আক্রান্ত অফিসার ইনচার্জ সুব্রত ঘোষ। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
পঞ্জাবের পাটিয়ালার পরে, করোনা-পরিস্থিতিতে এ বার পশ্চিমবঙ্গেও আক্রান্ত পুলিশ। কোয়রান্টিন কেন্দ্রে থাকা ছ’জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মঙ্গলবার পশ্চিম বর্ধমানের চুরুলিয়ায় এমন ‘গুজব’ ছড়ায় বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, তার জেরে ‘জনতা-তাণ্ডবে’ পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়া থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) সুব্রত ঘোষের ডান পা ভেঙেছে। আক্রান্ত আরও পাঁচ পুলিশ। গ্রামে গুলি ও বোমা চলেছে বলে দাবি পুলিশের।
আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুকেশকুমার জৈন বলেন, ‘‘কী ভাবে ওই গুজব ছড়াল, দেখা হচ্ছে। গুজব ছড়ানো ও পুলিশকে মারধরে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে তদন্ত চলছে। পুলিশের টহল রয়েছে।’’ এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সায়ক দাস বলেন, ‘‘ওসি-সহ ছ’জন পুলিশকর্মী জখম। ওসি-র ডান পায়ের হাড় ভেঙেছে।’’ জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি ফোন ধরেননি। জবাব আসেনি মেসেজের। তবে রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলার বিধায়ক মলয় ঘটকের আর্জি, ‘‘গুজবে কান দেবেন না। প্রশাসনকে করোনা-পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহযোগিতা করুন।’’
সোমবার চুরুলিয়ার ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’ যুব আবাসে থাকা ছ’জনকে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিদ্যুৎ কাজি, শেখ আশরাফ-সহ কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, ‘‘সোমবার রাত থেকেই মুখে-মুখে রটে, ওই ছ’জনই করোনা-আক্রান্ত ছিলেন।’’ তবে হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘ওঁরা করোনায় আক্রান্ত
হননি, সুস্থ রয়েছেন।’’ মঙ্গলবার সকালে ওই ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্রে’ থাকা বাকিদের জন্য গাড়িতে করে খাবার দিতে যাচ্ছিলেন চুরুলিয়া পুলিশ আউটপোস্টের সাব-ইনস্পেক্টর কার্তিক ভুঁই-সহ ৫ জন। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্রের কাছে যেতেই কয়েকশো লোক গাড়ি তাক করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন। তাঁরা গাড়ি ফেলে পালান।
আরও পড়ুন: ব্রেক দ্য চেন: হাই রিস্ক স্পটে একগুচ্ছ নতুন কৌশল স্বাস্থ্য দফতরের
আরও পড়ুন: চিনার পার্কের হাসপাতালে চিকিৎসকের করোনা মেলায় উদ্বেগে অন্যরা
খবর পেয়ে ওসি (জামুড়িয়া) সুব্রত ঘোষ সাতটি গাড়িতে ২৫ জন পুলিশকর্মীকে নিয়ে গ্রামে গেলে পথ আটকায় জনতা। সুব্রতবাবুর দাবি, ‘‘লোকগুলো বলছিল, ‘করোনা রোগী বা বাইরের কাউকে এখানে রাখা যাবে না’। গুজবে কান না দিতে বলি। আচমকা আমাকে ও সঙ্গে থাকা পাঁচ জন পুলিশকর্মীকে রড, লাঠি হাতে মারধর করে ওরা। লাগোয়া মাঠে টানা বোমা-গুলি চলছিল। আমাদের গাড়িগুলিতে ভাঙচুরও চলে।’’ পরে অন্য পুলিশকর্মীরা ও কয়েক জন গ্রামবাসী ‘আক্রান্ত’দের উদ্ধার করে রানিগঞ্জের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। দুলাল কাজি নামে এক তৃণমূল নেতার অভিযোগ, তাঁর বাড়িতেও ভাঙচুর চালায় জনতা। পরে বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সায়কবাবু।
সোমবার রাতে এই জেলারই সালানপুরে আসানসোল থেকে ছ’জনকে ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্রে’ নিয়ে যাওয়ার পথে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়ে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স। শেষমেশ অ্যাম্বুল্যান্স দু’টি ওই ছ’জনকে নিয়ে আসানসোলে ফিরে যেতে বাধ্য হয় বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘চুরুলিয়া ও সালানপুরে কোয়রান্টিন কেন্দ্র করা নিয়ে গ্রামবাসীর ক্ষোভ রয়েছে। এ বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সবার কাছে অনুরোধ গুজব ছড়াবেন না। গুজবে কান দেবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy