ফাইল চিত্র।
পরিযায়ীরা ঘরে ফেরার সঙ্গেই কি করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে? শুক্রবার রাজ্যের স্বাস্থ্য বুলেটিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০০ ছাড়ানোর পরে এই প্রশ্ন ফের পাক খাচ্ছে।
ভাগীরথীর উত্তর ও দক্ষিণ তীরের পরিসংখ্যান দেখে সেটাই মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতর এবং জেলা প্রশাসনের অনেকে। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা জানাচ্ছেন, শ্রমিকদের ঘরে ফেরার পরই ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে করোনা-গ্রাফ। এ দিনই মালদহে ৪৪, উত্তর দিনাজপুরে ২৯, শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় ১৪, উত্তর ২৪ পরগনায় ১০ জনের দেহে সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে। শিলিগুড়িতে মারা গিয়েছেন এক ব্যক্তি। প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, যখন থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা রাজ্যে ঢুকতে শুরু করলেন, তার পর থেকে গোটা রাজ্যেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বানের জলের মতো। যার ঠেলায় এক সময় সংক্রমণে উপরের দিকে থাকা হাওড়াকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে মালদহ বা উত্তর দিনাজপুর। বেশি পিছিয়ে নেই কোচবিহার বা বীরভূমও।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ দিনই দু’শোর ঘরে ঢুকেছে মালদহ (২০১) এবং উত্তর দিনাজপুর (২০২)। হাওড়ায় সেখানে ২৩২ জন আক্রান্ত, বীরভূমে ১৮০। মুর্শিদাবাদে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত ১১২ জন। মারা গিয়েছেন দু’জন। গত দু’দিনে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার যে ২৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের সকলেই পরিযায়ী। এক শ্রমিকের মৃত্যুও হয়েছে।
তা হলে কি শুধু পরিযায়ীরাই এত সংক্রমণের জন্য দায়ী? স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের বক্তব্য, মহারাষ্ট্র, গুজরাতের মতো করোনা কবলিত রাজ্যগুলি থেকে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে শ্রমিকেরা ঘরে ফেরায় সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে সন্দেহ নেই। বহু ক্ষেত্রেই ট্রেনের যাত্রাপথ সম্প্রসারিত হয়েছে, বদলেও দেওয়া হয়েছে। মাঝপথে চেন টেনে নামার প্রবণতাও রয়েছে। সড়ক পথেও অনেকে বাড়ি ফিরেছেন। প্রশাসনিক কর্তারা এই ঘটনাগুলি তুলে ধরে দাবি করছেন, এ সবের ফলে সংক্রমণ বাড়ছে।
আরও পড়ুন: ‘থাকব বললেই কি থাকা যায়?’ প্রশ্ন পরিযায়ীদের
প্রশাসনের একটি অংশ মেনে নিচ্ছে, রাজ্যের দিক থেকেও কিছু খামতি রয়েছে। প্রথম দিকের পুলিশি কড়াকড়ি পরে বজায় থাকেনি। ফলে সাধারণ মানুষ করোনা সংক্রান্ত যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এই দলে পরে পরিযায়ীরাও মেশেন। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে, যথাযথ স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা না থাকা। একসঙ্গে
অনেক মানুষ রাজ্যে ফেরায় যে পরিমাণ লালারস পরীক্ষা হওয়া দরকার, তা-ও হচ্ছে না। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, যথাযথ পরিকাঠামো নেই। অনেক বকেয়া জমে যাচ্ছে। কোনও কোনও জেলায় নমুনা নষ্টও করে দিতে হয়েছে।
প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে, হোম কোয়রান্টিনেরও অসুবিধা রয়েছে বহু জায়গায়। বাড়িতে থাকার সময় এই শ্রমিকরা পরিবারের লোক এবং পড়শিদের সঙ্গে মেলামেশা করছেন। সরকারি কোয়রান্টিনের সংখ্যা এখনও বেশি নয়। যেগুলি আছে, তাতে অব্যবস্থার অভিযোগও উঠেছে। সব কিছু মিলিয়ে সংক্রমণ বাড়ছে। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হলে তাঁর মৃতদেহ একটি স্বচ্ছ প্লাস্টিক ব্যাগের মধ্যে রাখা হবে। নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে মৃতের আত্মীয়-পরিজনরা দেহ দেখতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy