Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coroanvirus

অগস্টে আক্রান্ত ও মৃত্যুর ‘রেকর্ড’ সংখ্যা দিয়েই যাত্রা শুরু সংক্রমণের

করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ৪৮ জনের মধ্যে কলকাতার বাসিন্দা ১৯ জন।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২০ ০৪:৩১
Share: Save:

২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর ‘রেকর্ড’ সংখ্যা দিয়ে অগস্টে যাত্রা শুরু হল করোনা সংক্রমণের। এক দিকে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই হাজারের গণ্ডি অতিক্রম করল। একই দিনে ৪৮ জন কোভিড পজ়িটিভ রোগীর নাম মৃতের তালিকায় নথিভুক্ত হয়েছে। এর আগে ২৪ ঘণ্টার সর্বোচ্চ কোভিড পজ়িটিভ রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪৬ জন। শুক্রবারের পরে এ দিনও করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের নাম সীতাংশু শেখর পাঁজা (৬৬)। তবে সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সুস্থতার হারও বেড়েছে। শুক্রবার রাজ্যে সুস্থতার হার ছিল ৬৮.৯২ শতাংশ। এদিন তা বেড়ে হয়েছে ৬৯.৪১ শতাংশ।

শনিবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ন’টা থেকে এ দিন সকাল ন’টা পর্যন্ত রাজ্যে ২৫৮৯ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ৪৮ জনের মধ্যে কলকাতার বাসিন্দা ১৯ জন। উত্তর ২৪ পরগনা (১৩) এবং হাওড়াতেও (৬) এক দিনে মৃত্যুর সংখ্যায় তেমন হেরফের ঘটেনি। চিকিৎসক মহল সূত্রে খবর, সীতাংশুবাবু আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী ছিলেন। দু’সপ্তাহ দমদমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে থাকার পরে দিন পাঁচেক আগে তাঁকে কলকাতা মেডিক্যালে কলেজে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।

এ দিকে, করোনার বাড়বাড়ন্তের মধ্যে স্বাস্থ্য কমিশন বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে মূলত পাঁচ দফা পরামর্শ-নির্দেশিকা পাঠাতে চলেছে বলে খবর। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, শয্যার অভাবে কোভিড রোগীরা দুর্ভোগে পড়ছেন। হাসপাতালে খালি বেডের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি। যার প্রেক্ষিতে কোন রোগীকে শয্যা দেওয়া প্রয়োজন, সেই সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার পুরোপুরি কর্তব্যরত চিকিৎসকের হাতে তুলে দিতে চাইছে কমিশন। এক্ষেত্রে কমিশনের অ্যাডভাইজ়রি হল, কোনও রকম সুপারিশে কান দেওয়ার প্রয়োজন নেই। জেনারেল বেড থেকে আইসিইউ বা আইটিইউয়ে স্থানান্তর করার ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ না মেনে অনেক করোনা রোগী হাসপাতালের শয্যা আটকে রাখছেন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রোগীকে হাসপাতালের স্যাটেলাইট সেন্টার বা সেফ হোমে স্থানান্তর করে, যাঁর শয্যার প্রয়োজন তাঁকে দিতে বলেছে কমিশন।

আরও পড়ুন: মেডিক্লেম নাকি ‘চলবে না’, দেড় লক্ষ কোভিড রোগী ভর্তি হতেই?

আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে সেরো সমীক্ষা এ মাসেই

খরচের ব্যাপারেও ‘অ্যাডভাইজ়রি’ দিচ্ছে কমিশন। রাজ্যসরকার করোনা পরীক্ষার খরচ বেঁধে দিয়েছে ২২৫০ টাকা। বেসরকারি ল্যাবগুলি বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে। তাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে কমিশন। তবে যাতায়াতের খরচ বাবদ প্রতি কিমি পিছু ১৫ টাকা নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া, স্যানিটাইজ়ার, গ্লাভস, হেড গিয়ারের নামে বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের একাংশ রোগীর পরিবারের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে। এখন থেকে পিপিই-সহ সুরক্ষাকবচের সব উপাদান ‘কোভিড প্রোটেকশন চার্জ’ হিসাবে গণ্য করতে বলেছে কমিশন এবং এ জন্য দিনে সর্বোচ্চ নেওয়া যাবে ১০০০ টাকা।

সুরক্ষাকবচের নামে রোগীর কাছে যেমন খুশি টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এখন থেকে ‘কোভিড প্রোটেকশন চার্জ’ ৫০ টাকার বেশি নেওয়া যাবে না। রোগীর সঙ্গে তাঁর এক জন পরিজন বহির্বিভাগে গেলে আরও ৫০ টাকা ‘কোভিড প্রোটেকশন চার্জ’ হিসাবে নেওয়া যাবে। চিকিৎসক পিপিই’র সকল উপাদান পরে রোগী দেখলে রোগী পিছু আরও ৫০ টাকা খরচে অনুমতি দিয়েছে কমিশন। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালের কোভিড চিকিৎসার খরচ কমানোর লক্ষ্যে এই নির্দেশিকা জারি করা হচ্ছে।’’ কোভিড আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থদের হাসপাতালে ভর্তির প্রক্রিয়াটি মসৃণ করার প্রশ্নে রোগীদের দ্রুত সুস্থ করে বাড়ি পাঠানোর উপরে জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য ভবনও। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বেড অকুপেন্সির হার বর্তমানে ৩৯.০৫%।

এই পরিস্থিতিতে এ দিন স্বাস্থ্য দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। যাতে জানানো হয়েছে, আইসিএমআরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, নমুনা সংগ্রহ বা কোভিড পজ়িটিভ ধরা পড়ার এক সপ্তাহ পরে যদি টানা তিন দিন রোগীর জ্বর বা উপসর্গ না-থাকে, তা হলে সংশ্লিষ্ট আক্রান্তকে চিকিৎসক হাসপাতাল বা সেফ হোম থেকে ছেড়ে দেবেন, সুস্থতার শংসাপত্র দিয়ে। তবে পরবর্তী আরও সাত দিন ‘হোম আইসোলেশনে’ থাকার পরেই তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।

এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকলে স্বাস্থ্য দফতরের হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২ নম্বরে ফোন করতে বলা হয়েছে।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

অন্য বিষয়গুলি:

Coroanvirus Coronavirus in West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy