প্রতীকী ছবি।
জেলায় জেলায় করোনা সংক্রমণও লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে। এখনও অবশ্য বেশিরভাগ জেলায় হাসপাতালে ভর্তির হার কম। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিচ্ছিন্নবাসে থাকছেন রোগীরা।
একই সঙ্গে অনেক জেলার মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তার ও চিকিৎসাকর্মীদের সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে শুরু করায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যদিও স্বাস্থ্য দফতর থেকে বলা হচ্ছে, করোনা শয্যা তৈরি রয়েছে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোও ঠিক আছে।
উত্তরবঙ্গে বছরের শেষ দিনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২৪ জন। পাঁচ দিনের মধ্যে তা হয়ে গিয়েছে ২৮৯, যা দ্বিগুণেরও বেশি। উত্তরের স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে, কোভিড শয্যা ও অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি আছে বিপদ সামলানোর জন্য। পরিস্থিতি সামাল দিতে এর মধ্যেই বিভিন্ন শহরে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োনের ঘোষণা করা হয়েছে।
পাহাড়, ডুয়ার্সে বড়দিন ও নতুন বছরের মরসুমে বিপুল পর্যটক এসেছিলেন। একই ভাবে ভিড় হয়েছিল দিঘার মতো সমুদ্রসৈকতেও। পূর্ব মেদিনীপুরের এই অঞ্চলে হোটেল মালিক ও কর্মীদের কোভিড পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার পর্যটক কেন্দ্রগুলিও ভিড় থেকে বাদ যায়নি। দুই জেলাতেই লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। পুরুলিয়ায় সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ দিনে তিরিশের আশপাশ থেকে দু’শোর কাছে পৌঁছে গিয়েছে। বাঁকুড়াতেও তাই।
পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী মিলিয়ে ৩৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, প্রত্যেকে বিচ্ছিন্নবাসে আছেন। তবে এর ফলে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হবে না বলেই তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
পূর্ব বর্ধমানে বুধবার এক দিনে ২২১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার সংখ্যাটা ছিল ৯৯। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ৮৯৪টি কোভিড-শয্যা তৈরি রয়েছে। সেখানে দেড় শতাংশেরও কম রোগী ভর্তি রয়েছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, “প্রতিটি ব্লক হাসপাতালে পাঁচ-দশটি শয্যা বিচ্ছিন্ন করে রাখতে বলা হয়েছে।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরেও আক্রান্ত লাফিয়ে বাড়ছে। তাই সেখানে এবং পাশের শহর মেদিনীপুর মিলিয়ে মোট ১২টি মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে কোলাঘাটে বিডিও, যুগ্ম বিডিও, ব্লক স্বাস্থ্য অধিকার-সহ এক ঝাঁক আধিকারিক সংক্রমিত হয়েছেন। শুধুমাত্র তমলুক শহরে একদিনেই করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন ৩০ জন। মুর্শিদাবাদেও জেলা জুড়ে সাতটি সরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে শয্যা সংখ্যা প্রায় আটশো। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, আক্রান্তদের অধিকাংশই বিচ্ছিন্নবাসে আছেন। নদিয়াতেও একই ছবি।
দ্রুত সংক্রমণের তালিকায় সামনের সারিতে রয়েছে হাওড়া জেলা। সেখানকার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আক্রান্তদের অধিকাংশই উপসর্গহীন। তাঁদের বাড়িতেই চিকিৎসা সম্ভব। তবে এরই মধ্যে উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা ক্যানিং মহকুমার বাসন্তী ও ক্যানিং ১ ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি। সংক্রমণ রুখতে বৃহস্পতিবার থেকে টানা পাঁচ দিন বাসন্তীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ডায়মন্ড হারবার স্টেশন বাজার সোম ও বৃহস্পতিবার, কপাটহাট বাজার মঙ্গল ও শুক্রবার এবং নাইয়াপাড়া লালপোল বাজার বাটা পাম্প থেকে জেটি ঘাট পর্যন্ত সমস্ত দোকান শনি ও বুধবার বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে সমস্ত মিষ্টি ও ওষুধের দোকান খোলা থাকবে।
উত্তর ২৪ পরগনায় ৪২টি কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা জুড়ে ২ হাজার কোভিড শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে।
বীরভূমে এ দিন দৈনিক আক্রান্ত সাড়ে চারশো পার করেছে। রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলায় বুধবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ১০৫-এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy