Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

২৪ ঘণ্টায় সর্বাধিক আক্রান্ত রাজ্যে, করোনা পরীক্ষা ৩৪ হাজারের বেশি মানুষের

সুস্থতার হার আশা জোগাচ্ছে রাজ্য সরকারকে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৮৩ হাজার ৮৩৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২০ ২১:৫৬
Share: Save:

রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজারের কোটায় প্রবেশ করেছিল এক দিন আগেই। শনিবার আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেড়ে গেল। আজ সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৭৪ জন মানুষ, যা এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক। গতকাল এই সংখ্যাটা ছিল ৩ হাজার ৩৫।

এ দিন নতুন করে তিন হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হওয়ায় রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৪৩২। তবে সুস্থতার হার আশা জোগাচ্ছে রাজ্য সরকারকে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৮৩ হাজার ৮৩৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন, যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৬৪৭ জন। এর ফলে রাজ্যে সুস্থতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩.৯১ শতাংশ।

তবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও এ দিন রাজ্যে করোনা রোগীদের মৃত্যুর ঘটনা সামান্য কমেছে। শুক্রবার যেখানে ৬০ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছিলেন, এ দিন তা কমে ৫৮ হয়েছে। করোনার প্রকোপে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ৩৭৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এই মুহূর্তে রাজ্যে ২২ হাজার ২১৯ সক্রিয় করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আরও পড়ুন: জঙ্গলমহলে ফের গোপনে চলছে মাওবাদী বৈঠক! নজর বাড়াচ্ছে প্রশাসন​

‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হারও এ দিন খানিকটা স্বস্তি জুগিয়েছে রাজ্যকে। প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। বুধবার রাজ্যে এই সংক্রমণের হার ছিল ১০.৫৯ শতাংশ। বৃহস্পতিবার সেই হার কমে ৯.৯৮ শতাংশ দাঁড়ায়। শুক্রবার তা আরও কমে ৯.৬৯ শতাংশ হয়। কিন্তু এ দিন তা এসে ঠেকেছে ৮.৯৮ শতাংশে, যা গত এক মাসে সর্বনিম্ন।

আগের তুলনায় রাজ্যে করোনা পরীক্ষাও বেড়েছে। বৃহস্পতিবার যেখানে ৩০ হাজার ৩২ জনের করোনা পরীক্ষা হয়, শুক্রবার পরীক্ষা হয় ৩১ হাজার ৩১৭ জনের। গতকালের তুলনায় এ দিন ২ হাজার ৮৯৭ জন (৩৪ হাজার ২১৪) বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা হয়। তার পরেও সংক্রমণের হার কমায় আশার আলো দেখছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।

সংক্রমণ এবং মৃত্যু, দুইয়ের নিরিখেই এখনও পর্যন্ত কলকাতাই বাকি জেলাগুলির চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৬৭১ জন। মৃত্যু হয়েছে ২১ জন করোনা রোগীর। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত কলকাতায় ৩১ হাজার ৭৫৬ জন করোনা রোগীর হদিশ মিলেছে। মোট মৃত্যু সংখ্যা ১ হাজার ৫৭।

এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে এখনও পর্যন্ত ২৪ হাজার ১০৯ জন মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টাতেই সংক্রমিত হয়েছেন ৬৪২ জন। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৫৫৫ জন মারা করোনা রোগী মারা গিয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।

হাওড়ায় এ দিন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৯০ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও সংখ্যাটা একই। গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়ায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ৫ জন করোনা রোগী। হাওড়ায় এখনও পর্যন্ত মোট ২৮৫ জন করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সংখ্যাটা ১৩১।

এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরেও ৩ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। হুগলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন। পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিঙে প্রাণ হারিয়েছেন ১ জন করে।

আরও পড়ুন: সীমান্ত-চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে জানে ভারত, মোদীর নিশানায় চিন-পাকিস্তান​

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE