—নিজস্ব চিত্র।
বেড ফাঁকা রয়েছে? কোভিড রোগী ভর্তি করানো যাবে? টেলিফোনের ও প্রান্ত থেকে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাল্টা প্রশ্ন, রোগীর আর্থিক অবস্থা কেমন? অভিযোগ, বর্ধমান শহরে আকছার এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে কোভিড রোগীর পরিজনদের। বেলাগাম করোনা সংক্রমণের জেরে দিশেহারা রোগীর পরিবারের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে তবেই ভর্তির বন্দোবস্ত করছে বেসরকারি হাসপাতালগুলি। সম্প্রতি এ নিয়ে সরব হয়েছিলেন বর্ধমান (দক্ষিণ) কেন্দ্রে তৃণমূলের নবনির্বাচিত বিধায়ক খোকন দাস। পূর্ব বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়ের সঙ্গে বৈঠকে অভিযোগও জানিয়েছেন তিনি। তবে পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত চরম উদ্বেগই সঙ্গী রোগীর পরিজনদের।
বর্ধমানের খোসবাগান এলাকাটি স্থানীয়দের কাছে ডাক্তারপাড়া হিসাবে পরিচিত। আইসিইউ-যুক্ত একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল, প্যাথলজি ল্যাব রয়েছে। চিকিৎসকেরও অভাব নেই। তবে করোনা সংক্রমণের মতোই বেসরকারি হাসপাতালগুলির ভাড়া হু হু করে বাড়ছে বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, সরকারি ব্যবস্থা বলতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। সেখানে কোভিড রোগীদের জন্য ১৬০টি শয্য়া রয়েছে। উপসর্গযুক্ত অথচ পজিটিভ নন, এমন আরও ১৬০ জনকে সেখানে ভর্তি করানো যেতে পারে। উপসর্গহীনদের জন্য কৃষি খামারে সেফ হোমও রয়েছে। তবে তা যথেষ্ট নয় বলে স্থানীয়দের দাবি। অভিযোগ, সরকারি পরিষেবায় সকলের চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোভিড রোগীদের পরিজনদের বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে যেতে হচ্ছে। তবে সেখানে রোগীর আর্থিক সঙ্গতি নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
বাইপাসের পাশে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড পজিটিভ রোগীর জন্য প্যাকেজ ন্যূনতম ৩ লক্ষ টাকা। একই অবস্থা বর্ধমান শহরের খোসবাগানের বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও। অভিযোগ, চিকিৎসার জন্য রোগীদের লাগামছাড়া ভাড়া দিতে হচ্ছে। বেড, পরিকাঠামো, ওষুধ, অক্সিজেন-সহ সব কিছুরই চড়া ভাড়া। কম করে লাখ তিনেক টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে অনেকেরই। সেই খরচ যোগাতে গিয়ে ঘটিবাটি-গয়না বেচতে হচ্ছে বহু রোগীর পরিজনকে। বর্ধমানের নবাবহাট এলাকায় গত কয়েক বছরে ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি হাসপাতাল গজিয়ে উঠেছে। তার অধিকাংশেই পরিকাঠামো নেই বললেই চলে। কিন্তু করোনার আবহে সেখানকার আইসিইউ-এর ভাড়া দিনে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
কোভিড রোগীদের মতোই বিপাকে পড়েছেন জেলার সাধারণ রোগীর পরিজনেরা। ভাতার থানার শিলাকোট গ্রামের বাসিন্দা সমিত মজুমদার তাঁর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত মা-কে খোসবাগানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন। সাধারণ বেডে ভর্তি হলেও চলছে অক্সিজেন ও স্যালাইন। তবে সেই চিকিৎসার জন্য মাত্র ৪ দিনে সমিতের কাছে হাসপাতালের বিল এসেছে ৬০ হাজার টাকা। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বেড ভাড়া হয় গড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। কিন্তু, কোভিডকালে তা বেড়ে কোথাও ৩ গুণ বা ৪ গুণ হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠছে।
কোভিড রোগীদের পাশাপাশি সাধারণের হয়রানি নিয়ে প্রশাসনের হেলদোল নেই বলেও অভিযোগ। তবে জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন, “কিছু অভিযোগ এসেছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলব।” অন্য দিকে, পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। এ নিয়ে আমরা দু’একদিনের মধ্যে বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের নিয়ে সভা করব। সেখানে একটা সমাধানসূত্র বার করার চেষ্টা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy