পৌঁছল কোভিড প্রতিষেধক। গাড়িতে ফুল ছিটিয়ে বরণ করলেন রামপুরহাট মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দফতরের কর্মীরা। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও এ বার প্রতিষেধক কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। বুধবার শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্যকর্তারা। জানা গিয়েছে, কোভিশিল্ড প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য কারা কেন্দ্র তৈরিতে ইচ্ছুক, তা এক দু’দিনের মধ্যে লিখিত ভাবে স্বাস্থ্য দফতরে জানাতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বৈঠকে জানানো হয়েছে, যে সব বেসরকারি হাসপাতালে ওই কেন্দ্র তৈরি হবে, সেখানে প্রয়োজনমতো কোভিশিল্ড পাঠাবে রাজ্য সরকার। ওই হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী ছাড়াও অন্য গ্রাহকেরাও সেখান থেকে প্রতিষেধক পাবেন। তবে পুরো প্রক্রিয়া দেখভালের জন্য চার জন অফিসার, এক জন প্রতিষেধক প্রদানকারী, এক জন চিকিৎসক-সহ স্বাস্থ্যকর্মী এবং অন্যান্য পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালকেই। এ দিনের বৈঠকের পরে পিয়ারলেস, উডল্যান্ডস, অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা প্রতিষেধক কেন্দ্র তৈরির জন্য প্রস্তুত।
পূর্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘ভ্যাকসিন কেন্দ্রে ইচ্ছুক বেসরকারি হাসপাতালকে পরিকাঠামো তৈরির পাশাপাশি আবেদন করতে বলা হয়েছে। সেখানে প্রতিষেধক নেওয়ার পরে কারও কোনও উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসার ব্যবস্থাও রাখতে হবে।’’ কিন্তু যদি কোনও প্রতিষেধক গ্রাহককে শারীরিক সমস্যার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়, তা হলে তার খরচ সরকার বহন করবে কি না, সে বিষয়ে এ দিনের বৈঠকে স্পষ্ট আলোচনা হয়নি।
আরও পড়ুন: উত্তর দিনাজপুর থেকে পুরুলিয়া, বুধবারও জেলায় জেলায় টিকা সরবরাহ অব্যাহত
আরও পড়ুন: পরীক্ষা কমলেও বাড়ল সংক্রমণের হার, অস্বস্তি উত্তর ২৪ পরগনা নিয়ে
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে সমস্ত হাসপাতাল আবেদন করবে, তাদের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখা হবে। প্রতিষেধক প্রদানকারীদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তবে আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকেই বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিষেধক কেন্দ্র চালু হচ্ছে না। পরবর্তী পর্যায়ের জন্য সেগুলি তৈরি রাখা হচ্ছে।’’ সূত্রের খবর, প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য শহর ও জেলায় যেখানে হাসপাতালের পরিকাঠামো রয়েছে, সেই জায়গাতেই ভ্যাকসিন কেন্দ্র তৈরির কথা। কারণ হিসেবে আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে অনেক সময়েই শ্বাসকষ্ট বা অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। সামাল দেওয়ার জন্য অ্যাড্রিনাল ইঞ্জেকশন সহ অন্যান্য ওষুধের বন্দোবস্ত প্রতিটি কেন্দ্রতে থাকলেও, প্রয়োজন হলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা শুরুর জন্য হাসপাতাল পরিকাঠামোর প্রয়োজন।
আগামী ১৬ জানুয়ারি যে ৩৫৩টি কেন্দ্রে থেকে প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হবে, সেখানে সমস্ত পরিকাঠামো তৈরি আছে কি না এ দিন সে বিষয়েও খোঁজ খবর নেন স্বাস্থ্য কর্তারা। স্বাস্থ্য পরিষেবাপ্রদানকারীদের নাম নথিভুক্তির জন্য মঙ্গলবার শেষ দিন থাকলেও, নেটওয়ার্কের সমস্যার জন্য অনেকেই পোর্টালে নাম তুলতে পারেননি। তাদের জন্য বুধবার পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এসএসকেএম, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, আরজিকর, বেলেঘাটা আইডি, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন, বিসি রায় শিশু হাসপাতাল এবং ৫টি আর্বান প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে শহরের প্রতিষেধক কেন্দ্র হিসেবে বাছা হয়েছে। সূত্রের খবর, কলকাতার জন্য ৯৩,৫০০ ডোজ় রাখা রয়েছে বাগবাজারে কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল স্টোরে।
মঙ্গলবার শহরে ভ্যাকসিন আসার পরেই বেশ কয়েকটি জেলায় তা পৌঁছে গিয়েছিল। এ দিন সকালে উত্তরবঙ্গ-সহ দক্ষিণবঙ্গেরও বেশ কয়েকটি জেলায় প্রতিষেধক পাঠায় স্বাস্থ্য দফতর। কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় রাতের মধ্যে সমস্ত জায়গাতেই ভ্যাকসিন পৌঁছে গিয়েছে বলেই খবর।
হাওড়ায় পৌঁছনো ২৮ হাজার ৫০০ ডোজ় এ দিন সকাল থেকেই জেলার ১৮টি কেন্দ্রে পাঠানো শুরু হয়েছে। নদিয়াতে পৌঁছেছে ৩৫৪০০, হুগলিতে পৌঁছেছে ৩২ হাজার, মুর্শিবাদাবাদে ৩৭,৫০০ ডোজ়। মুর্শিদাবাদে কোভিড আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অন্য জেলার তুলনায় অনেক কম হলেও, সেখানে এত সংখ্যক প্রতিষেধক কেন পাঠানো হল? জেলার আধিকারিকদের দাবি, ‘‘স্বাস্থ্য কর্মীদের ব্যাপক হারে প্রচার করতে হয়েছিল। তাই স্বাস্থ্য পরিষেবাপ্রদানকারী কাউকেই বাকি রাখা হচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy