প্রতীকী ছবি।
জ্বর, সর্দি বা শ্বাসকষ্টের মতো কোনও উপসর্গ নেই। গলা ব্যথাও নেই। আপাত ভাবে দেখা যাচ্ছে পুরোপুরি সুস্থ। কিন্তু বাস্তবে সেই ব্যক্তির শরীরেই ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে নোভেল করোনাভাইরাস। এই উপসর্গহীন কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে বিভিন্ন দেশেই। একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে ভারতেও। কর্নাটকে মোট আক্রান্তের ৬০ শতাংশই উপসর্গহীন। এই প্রবণতা চিন্তা বাড়িয়েছে এ রাজ্যেও। আর তাই পুল টেস্টের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। শনিবার এই মর্মে নির্দেশিকাও জারি করেছে স্বাস্থ্য ভবন।
পুল টেস্ট কী?
গত ১৩ এপ্রিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) একটি কার্যকরী স্ক্রিনিং বা কোভিড আক্রান্তদের চিহ্নিত করার পদ্ধতি হিসাবে এই পুল টেস্টের পরামর্শ দেয়। স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বর্তমানে যে ভাবে সন্দেহভাজন কোভিড আক্রান্তের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে, সেই একই প্রযুক্তি অর্থাৎ রিয়েল টাইম পিসিআর টেস্টই করা হবে। তবে পার্থক্য অন্য জায়গায়।
পুল টেস্টে একসঙ্গে ২ থেকে ৫ জনের লালরসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। সমস্ত নমুনা এক সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হবে। এর পর পরীক্ষা করা হবে।
পরীক্ষায় ওই মিশ্রিত নমুনা নেগেটিভ হলে বোঝা যাবে যে ক’জন ব্যক্তির লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ভাইরাসের অস্তিত্ব নেই। উল্টো হলে, অর্থাৎ পজিটিভ হলে ধরে নিতে হবে ওই পুলের মধ্যে কোনও একজন কোভিড আক্রান্ত। সেক্ষেত্রে ওই পুলে যে ক’জনের নমুনা মেশানো হয়েছিল, তাঁদের প্রত্যেকের আলাদা করে কোভিড পরীক্ষা করা হবে।
কোথায় করা হবে এই পুল টেস্ট?
আইসিএমআর নির্দেশিকা অনুযায়ী, যে সমস্ত এলাকায় সংক্রমণ ২ শতাংশেরও কম বা একেবারেই নেই, সেই এলাকাতেই করা হবে পুল টেস্ট।
২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত সংক্রমণের পরিমাণ যেখানে, সেখানে পুল টেস্ট হতে পারে। তবে সেখানে পুল টেস্ট করা হবে শুধুমাত্র উপসর্গহীন মানুষদের ক্ষেত্রে। যাঁরা কোভিড পজিটিভ রোগীর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে এসেছেন তাঁদের এই পরীক্ষা বাঞ্ছনীয় বলে জানিয়েছে আইসিএমআর।
তবে ৫ শতাংশের বেশি যেখানে সংক্রমণের পরিমান, সেখানে পুল টেস্ট করা যাবে না।
আরও পড়ুন: কলকাতার বহু পাড়া পুরো সিল করল পুলিশ, দেখে নিন কোথায় কোথায়
কেন পুলটেস্ট?
স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা দু’টি কারণ জানিয়েছেন পুলটেস্টের
১। উপসর্গহীন রোগীদের সন্ধান করতে পুলটেস্ট দ্রুত এবং কার্যকরী পদ্ধতি। গোটা দেশে উপসর্গহীন রোগীর সংখ্যা বিপদ বাড়াচ্ছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক চিকিৎসক বলেন, উপসর্গহীন আক্রান্ত বাহক হিসাবে অন্যদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেন।
২। পুলটেস্টে, একটি কিট ব্যবহার করে পাঁচজনের এক সঙ্গে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে খরচ কমছে। কারণ এখন একটি কিটে একজনের পরীক্ষা হয়। পাঁচজনের পরীক্ষা হলে কিটের খরচ এবং সময় দুটোই সাশ্রয় হবে।
আরও পড়ুন: ৩ মে-র পরেও ট্রেন ও বিমান চলার সম্ভাবনা কম: রিপোর্ট
রাজ্যের পরিকল্পনা
রাজ্যে এখনও ১০ জেলায় করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কোনও খবর নেই। জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। সেই সমস্ত জায়গায় উপসর্গহীন আক্রান্ত রয়েছেন কি না, তা চিহ্নিত করবে এই টেস্ট। ঠিক তেমনি রেড জোনের আশে পাশে যেখানে সংক্রমণ কম, সেখানেও এই পরীক্ষা করা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। মূলত সময় এবং খরচ বাঁচিয়ে টেস্টের সংখ্যা বাড়াতেই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে ইঙ্গিত স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার। এই মুহুর্তে রাজ্যে সরকারি পাঁচটি এবং তিনটি বেসরকারি পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ এবং আরজি কর মেডিক্যাল কলেজেও কোভিড পরীক্ষা খুব দ্রুত চালু করা হবে বলে জানা গিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy