লকডাউনে শুনশান ধর্মতলা। শুক্রবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে সম্পূর্ণ লকডাউনের মতো অস্ত্রের ঘন ঘন প্রয়োগ কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের অন্দরেই। সেই কারণে নতুন করে পূর্ণ লকডাউনের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা করেনি রাজ্য সরকার। আধিকারিকদের অনুমান, আগামী দিনে শুধু কন্টেনমেন্ট জ়োনে লকডাউন করে সংক্রমণ ঠেকানোর পদ্ধতি মেনে চলবে সরকার।
সংক্রমণের শৃঙ্খল ছিঁড়তে আনলক পর্বেও পূর্ণ লকডাউনের পথে হেঁটেছিল রাজ্য। সপ্তাহে এক-দু’টি দিন রাজ্যজুড়ে পালিত হচ্ছিল আগের মতোই পূর্ণ লকডাউন। শুক্রবার তেমনই লকডাউন হয়েছে। কিন্তু এই পদক্ষেপে সংক্রমণ পুরোপুরি যে রোখা গিয়েছে, সেই দাবি করতে নারাজ অভিজ্ঞ আমলারা। বরং আচমকা লকডাউনে আর্থিক কর্মকাণ্ড যথেষ্ট বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। সেই কারণে এখন সরকারের অনেকেই মনে করছেন, খুব প্রয়োজন না-হলে পূর্ণ লকডাউন না করাই ভাল। এই ভাবনাচিন্তা সিদ্ধান্তে রূপ নিলে, আপাতত আর পূর্ণ লকডাউন হবে না রাজ্যে। সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকার জন্য আজ, শনিবারের লকডাউন প্রত্যাহার করেছে সরকার।
লকডাউনের সময়ে সামগ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে বিপুল ক্ষতি হয়েছিল। আনলক-পর্বের শুরু থেকেই জিনিসপত্রের দাম ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। জ্বালানির ক্রমাগত দামবৃদ্ধিতে জিনিসপত্রের পরিবহণ খরচও বেড়ে গিয়েছে। যার খেসারত দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বহু মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমায় তা অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই পরিস্থিতিতে এখনও পূর্ণ লকডাউন চলতে থাকলে সমস্যা বাড়বে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই যুক্তিতেই লকডাউনের পথে আর হাঁটতে চাইছে না কেন্দ্র। কন্টেনমেন্ট এলাকার বাইরে লকডাউন করার আগে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের কথা বলা বাধ্যতামূলকও করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: মতান্তরও রয়ে গেল, পাঁচটি বিষয়ে ঐকমত্য মস্কো-বৈঠকে
আরও পড়ুন: রদবদল কংগ্রেসে, রাহুলের ইচ্ছে মেনেই
নবান্ন মনে করছে, রাজ্যের কোভিড-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে। কিন্তু জেলা প্রশাসনে অনেকেরই ধারণা, শীত আসার আগেই সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ফের আসতে পারে। তাই তাঁদেব বক্তব্য, পূর্ণ লকডাউনের মতো অস্ত্র এখন আর প্রয়োগ না করাই ভাল। যত দিন সংক্রমণের গতিবৃদ্ধি না হচ্ছে, তত দিন কন্টেনমেন্টভিত্তিক লকডাউন করলে ইতিবাচক ফল মিলবে। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়লে পূর্ণ লকডাউনের বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “পূর্ণ লকডাউনে সংক্রমণ ঠেকানো গিয়েছে, এমন কথা তো জোর গলায় যাবে না। উৎসবের মরসুম আসছে। এই সময় পূর্ণ লকডাউন চলতে থাকলে মানুষের আর্থিক পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়ে উঠবে।”
অবশ্য, উত্তরপ্রদেশের মতো কিছু রাজ্যে এখনও সপ্তাহান্তের দু’দিন লকডাউন করা হচ্ছে। ভিড় এড়াতে পঞ্জাবেও কিছু এলাকায় সপ্তাহে এক দিন দোকানপাট বন্ধ রাখা হচ্ছে। আমলাদের অনেকের যুক্তি, কাজের দিনে লকডাউন করার বদলে ছুটির দিন অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা ঠেকানো গেলে তাতে মানুষেরই উপকার হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy