স্কুল থেকে মাইকে পঠনপাঠন। বাড়িতে চলছে পড়াশোনা। নিজস্ব চিত্র
স্কুলের মাইকে ভেসে এল স্বাস্থ্যবিধানের গান। সহজপাঠের কবিতা। খানিক বাদে শুরু হল বানান শিক্ষা। শেষে হল নামতা। আর বাড়ির উঠোনে চাটাই বিছিয়ে সে সব শুনে, লিখে নিল খুদে পড়ুয়ারা। ই-পাঠ নয়। লকডাউনের মাঝে শ্রুতিপাঠের মধ্য দিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে বীরভূমের সিউড়ি ১ ব্লকের নগরী পঞ্চায়েতের আমগাছি গ্রামের উদয়ন পাঠশালা ও মল্লিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গজালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াশোনা শুরু হল।
পাঠ্যবইয়ের সিলেবাস ধরে ক্লাসে যে-ভাবে পড়ান শিক্ষক-শিক্ষিকারা, ঠিক সেই ভাবেই রেকর্ড করে এনে পড়ানো হয় স্কুল চত্বর থেকে। পড়ুয়ারা যাতে বাড়িতে বসেই শিক্ষিকার আওয়াজ শুনতে পায়, সে জন্য তিনটি করে মাইক বাজানো হয় দু’টি গ্রামে। তা শুনে নিজেদের পড়া তৈরি করে গজালপুর স্কুলের বনশ্রী মুর্মু, ফুলমণি কিস্কু, রবিলাল মুর্মু আর উদয়ন পাঠশালার সূর্য সরেন, শিবনাথ হাঁসদা, সুমি হেমব্রমদের মতো ৩০ জন পড়ুয়া।
লকডাউনে স্কুল বন্ধ রয়েছে। অনলাইন এবং টিভিতে কিছুটা হলেও পঠনপাঠনের সুযোগ পাচ্ছে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। প্রাথমিকের পড়ুয়াদের সেই সুযোগটুকুও নেই। সবচেয়ে করুণ অবস্থা গ্রামের পড়ুয়াদের। এমনটা চললে বাড়তে পারে স্কুলছুট। এই বিষয়টি ভাবায় বিডিও (সিউড়ি ১ ব্লক) শিবাশিস সরকারকে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন সাতেক আগে সিউড়ি সদর সার্কেলের বিদ্যালয় পরিদর্শক, স্থানীয় দু’টি স্কুলের শিক্ষক, স্থানীয় দুই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা হয় ব্লক প্রশাসনের। পরিকল্পনা জেনে সকলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। শিবাশিসবাবু বলছেন, ‘‘আপাতত ব্লকের দু’টি স্কুলে পরীক্ষামূলক ভাবে শ্রুতিপাঠ শুরু হয়েছে। সাফল্যে পেলে অন্য স্কুল ও প্রাথমিকের অন্য ক্লাসেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।’’
আরও পড়ুন: ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পে টাকা পেতে আর্জি ১০ লক্ষ
উদয়ন পাঠশালার সহ শিক্ষক বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং গজালপুর স্কুলের টিআইসি মলয় মণ্ডলরা জানান, ব্লকের দুই প্রাথমিক শিক্ষিকাকে দিয়ে পড়ানো রেকর্ড করানো হয়। সেটাই এ দিন বাজিয়ে শোনানো হয়েছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, ঠিক মতো পড়ছে কিনা দেখার জন্য নিজেরা এবং এলাকার দু’জন করে শিক্ষিত আদিবাসী যুবক ছিলেন। যাঁরা সাঁওতালি ভাষায় সেই পাঠ বুঝিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: তেলেনিপাড়া নিয়ে আপত্তিকর ‘পোস্ট’, গ্রেফতার মহিলা
এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি প্রলয় নায়েক বলছেন, ‘‘বাচ্চাদের নতুনের প্রতি আগ্রহ থাকে। বাড়িতে বসে পড়তে পারলে তারা নিশ্চয়ই উপকৃত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy