বৃহস্পতিবারই রাজ্যে দৈনিক আক্রান্ত তিন হাজারের গণ্ডি ছুঁয়ে ফেলেছে। শুক্রবার তা আরও কিছুটা বাড়ল। কলকাতায় দৈনিক আক্রান্ত আবার বেড়ে সাড়ে ছ’শো ছাড়াল। তবে উত্তর ২৪ পরগনায় খানিক কমে নামল সাতশোর নীচে। চিকিৎসকের মহলের বক্তব্য, চলতি বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছিল, একই ভাবে এ বারও ওঠা-নামার মধ্যে দিয়েই সংক্রমণ বাড়তে পারে রাজ্যে। শুক্রবারের বৃদ্ধিও সে দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাই, এর পর দৈনিক আক্রান্ত কমলেও উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করছেন তাঁরা। উদ্বেগের আরও একটি কারণ, দৈনিক সংক্রমণের হার ২০ শতাংশের কাছাকাছিই রয়েছে। সে দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়ে অক্ষরে অক্ষরে কোভিডবিধি পালনের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত কোভিড বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩০৬৭ জন। এখনও পর্যন্ত কোভিডে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লক্ষ ৬৫ হাজার ৩৬০ জন। রাজ্যে নতুন করে যত সংক্রমিত হয়েছেন, তার মধ্যে অধিকাংশই কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার অধিবাসী। কলকাতায় আক্রান্ত ৬৫৩ জন। আর উত্তর ২৪ পরগনায় ৬৯৩ জন। কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলিতেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ওই তিন জেলার কোভিড পরিস্থিতিও প্রশাসনের নজরে রয়েছে। সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া ও বীরভূমেও।

রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ২১ হাজার ২৬৫ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৯৯ জনের। দৈনিক সংক্রমণের হার কমে হল ১৮.৯৫ শতাংশ। রাজ্যে বর্তমানে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে ৩০ হাজার ৪৩।

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৪ জুনের তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১৬০। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৩৫। তার আগের দু’দিন ছিল ১২৩ এবং ১৪৮। পরের দু’দিনের সংখ্যা ছিল ১৯৪ এবং ২২৯। ১২ থেকে ১৬ জুন, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১৬০, যা ১৪ জুনের চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৫ জুনের চলন্ত গড় হল ১৩ থেকে ১৭ জুনের আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)