ফাইল চিত্র।
সম্মেলনের পর্ব মিটে গেলে রাজ্যে চেহারাই বদলে যেতে পারে সিপিএমের! বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রদের সরে দাঁড়াতে হবে নেতৃত্ব থেকে। পরিবর্তে সামনে আসবে অন্য মুখ। সংগঠনে গতি আনতে যে পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে সিপিএম, তা কার্যকর হলে এমন বড়সড় পরিবর্তনই দেখা যাবে কয়েক মাসের মধ্যে।
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য থাকার জন্য বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৭৫-এ বেঁধে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে চর্চা চলছে সিপিএমে। কেন্দ্রীয় স্তরের ওই নীতির সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই এ বার রাজ্য কমিটিতে থাকার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স ৭২-এ বাঁধতে চাইছে আলিমুদ্দিন। জেলা কমিটির ক্ষেত্রে অবসরের বয়স হবে ৭০। তারও নীচে এরিয়া কমিটির সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য হবে ৬৫ বছরের বয়ঃসীমা। সর্বভারতীয় স্তরের আগেই বাংলায় রাজ্য কমিটিতে নতুন মুখ অন্তর্ভুক্তির বয়স ইতিমধ্যেই ৬০ ধার্য করে দিয়েছে আলিমুদ্দিন। এ বারের সম্মেলনে কমিটি থেকে অব্যাহতি নেওয়ার বয়সও ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। দলের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকের প্রথম দিনেই সংগঠনে তারুণ্যকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য এই নীতির কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
বয়সের যে প্রস্তাবিত সীমা ঘিরে সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে আলোচনা চলছে, তা ঠিক মতো মানা হলে বিমানবাবু, সূর্যবাবু, রবীন দেব, মদন ঘোষ, নৃপেন চৌধুরীদের মতো রাজ্য নেতৃত্বের বহু পরিচিত মুখকেই একসঙ্গে অন্তরালে যেতে হবে। জেলা নেতৃত্বেও অনেক পুরনো মুখকে সরে দাঁড়াতে হবে নেতৃত্ব থেকে। তার জায়গায় তুলে আনতে হবে তুলনায় কম বয়সের নেতাদের।
প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে কোভিড-বিধি মেনে বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক। উপস্থিত আছেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। বাংলায় দল ও সংগঠন যে ভাবে চলছে, তা নিয়ে এ দিন বৈঠকের গোড়াতেই ইয়েচুরির উষ্মার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য নেতৃত্বকে। কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্যসমাপ্ত বৈঠকে গৃহীত পর্যালোচনা রিপোর্টে বলা হয়েছে, সিপিএমের কাছে বিজেপি ঘোষিত প্রধান প্রতিপক্ষ হওয়া সত্ত্বেও রাজ্যে বাম নেতাদের প্রচারে অনেক ক্ষেত্রেই বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একই রকম নিশানা থাকায় ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি হয়েছে। সেই সূত্রেই এ দিন ইয়েচুরি প্রশ্ন তুলেছেন, সামাজিক মাধ্যমে কেউ ‘বিজেমূল’ জাতীয় স্লোগান তৈরি করল আর রাজ্য নেতারা নির্দ্বিধায় সেই সব কথা প্রচারে ব্যবহার করলেন— এটা কী ভাবে হল? বাংলায় ২০০৮ থেকেই বামেদের ভোট ক্ষয় চলছে এবং সেই সঙ্গেই সংগঠনের হাল খারাপ হচ্ছে, কেন্দ্রীয় কমিটির রিপোর্টের সূত্রে এই প্রশ্নেও ইয়েচুরির সমালোচনা শুনতে হয়েছে রাজ্য কমিটির নেতাদের। সংগঠনের ক্ষেত্রে কোনও শিথিলতাই এর পরে মেনে নেওয়া যায় না এবং দলের নিজস্ব শক্তি বাড়লে তবেই জোট বা নির্বাচনী আঁতাঁতে কাজ হবে, এই বার্তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ইয়েচুরি।
রাজ্য কমিটিতে জেলা নেতাদের কেউ কেউ অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, তরুণদের অগ্রাধিকার দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ হলেও ‘যান্ত্রিক ভাবে’ বয়সের সীমা ঠিক করে দেওয়া কি রাজনীতিতে যুক্তিযুক্ত? বিতর্কের শেষে আজ, শুক্রবার জবাবি বক্তৃতায় দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করার কথা রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy