রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর যে হিসাব-বহির্ভূত সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে, তা রেশন দুর্নীতির মাধ্যমেই তৈরি— এর প্রমাণ কোথায়? আদালতে তদন্তকারী সংস্থা ইডির কাছ থেকে জানতে চাইলেন বিচারক। এ প্রসঙ্গে পাল্টা যুক্তি সাজিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাও। কেন বালুর সম্পত্তির সঙ্গে রেশন দুর্নীতির যোগ রয়েছে বলে তারা মনে করছে, আদালতে তার পক্ষে একাধিক যুক্তি দেওয়া হয়েছে। আবার এই দুর্নীতিকে হিমালয়ের সঙ্গে তুলনা করেছে ইডি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় জামিন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বালু। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল। ইডি প্রাক্তন মন্ত্রীর জামিনের বিরোধিতা করলে বিচারক তাদের পাল্টা প্রশ্ন করেন। তিনি জানান, নদিয়ার যে এফআইআর থেকে এই সংক্রান্ত তদন্ত শুরু হয়েছিল, সেখানে সাধারণ চুরির অভিযোগ ছিল। তবে রেশন সংক্রান্ত সেই অভিযোগকে কেন ‘দুর্নীতি’র আখ্যা দিচ্ছে ইডি? শুধু তা-ই নয়, আদালতের বক্তব্য, জ্যোতিপ্রিয়ের যে সম্পত্তির হদিস মিলেছে, তা অন্য কোনও দুর্নীতির ফসলও তো হতে পারে। রেশন দুর্নীতি থেকেই যে বালু ওই সম্পত্তির মালিক হয়েছেন, তার প্রমাণ কোথায়? জানতে চান বিচারক।
রেশন মামলার তদন্তে নেমে একাধিক সরকারি নথি এবং সরকারি অফিসারের সিল পাওয়া গিয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছিল ইডি। বিচারকের আরও প্রশ্ন, ওই সরকারি আধিকারিকদের কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি? কেনই বা তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি? যে সমস্ত উপভোক্তা রেশন কম পেয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে, তাঁদের সঙ্গেই বা কেন ইডি কথা বলেনি? জানতে চান বিচারক। জ্যোতিপ্রিয়ের আইনজীবীরা আদালতে রেশনে দেওয়া শস্যের ল্যাব পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। সেখানে দেখা গিয়েছে, রেশনের মানে কোনও সমস্যা নেই।
ইডি আদালতে জানিয়েছে, চুরির এফআইআর থেকে তদন্ত শুরু হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু ক্রমে তারা রেশন নিয়ে বড়সড় দুর্নীতির সন্ধান পেয়েছে। ইডি আধিকারিকেরা জানান, রেশন ডিলার থেকে শুরু করে উপর এবং নীচমহলের সকলে কারচুপির সঙ্গে জড়িত। তাই কেউ কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেননি। এই কারণেই একে সাধারণ ‘চুরি’ বলা যাচ্ছে না।
ইডির আইনজীবী জানান, পাঁচ পয়সা করে চুরি করতে করতে একসময়ে তা বড় দুর্নীতির আকার নেয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। প্রত্যেক উপভোক্তার থেকে রেশনের পরিমাণ অল্প অল্প করে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সামান্য ঘাটতির জন্য কেউ আর অভিযোগ দায়ের করেননি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কম রেশন নিয়ে অভিযোগ দায়ের হলেও সেই সংক্রান্ত এফআইআর ইডিকে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার আইনজীবী।
ইডি জানিয়েছে, রেশন দুর্নীতির সমগ্র বিষয়টি এক সুতোয় বাঁধা ছিল। এক জন শক্তিশালী কেউ গোটা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতেন। তা না-হলে এত বড় দুর্নীতি এক সূত্রে বাঁধা থাকত না। অনেক আগেই ভেঙে পড়ত।
রেশন মামলার তদন্তে শেষ থেকে শুরু করেছেন ইডি আধিকারিকেরা, আদালতে তেমনটাই জানান তাঁদের আইনজীবী। তাঁদের বক্তব্য, তদন্তের ক্ষেত্রে গঙ্গাসাগর থেকে গঙ্গোত্রীর দিকে এগিয়েছেন তাঁরা। গঙ্গোত্রী পৌঁছে দেখা পেয়েছেন হিমালয়ের। রেশন দুর্নীতির টাকার সঙ্গে হিমালয়ের হিমবাহের তুলনা করেছে ইডি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy