Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

অনাহারে মৃত্যু নয় বালকের, পুরুলিয়ায় দাবি প্রশাসনের

স্থানীয় সূত্রের দাবি, এ দিন সকালে পাড়ায় খেলছিল শাকিল। হঠাৎ বাড়িতে এসে জল খাওয়ার পরে, দু’বার বমি করে জ্ঞান হারায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাড়া ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২০ ০৫:২২
Share: Save:

লকডাউনে খাবার না-পেয়ে এক বালকের মৃত্যুর অভিযোগ শনিবার ছড়াল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ঘটনাস্থল পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকের শাঁকড়া-খ গ্রাম। মৃত শেখ শাকিলের (১০) বাবা শেখ রহিমের দাবি, ‘‘ছেলেটা খালি পেটে বমি করে মারা গেল।’’ যদিও জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তে জানা গিয়েছে, মস্তিকের সমস্যার কারণে ওই বালকের মৃত্যু হয়েছে। অনাহারে সে মারা যায়নি।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘পরিবারের সাত জনের রেশন কার্ড রয়েছে। তাঁরা রেশন পেয়েছেন। স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকেও পরিবারটি খাদ্যসামগ্রী পেয়েছে।’’ বিডিও গৌতম মণ্ডল জানান, আজ, রবিবার পরিবারটিকে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে।

স্থানীয় সূত্রের দাবি, এ দিন সকালে পাড়ায় খেলছিল শাকিল। হঠাৎ বাড়িতে এসে জল খাওয়ার পরে, দু’বার বমি করে জ্ঞান হারায়। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে তার মৃত্যু হয়। ব্লক মেডিক্যাল অফিসার শেখ সানাউল্লা বলেন, ‘‘মৃত্যুর কারণ জানতে বালকের দেহ মর্গে পাঠাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিজনেরা জোর করে নিয়ে যান।’’ পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে পুরুলিয়ার মর্গে পাঠায়। ময়না-তদন্তও হয়।

শেখ রহিম দিনমজুর। ১০ সন্তান-সহ তাঁর পরিবারে ১৩ জন সদস্য। পড়শিদের একাংশের দাবি, ৩ এপ্রিল ব্লক অফিসের কাছে জিআর-এর (জেনারেল রিলিফ তথা ত্রাণসাহায্য) চাল ও গম দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন রহিম। স্থানীয় ভাবে সে আবেদন মঞ্জুর করেন ওই গ্রামের বাসিন্দা তথা পাড়া পঞ্চায়েত সমিতির নারী ও শিশুকল্যাণ কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের দিলশোভা বিবি। তাঁর স্বামী ব্লক তৃণমূলের সদস্য শেখ হাসিবুল দাবি করেন, ‘‘পরিবারটি অত্যন্ত দুঃস্থ বলে জিআর দিতে অনুরোধ করা হয়েছিল।’’ আত্মীয়দের একাংশের অভিযোগ, সে সাহায্য মেলেনি।

তবে জেলাশাসকের দাবি, পরিবারটি ২৭ মার্চ বাচ্চাদের স্কুল থেকে দু’কেজি চাল, এক কেজি আলু, এপ্রিলের গোড়ায় রেশন থেকে সাত কেজি চাল, সাড়ে ১০ কেজি আটা এবং ৫ এপ্রিল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে দু’কেজি চাল, এক কেজি আলু পেয়েছে। বিডিও-র দাবি, ‘‘উনি (রহিম) ব্লক অফিসে জিআর-এর আবেদন করেননি।’’

খাবার পেয়েও সাহায্য চাইছিলেন কেন? রহিম বলেন, ‘‘লকডাউনে রোজগার নেই। রেশন-সহ যা খাবার পেয়েছি, প্রয়োজনের তুলনায় তা খুব কম। বুধবার থেকে বাড়িতে হাঁড়ি চড়েনি। সামান্য মুড়ি আর বেশির ভাগ সময়ে জল খেয়ে কাটিয়েছি সবাই।’’ তবে জেলাশাসক বলেন, ‘‘স্বাভাবিক মানুষ যা খান, সেই অনুযায়ী পর্যাপ্ত খাবার পরিবারটিকে দেওয়া হয়েছে।’’

পাড়া ব্লকের বাসিন্দা বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী এবং সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীননাথ লোধার বক্তব্য, ‘‘অনাহারে মৃত্যুর অভিযোগ সত্যি হলে, দুর্ভাগ্যজনক। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সাহায্যের যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তা যাতে এ ধরনের পরিবারের কাছে পৌঁছয়, তা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে।’’ জেলা সভাধিপতি তথা তৃণমূলের জেলা নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘প্রশাসন নানা ভাবে সবাইকে সাহায্য করছে। অনাহারে মৃত্যুর খবর অপপ্রচার ছাড়া, কিছু নয়।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Covid-19 Starvation Starvation Death Purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy