অসহায়: হাসপাতালের সামনে রোগীকে নিয়ে পরিজন। নিজস্ব চিত্র
ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে মালদহের চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে স্ট্রেচারে শুয়ে রোগী। পাশে দাঁড়ানো এক মহিলা অভিযোগ জানালেন, করোনা-আক্রান্ত সন্দেহে ওই রোগীর সঙ্গে হাসপাতাল থেকে তাঁদেরও বার করে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে মালদহ যেতে। কিন্তু কী ভাবে যাবেন সে ব্যাপারে কোনও সাহায্য করা হচ্ছে না। কোনও অ্যাম্বুল্যান্সও যেতে চাইছে না। এ ভাবেই পাঁচ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরে প্রশাসনের উদ্যোগে অ্যাম্বুল্যান্স ঠিক করে রোগীকে মালদহে পাঠানো হয়। ঘটনাটি বুধবার রাতের।
এই ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য আনন্দবাজার যাচাই করেনি। কিন্তু করোনা-আক্রান্ত সন্দেহে এক জন রোগীর সঙ্গে এমন আচরণ ‘অমানবিক’ বলে নেটিজেনদের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন এক তৃণমূল নেতাও। অসহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, অ্যাম্বুল্যান্স না পাওয়ায় ওই রোগীকে বাইরে অপেক্ষা করতে হয়।
চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার ওয়াসিম রানা বলেন, ‘‘ওই রোগীকে মালদহে রেফার করা হয়। কিন্তু ভয়ে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স চালক যেতে চাইছিলেন না। তাতে দেরি হয়। এর পরে আমি নিজে উদ্যোগী হই।’’ কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স না-আসা পর্যন্ত তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা যেত। সুপার বলেন, ‘‘যে-হেতু ওই রোগী করোনা-আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হয়েছিল, তাই আমরা আইসোলেশনে রেখে সময় নষ্ট করতে চাইনি। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে এমন সমস্যা হবে ভাবিনি।’’
হাসপাতাল ও প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুরের ওই শ্রমিক জয়পুর থেকে জ্বর নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে বাড়ি ফেরেন। বুধবার তাঁকে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে চাঁচলে ‘রেফার’ করা হয়। হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে একটি অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁরা চাঁচলে আসেন। চাঁচলে জরুরি বিভাগে পরীক্ষার পরেই ওই রোগীকে মালদহে ‘রেফার’ করা হয়।
পরিবারের অভিযোগ, করোনা-আক্রান্ত সন্দেহে ওই রোগীকে হাসপাতালের ভিতরে থাকতে দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের ধারেকাছে আসেননি। ভয়ে নিরাপত্তারক্ষীরাও হাসপাতালের সামনে থেকে নিরাপদ দূরত্বে চলে যান।
বিষয়টি জানতে পেরেই উদ্যোগী হন চাঁচলের বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য। এর পরে হাসপাতালে হাজির হন তৃণমূল নেতা তথা চাঁচল-১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অমিতেশ পাণ্ডে, টিএমসিপি নেতা সুমিত সরকার। রাত ১১টায় একটি অ্যাম্বুল্যান্সে ওই রোগী ও তাঁর পরিবারকে মালদহে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। বিডিও বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনে ওঁদের জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে মালদহে পাঠানো হয়।’’
অমিতেশ বলেন, ‘‘হাসপাতালে যা হয়েছে তাতে আমরা স্তম্ভিত। এর পরে কেউ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পরে এমন হলে তো ভয়ানক ব্যাপার। এখানে ছ’টি আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হয়েছে। অ্যাম্বুল্যান্স না-পাওয়া পর্যন্ত সেখানে রোগীকে রাখাই যেত।’’
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ওই রোগী করোনায় আক্রান্ত নন। চিকিৎসার পরে বৃহস্পতিবার তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়েছে! মালদহ মেডিক্যাল কলেজে যোগাযোগ করে এই খবর মিলেছে বলে জানিয়েছেন চাঁচল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার ওয়াসিম রানা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy