Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

লকেটের করোনা, ‘নির্ভীক’ দিলীপ

লকেটের বাড়িতে তাঁর স্বামী এবং পুত্র রয়েছেন। নিজের করোনা ধরা পড়ায় তাঁদেরও পরীক্ষা করার কথা ভাবছেন সাংসদ।

লকেট চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

লকেট চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৩
Share: Save:

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ চড়া গলায় অভিযোগ করেছিলেন, তৃণমূল নেতা-কর্মীরা করোনা ছড়াচ্ছেন। তাঁরা লক ডাউন এবং সামাজিক দূরত্ব বিধির তোয়াক্কা না করে নানা জমায়েতে ঘুরে নিজেরা আক্রান্ত হচ্ছেন এবং অন্যদের মধ্যেও করোনা ছড়াচ্ছেন। দিলীপবাবুর ওই অভিযোগের ন’দিনের মধ্যে রাজ্য বিজেপির অন্দরেও করোনা সংক্রমণ। বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য দলের সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়ের করোনা পজিটিভ হয়েছে শুক্রবার। তিনি নিজেই টুইট করে সে খবর জানিয়েছেন। লকেটের শরীর খারাপ ছিল গত রবিবার থেকে। তিনি প্রথম করোনা পরীক্ষা করান একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরি থেকে এবং রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। জ্বর না কমায় দ্বিতীয় বার তিনি একই পরীক্ষা করান অন্য একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরি থেকে এবং এ দিন রিপোর্ট আসে পজিটিভ। সাংসদের কথায়, ‘‘খুব বেশি অসুস্থ বোধ করছি না। শুধু অল্প জ্বরটাই রয়েছে। তাই এখনও হাসপাতালে যাইনি। বাড়িতেই থাকব, নাকি হাসপাতালে যেতে হবে, সেটা চিকিৎসকরাই স্থির করবেন।’’তার পরে লকেট বলেন, ‘‘আমার জ্বর বেশি ছিল না। ৯৯-এর আশপাশে থাকছিল। কিন্তু কমছিল না। তাই দ্বিতীয় বার পরীক্ষা করাই।’’ বছর দুয়েক আগে হৃদরোগের জন্য লকেটের শরীরে স্টেন্ট বসাতে হয়েছে। সেই কারণে করোনা সংক্রমণ তাঁর পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা। তাই তাঁকে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। লকেটও বলেন, ‘‘আমি ভাবছি, হাসপাতালে গেলেই চিকিৎসা ঠিকমতো হবে।’’ তবে তিনি শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কি না, রাত পর্যন্ত তা জানা যায়নি। সূত্রের খবর, লকেটের অসুস্থতার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু রাত পর্যন্ত তা-ও হয়ে ওঠেনি।

লকেটের বাড়িতে তাঁর স্বামী এবং পুত্র রয়েছেন। নিজের করোনা ধরা পড়ায় তাঁদেরও পরীক্ষা করার কথা ভাবছেন সাংসদ। লক ডাউনের গোড়া থেকে বিজেপির রাজ্য দফতর বন্ধ ছিল। নেতারা সেখানে যাচ্ছিলেন না। কিন্তু গত ৮ জুন আনলক ১ পর্ব শুরু হতেই ওই দফতর খোলে এবং নেতারা সেখানে যাওয়া শুরু করেন। ভিড়ও হতে থাকে যথেষ্ট। এর পর দিলীপবাবু-সহ বিজেপি নেতারা রাজনৈতিক সফর এবং নানা কর্মসূচি শুরু করে দেন, যেগুলিতে সামাজিক দূরত্ব বিধি না মেনেই মানুষ যোগ দিতে থাকেন। লকেটও কয়েক দিন আগে সন্দেশখালি এবং বাগনানে গিয়েছিলেন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে। সন্দেশখালিতে স্থানীয় মহিলারা তাঁকে আলিঙ্গন করেন, এমন ছবিও দলের তরফেই দেওয়া হয়। তার পরে গত রবিবার থেকে অসুস্থ বোধ করায় স্বেচ্ছায় বাড়িতে আইসোলেশনে থাকছিলেন লকেট।

লকেটের সঙ্গেই একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দেন রাজ্য বিজেপির আর এক সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। দলের আরও কয়েক জন করোনা আক্রান্ত কর্মীর সংস্পর্শেও এসেছিলেন সায়ন্তন। তাই তিনি নিজের, স্ত্রীর এবং মায়ের করোনা পরীক্ষা করান। তবে তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। বিজেপির উত্তর শহরতলির জেলা সভাপতি কিশোর করও করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।

আরও পড়ুন: নবান্নে দাদা, গুঞ্জন বাড়ছে ‘ব্যাটিং কৌশল’ ঘিরেই

করোনা আবহে দিলীপবাবুর নিষেধে গত বুধবার বিদ্যুৎ বিল মকুবের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে বিজেপির যুব মোর্চা। পাঁচ দিন আগে দলের রাজ্য দফতরে যাতায়াতও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। খুব জরুরি দরকার না থাকলে নেতাদেরও সেখানে যেতে বারণ করা হয়েছে। এ দিন দিলীপবাবু বলেন, ‘‘পার্টি অফিসে নেতারা গেলেই মানুষ ভিড় করেন। তাই আপাতত সকলে বাড়ি থেকে ভিডিয়ো-যোগাযোগ রাখবেন।’’ তিনিও তো গত কয়েক দিন জমায়েতে গিয়েছেন। তিনি কি করোনা পরীক্ষা করাবেন? দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমার করোনা হওয়ার হলে এত দিনেই হত।’’

আরও পড়ুন: একুশে বুথে বুথে শহিদ স্মরণ, বেলা দুটোয় ভার্চুয়াল ভাষণ মমতার

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy