Advertisement
E-Paper

অভিযোগ উত্তর থেকে দক্ষিণে, চেয়েও মেলে না অ্যাম্বুল্যান্স

করোনা-আক্রান্তদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে শিলিগুড়িতে পর্যাপ্ত সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স নেই।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০৬:১০
Share
Save

চাহিদার তুলনায় সংখ্যায় কম। থাকলেও, মিলছে না। মিললেও যে ভাড়া চাওয়া হচ্ছে, তা অনেক বেশি। করোনা-আবহে সরকারি ও বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে মিলছে নানা অভিযোগ।

পূর্ব বর্ধমানের কালনা হাসপাতাল থেকে বৃহস্পতিবার এক রোগীকে নিয়ে আত্মীয়েরা কল্যাণী যেতে চাইছিলেন। পরিজনদের অভিযোগ, আগে এই দূরত্ব যেতে দেড় হাজার টাকা নিত বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স। এ দিন আড়াই হাজার টাকা চান চালকেরা। দাবি করেন, গাড়ি ‘স্যানিটাইজ়’ করায় খরচ বেড়েছে। বেড়েছে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও। শেষে ২,৩০০ টাকায় রফা হয়। কাটোয়ার শ্রীবাটি গ্রামের সুধীর সাহা জানান, পেটে ব্যথা হওয়ায় তাঁর ভাইপোকে কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রোগী ছুটি পাওয়ায় বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করতে যান। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কেউ যেতে চাইছিলেন না। শেষে এক জন ২৫ কিমি রাস্তা যেতে দু’হাজার টাকা চান!’’

উত্তরবঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ অনেক। যেমন— করোনা-আক্রান্তদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে শিলিগুড়িতে পর্যাপ্ত সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স নেই। জলপাইগুড়িতে অনেক সময় একই সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে বিভিন্ন জায়গা থেকে করোনা-আক্রান্তদের তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে, প্রথম দিকে যাঁরা অ্যাম্বুল্যান্সে উঠছেন, তাঁদের কারও অবস্থা গুরুতর হলেও হাসপাতালে পৌঁছতে সময় লাগছে। মালদহে ‘সেফ হোম’-এ অসুস্থ হওয়া এক করোনা-আক্রান্তকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যেতে অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে প্রশাসনের কর্তাদেরও সমস্যায় পড়তে হয়।

আরও পড়ুন: পরিকল্পনার ত্রুটিতেই কি শয্যা-সঙ্কট

উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট, মুর্শিদাবাদের লালবাগ, পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পশ্চিম মেদিনীপুরেও অভিযোগের অন্ত নেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সাধারণ রোগী পরিবহণের সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে ৪২টি। অভিযোগ, রাতে অ্যাম্বুল্যান্স চেয়ে সরকারি নম্বরে ফোন করলে রোগীর জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ রয়েছে শুনলে নাকচ করে দেওয়া হচ্ছে। একই অবস্থা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার। ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় জানান, আরও ১০টি অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে।

অন্য রোগীকেও করোনা-আক্রান্ত ভেবে অনেক সময় চালকেরা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে না-তোলার নালিশ উঠেছে মুর্শিদাবাদে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পাবলিক অ্যাম্বুল্যান্স ইউনিয়নের সম্পাদক সুশোভন চৌধুরীর দাবি, ‘‘করোনা রোগী বহনের পরিকাঠামো আমাদের নেই। কিন্তু অন্য রোগী নিচ্ছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তেলের দাম বাড়ায় ভাড়া বেড়েছে।’’

আরও পড়ুন: লকডাউনেও রাজ্যে উড়ান চালু, মুখ্যমন্ত্রীর উষ্মায় মুখ্যসচিব

অ্যাম্বুল্যান্সের অভাব মেটাতে হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন বিভিন্ন ক্লাবের কাছে আবেদন করেছে, তারা বিধায়ক কোটা বা সাংসদ কোটায় যে অ্যাম্বুল্যান্স পেয়েছে, তা যেন স্বাস্থ্য দফতরকে দেয়। কিন্তু খুব একটা সাড়া মেলেনি। ফলে, প্রসূতিদের জন্য নির্দিষ্ট অ্যাম্বুল্যান্সও ব্যবহৃত হচ্ছে করোনা রোগীদের জন্য।

ব্যতিক্রমও রয়েছে। পুরুলিয়ার হুড়ায় মার্চের শেষে অ্যাম্বুল্যান্স-সমস্যা সামনে আসায় জেলা প্রশাসন প্রতিটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শুরু করে গ্রামীণ হাসপাতালে করোনা-আক্রান্তদের জন্য একটি করে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্তের দাবি, ‘‘সম্প্রতি অ্যাম্বুল্যান্স না-পাওয়ার অভিযোগ আর মেলেনি।’’

Coronavirus in West Bengal Ambulance Coronavirus

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}