প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা পাঁচ থেকে সাত হয়েছে বলে রবিবার স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে জানানো হয়েছে। তবে মৃতদের সম্পর্কে ওই বুলেটিনে আর কিছুই জানানো হয়নি।
করোনায় আরও দু’জনের মৃত্যুর প্রেক্ষিতে লকডাউন পর্বে রাস্তায় বেরোতে হলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসন জানিয়েছে, রাস্তায় মাস্ক ছাড়া কাউকে দেখলেই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। নির্দেশ না-মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ। লকডাউন বিধি ভাঙলে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা করছে তারা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘মাস্ক পরা একান্ত জরুরি। তবে সকলকেই উন্নত ধরনের মাস্ক পরতে হবে, এমন নয়। সাধারণ কাপড়ের মাস্ক বা রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে রাখলেও হবে। মুখ থেকে যাতে ড্রপলেট না-ছড়ায়, সেটাই নিশ্চিত করাই মূল উদ্দেশ্য।’’
স্বাস্থ্য দফতরের এ দিনের বুলেটিনে রাজ্যে অ্যাক্টিভ করোনা পজ়িটিভ কেসের সংখ্যা ৯৫ বলে জানানো হয়েছে। তবে ছুটি পাওয়া রোগীদের বাদ দিলে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা কত, সেই বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আক্রান্তের তালিকায় হাওড়া জেলা হাসপাতালের আরও এক চিকিৎসক। করোনা ধরা পড়ায় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসকও। চিনার পার্ক সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চার রোগী এবং কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় সেখানে এক সপ্তাহ রোগী ভর্তি বন্ধ রাখা হয়েছে।
স্বস্তির খবর, এ দিন মোট ১০ জনকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। এগরা, দাসপুর, শেওড়াফুলি ও বরাহনগর-যোগে আক্রান্ত চার জনের দ্বিতীয় দফার নমুনা নেগেটিভ আসায় তাঁদের ছুটি দিয়েছে আইডি। ছুটি পেয়েছেন তমলুকের এক পান ব্যবসায়ীর পরিবারের চার জন। ওই পরিবারের আরও পাঁচ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। ছুটি পাওয়া বাকি দু’জনের এক জন উত্তরবঙ্গের এবং অন্য জন আনন্দপুরের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আইবি-২ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন পাঁচ জনের লালারসের নমুনা দ্বিতীয় বার পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, তাঁদের প্রথম দফার নমুনা নেগেটিভ এসেছে। আইডিতে চিকিৎসাধীন মধ্যমগ্রামের কাউন্সিলরও রয়েছেন সেই তালিকায়।
রাজ্যের করোনা তথ্য
• অ্যাক্টিভ করোনা পজ়িটিভ রোগী ৯৫
• মৃত্যু ৭
• নমুনা পরীক্ষা ২৫২৩
• কোয়রান্টিনে ১০৭৩০
• ছাড়া পেয়েছেন ৬৭৬৪
• হাসপাতালে আইসোলেশনে ৩২৯
• ছাড়া পেয়েছেন ১৭৫৬
• গৃহ-পর্যবেক্ষণে ৪০৫৭৬
• ছাড়া পেয়েছেন ১৫৬২৪
তথ্য সূত্র: স্বাস্থ্য দফতর
হাওড়া জেলা হাসপাতালের আক্রান্ত চিকিৎসক এ দিন জরুরি বিভাগে কর্মরত অবস্থায় খবর পান, তিনি করোনা-পজ়িটিভ। তড়িঘড়ি তাঁকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সুপার, হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হওয়ার পরে ৩১ জনের নমুনা নেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ওই চিকিৎসকেরই দেহে করোনার অস্তিত্ব মিলেছে। তিনি অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্ভিস ডক্টর্সের রাজ্য স্তরের যুগ্ম সম্পাদক। বৃহস্পতিবার তাঁর লালারসের নমুনা নেওয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক সংগঠনের সম্পাদক মানস গুমটার প্রশ্ন, ‘‘প্রথমে ওঁর নাম নমুনা সংগ্রহের তালিকায় রাখা হয়নি। নমুনা সংগ্রহের পরেও ওঁকে কোয়রান্টিনে না-রেখে জরুরি বিভাগে কাজ করানো হচ্ছিল কেন?’’ কেন এমন হল, তা জানতে চেয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের চিঠি দিয়েছে ওই সংগঠন। আক্রান্ত চিকিৎসকের স্ত্রী উত্তর ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরের অফিসার।
চিকিৎসক সংগঠনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাওড়া জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সংহিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাসপাতালে এখন রোগীর তেমন ভিড় নেই। জরুরি বিভাগে দূরত্ব বজায় রেখে, সাবধনতা অবলম্বন করে কাজ চলছে। ফলে চিন্তার কিছু নেই। আক্রান্তের সংস্পর্শে ক’জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী এসেছেন, তার তালিকা হচ্ছে। জীবাণুমুক্তির কাজও চলছে।’’
এ দিন অ্যাক্টিভ কেসের মধ্যে রয়েছেন পার্ক সার্কাসের একটি নার্সিংহোমের এক রোগী। তাঁকে সল্টলেকে কোভিড চিকিৎসার বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাওড়ার জয়সওয়াল হাসপাতালের দু’জন নার্সিং-কর্মীও আক্রান্তের তালিকায় রয়েছেন।
চিনার পার্কের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কিডনি, উচ্চ রক্তচাপের এক রোগী আইসিইউয়ে ছিলেন। মৃত্যুর পরে তাঁর করোনা ধরা পড়ে। বাকি তিন রোগী কোনও না-কোনও ভাবে তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন। ওই হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রশান্ত শর্মা জানান, সাত দিন নতুন রোগী ভর্তি করা হবে না। করোনার জন্য এমনিতেই রোগীর সংখ্যা কমে এসেছিল। জীবাণুমুক্ত করার জন্য অল্প যে-ক’জন রোগী আছেন, তাঁদের অন্যত্র সরানো হচ্ছে। টালিগঞ্জ থানার অন্তর্গত বেসরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের যে-চিকিৎসক আক্রান্ত হয়ে আইডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁর ডায়াবিটিস রয়েছে। টালিগঞ্জেরই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্মীর করোনা ধরা পড়েছিল। তাঁকে অরক্ষিত অবস্থায় দেখেছিলেন মেডিসিনের ওই চিকিৎসক।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.i• ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy