ফাইল চিত্র।
দেশের অন্যান্য প্রান্তের মতো বঙ্গেও ফের করোনার লাফঝাঁপ বেড়ে চলেছে। তা সত্ত্বেও পথেঘাটে অধিকাংশ মানুষ মাস্কহীন। যাঁরা মুখাবরণ নিয়ে বেরিয়েছেন, দেখা যাচ্ছে, সেটা তাঁদের অনেকেরই থুতনির নীচে ঝুলছে! এক শ্রেণির মানুষের এই বেপরোয়া আচরণে অবাক হচ্ছেন চিকিৎসকেরা। বুধবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ মঙ্গলবার রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৩৫২ জন। নব পর্যায়ে অতিমারির এই ধারাবাহিক বৃদ্ধির মধ্যে অধিকাংশ মানুষকে নিশ্চিন্তে অতিমারি বিধি ভাঙতে দেখে তার পরিণতি আঁচ করে শিউরে উঠছেন চিকিৎসকদের অনেকেই।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কলকাতা ও লাগোয়া জেলায় সংক্রমণ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও করোনা বিধি উপেক্ষা করার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ওই সব জায়গায় প্রথমে সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। তার পরে তা ছড়িয়ে পড়বে অন্যান্য জেলাতেও। তাই প্রথম থেকেই লাগাম ধরা প্রয়োজন। এক চিকিৎসকের কথায়, “করোনা মানেই এখন সামান্য জ্বর, সর্দি, কাশি। এই ধারণা থেকেই এক শ্রেণির মানুষ সব কিছু উপেক্ষা করছেন। কিন্তু আক্রান্ত হলে কার শরীরে কী প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে, সেটা আগাম বলা সম্ভব নয়। তাই সাবধানতা একান্ত প্রয়োজন।”
চিকিৎসকেরা বার বার করে সতর্ক করে দেওয়া সত্ত্বেও প্রশাসনের তরফে এখনও কড়া হাতে বিধি পালনের জন্য কিছু করতে দেখা যাচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্ন ক্রমশ জোরদার হচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানেই দেখা যাচ্ছে, গত ২৮ জুন (২৯ জুন প্রকাশিত) রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের ঘরে প্রবেশ করেছিল। ন’শোর ঘর থেকে এক লাফে ওই দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়ে গিয়েছিল ১৪২৪। তার ঠিক আট দিনের মাথায় অর্থাৎ ৫ জুলাই (৬ জুলাই প্রকাশিত) রাজ্যের দৈনিক সংক্রমণ পৌঁছে গেল প্রায় আড়াই হাজারের কাছে। ‘পজ়িটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণ হারও বেড়ে হয়েছে ১৬.২৪ শতাংশ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়তে থাকবে। ছুটির দিন বাদে দৈনিক গড়ে ১২ হাজার পরীক্ষা হচ্ছিল। মঙ্গলবার সেটি বেড়ে হয়েছে ১৪,৪৮৪।
বঙ্গে দৈনিক সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় এ দিন সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্যকর্তারা। কোন হাসপাতালে কত শয্যা প্রস্তুত রয়েছে, অক্সিজেনের পরিকাঠামো কতটা তৈরি ইত্যাদি জানতে চাওয়া হয় সেই বৈঠকে। সেই সঙ্গে কোথায় কী সমস্যা রয়েছে, হাসপাতালগুলির কাছে তা জানতে চান স্বাস্থ্যকর্তারা। স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, “প্রতিটি হাসপাতালই প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী করোনার শয্যা বাড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রতিটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নিজের এলাকায় সংক্রমণের গতিপ্রকৃতির দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।”
এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী কালিম্পং ছাড়া সব জেলাতেই কমবেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। তালিকার একেবারে প্রথমে রয়েছে কলকাতা। মহানগরীতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। সেখানে আক্রান্ত ৮২৫ জন। তার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা (৫৫২), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (১৫৭), হুগলি (১৪৬)। বাকি জেলাগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৯ থেকে তিনের মধ্যে রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy