধারণা আঁকড়ে থাকলে চলবে না। বর্তমানের পরিস্থিতি অনুযায়ী ভাবতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিধানসভা কেন্দ্রে কত বুথ রয়েছে, কত বুথে সংশ্লিষ্ট দলের ন্যূনতম লোকজন রয়েছে, সেই এলাকায় ওই দলের রাজনৈতিক সক্রিয়তা কতটা, তা মাথায় রাখতে হবে আসন দাবি করার আগে। সব শরিক দলকে আসনের প্রাথমিক তালিকা বামফ্রন্টে জমা দিতে বলা হয়েছে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে। ফ্রন্টের মধ্যেই প্রস্তাব এসেছে, আসন ভাগের ছক তৈরি হয়ে গেলে সম্ভাব্য প্রার্থীদেরও বেছে নিয়ে এলাকায় এখন থেকে কাজে নামিয়ে দেওয়া হোক। স্থানীয় মানুষের কাছে দৃশ্যমানতা বাড়াতে না পারলে ভোট বাড়ানোর আশা দুরূহ বলেই মনে করছেন বাম নেতৃত্ব।

এর আগে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে সিপিএম তাদের পুরনো ‘কোটা’ থেকে অনেক আসন ছেড়ে রাজ্যে লড়েছিল ১৩৮টি কেন্দ্রে। আনুষ্ঠানিক ভাবে ফ ব-র জন্য ২১, আরএসপি-র ১১ এবং সিপিআইয়ের ১০টি আসন বরাদ্দ হয়েছিল। তার বাইরেও কংগ্রেসের সঙ্গে ফ ব-সহ কোনও কোনও শরিক দলের লড়াই হয়েছিল। সংযুক্ত মোর্চার মধ্যে ৩২টি আসনে প্রার্থী ছিল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ)। তাদের সঙ্গে আবার কংগ্রেসের রফা হয়নি। কংগ্রেস ঘোষিত ভাবে লড়েছিল ৯২টি আসনে। সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, আগামী ২০২৬ সালেও বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ সব দলকে সঙ্গে নিয়ে লড়াইয়ের প্রস্তুতি থাকবে। কিন্তু তার আগে বাম শিবিরে ঘর গুছিয়ে রাখতে হবে। এবং প্রয়োজন মতো আসন ছাড়তে হবে।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “জনতা দলের সঙ্গে রফা শেষ মুহূর্তে ভেঙে গিয়েছিল ১৯৭৭ সালে। তার জেরে অনেক বেশি আসনে আমাদের লড়তে হয়েছিল, সেই অনুযায়ী বণ্টনও হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি অনেক আগেই বদলে গিয়েছে। সাম্প্রতিক কালে দেখা গিয়েছে, যে আসনে যে দল লড়ছে, ভোটের কাজে তাদের সক্রিয়তা সেই ভাবে দেখা যাচ্ছে না। এ বার বাস্তবসম্মত হিসেব তৈরি করার চেষ্টা চলছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Legislative Assembly CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy