প্রতীকী ছবি।
কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ার সাত দিন পরে হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন গড়িয়ার সনৎকুমার দে। কিন্তু শেষমেশ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া হল না। তার আগেই অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতরে মারা গেলেন তিনি। সোমবার দুপুরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে এই ঘটনায় সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের চালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে অদক্ষতা এবং গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। গোটা ঘটনা স্বাস্থ্য দফতরের নজরেও এসেছে বলে অভিযোগ মৃতের ভাইপো ঋত্বিক দে-র।
ঋত্বিকবাবুর অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতর থেকে যে অ্যাম্বুল্যান্স গিয়েছিল তার স্ট্রেচার ভাঙা ছিল। চালক ও সহকারী প্রথমে দাবি করেন, পরিজনদের দায়িত্বে রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা। কিন্তু পরে স্বাস্থ্য দফতরের ‘ধমক’ খেয়ে চাদরের স্ট্রেচার তৈরি করে রোগীকে তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু অপটু হাতে তুলতে গিয়ে দু’ বার পিচের রাস্তায় ধুলোর মধ্যে রোগীকে শুয়ে দেন বলেও অভিযোগ। এমনকি, গড়িয়া থেকে মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছে নিজেরা বিশ্রাম নিতে চলে গিয়েছেন। পরিজনেরা না-পৌঁছনো পর্যন্ত পক্ষাঘাতগ্রস্ত কোভিড রোগী অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতরেই পড়ে ছিলেন। ভর্তি হওয়ার আগে সেখানেই মারা যান তিনি।
ঋত্বিকবাবু জানান, জুন মাসে সেরিব্রাল স্ট্রোকের জেরে শরীরের একাংশে পক্ষাঘাত হয় সনৎবাবুর। সে সময় কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়েনি। ১৪ জুলাই ভোরে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ফের ওই হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে পরীক্ষায় কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ে। ওই হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা হচ্ছে না। অন্যত্র কোথাও ভর্তি করাতে না-পেরে শেষমেশ গড়িয়ার বাড়িতেই ফিরিয়ে নেওয়া হয় বৃদ্ধকে। পিপিই পরে বাড়িতে তাঁর সেবা করতেন ঋত্বিকবাবুই। তিনি বলেন, ‘‘কাকা-কাকিমা নিঃসন্তান। বৃদ্ধ কাকিমার পক্ষে ওই কাজ সম্ভব নয়।’’ তিনি জানান, ১৪ জুলাই বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ১৬ জুলাই স্বাস্থ্য দফতর থেকে ফোন এসেছিল। তার পর থেকে আর কোনও যোগাযোগ করেনি তারা। গত সপ্তাহের শেষে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের আপ্ত-সহায়ক ঋত্বিকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্র নেন। এ দিন সকালে সনৎবাবুর শারীরিক অবস্থান অবনতি হওয়ায় তাঁর ভাইপো ফের মন্ত্রীর আপ্ত-সহায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর কিছু ক্ষণের মধ্যে স্বাস্থ্য দফতরের ফোন পান তিনি এবং তারও কিছু ক্ষণ পরে গড়িয়ার বাড়িতে অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছয়। তার পরেই ওই ঘটনা!
ঋত্বিকবাবু জানান, অ্যাম্বুল্যান্সের পিছুপিছু তিনিও হাসপাতালে যান। মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছে দেখেন, জরুরি বিভাগের কাছে চাতালে চালক ও সহকারী শুয়ে হাঁফাচ্ছেন। তাঁদের অসুস্থতার খবর পেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকেরা এসেছেন। কাছেই অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতরে ছিলেন সনৎবাবু। ঋত্বিকবাবু সেই বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আনতেই দ্রুত ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়। সে সব সেরে ফের অ্যাম্বুল্যান্সের কাছে এসে দেখেন, ভিতরেই বেড থেকে কাত হয়ে পড়ে রয়েছেন সনৎবাবু। শরীর নিথর। বেলা পৌনে তিনটে নাগাদ তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। সন্ধ্যায় দেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy