প্রতীকী ছবি।
করোনার দাপটে বেশ কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা-তালিকা তৈরির রীতিপদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষার্থীদের একাংশের মধ্যে আশঙ্কা ও অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। অনেকের আশঙ্কা, কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা না-হওয়ার জেরে যে-পদ্ধতিতে মেধা-তালিকা তৈরি হচ্ছে, তাতে কলেজে ভর্তির সময় তাঁরা সুবিচার পাবেন না।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নিয়মবিধি অনুযায়ী যে-সব বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে, সেগুলির মধ্যে যেটিতে পরীক্ষার্থী সর্বাধিক নম্বর পেয়েছেন, সেই নম্বরটিই অপরীক্ষিত বিষয়ে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর হিসেবে গণ্য হবে। এখানেই আপত্তি বহু পরীক্ষার্থীর। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা জানাচ্ছেন, ধরা যাক, শ্রেয়ম নামে কোনও পড়ুয়া পরীক্ষিত চারটি বিষয়ে ৯০, ৯৩, ৯১, ৯১ নম্বর পেলেন। সে-ক্ষেত্রে তাঁর বিষয়গত সর্বাধিক নম্বর ৯৩। তা হলে সংসদের নিয়ম অনুযায়ী অপরীক্ষিত দু’টি বিষয়েই তাঁর নম্বর হবে ৯৩। উচ্চ মাধ্যমিকে সেরা পাঁচটি বিষয়ের নম্বর যোগ করে মোট নম্বর দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে শ্রেয়মের মোট নম্বর হবে ৪৬১। অন্য দিকে, নির্ঝর নামে কোনও ছাত্র পরীক্ষিত চারটি বিষয়ে নম্বর পেলেন ১০০, ৮৪, ৮৫, ৮৬। তাঁর বিষয়গত সর্বাধিক নম্বর ১০০। তাই অপরীক্ষিত দু’টি বিষয়ে ১০০ করে পাওয়ার সূত্রে তাঁর মোট নম্বর হবে ৪৭১। মাত্র একটি বিষয়ে ১০০ নম্বর তোলার সুবাদে নির্ঝরের মোট নম্বর শ্রেয়মের থেকে বেশি হয়ে যাওয়ায় মেধা-তালিকায় তুলনামূলক ভাবে উপরের দিকে ঠাঁই পাচ্ছেন তিনি। অথচ শ্রেয়ম সব বিষয়ে ৯০ বা তার বেশি নম্বর পেয়েও সুবিচার পাচ্ছেন না। নির্ঝরের যে-দু’টি পরীক্ষা হয়নি, সংসদের নিয়ম অনুযায়ী সেগুলিতেও ১০০ করে নম্বর পেয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যদিও পরীক্ষিত বিষয়গুলির মধ্যে মাত্র একটিতে তিনি ৯০ বা তার বেশি পেয়েছেন।
সংসদের নম্বর দেওয়ার এই পদ্ধতি মোটেই বিজ্ঞানসম্মত নয় বলে মনে করছেন অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষক সংগঠন। শিক্ষকদের অনেকের বক্তব্য, যদি পরীক্ষিত বিষয়গুলির মধ্যে ‘বেস্ট অব থ্রি’ বা যে-তিনটি বিষয়ে সব চেয়ে বেশি নম্বর উঠেছে, তার গড় করে অপরীক্ষিত বিষয়ে সেই নম্বর দেওয়া হত, তা হলে এই সমস্যা বা অসন্তোষের কারণ থাকত না।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, “যে-নিয়মে মূল্যায়ন হচ্ছে, সেটা চলতে থাকলে মূল্যায়ন ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। অনেক ভাল পড়ুয়ার যথাযথ মূল্যায়ন হবে না।” কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সাধারণ সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস জানান, নম্বর দেওয়ার এই পদ্ধতিতে সন্তুষ্ট না-হলে পরীক্ষায় বসার সুযোগ থাকছে ঠিকই। কিন্তু সেই পরীক্ষা কবে হবে এবং তার ফল বেরোনোর পরে ভর্তির প্রক্রিয়া কী হবে, সেই বিষয়ে ধোঁয়াশা থাকছে। তাই পরীক্ষা দেওয়ার বদলে অনেক ছাত্রছাত্রী এই পদ্ধতিতে নম্বর দেওয়ার প্রক্রিয়া মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy