প্রতীকী ছবি।
ব্লাড ক্যানসারে ভোগা আট বছরের মেয়েটির যখন করোনা ধরা পড়েছিল, ভেঙে পড়েননি মা। শুধু একটু শক্ত হয়েছিল চোয়াল। গত বছর মেয়ের ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। তখন থেকেই মুম্বই গিয়ে লড়াই শুরু। এর মধ্যে লকডাউন। কোনও মতে চলেছে চিকিৎসা। জেলায় ফেরার পরেই সেই বালিকার করোনা ধরা পড়ে। তার পরে টানা ১৪ দিনের লড়াই শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতালে। অবশেষে সুস্থ হয়ে রবিবার বাড়ি ফিরেছে মালদহের বালিকাটি।
গত বছরের অষ্টমীর দিন ইংরেজবাজারের সাগরদিঘির ওই পরিবার জানতে পেরেছিল, মেয়ের লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়েছে। তার পরেই মেয়েকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বই। দেড় বিঘা জমি চাষ ও দিনমজুরি করে চলে দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে চার জনের সংসার। বাবা মালদহে কিছু রোজগার করে, ধার করে টাকা পাঠাতেন মুম্বইয়ে। তা দিয়েই চলত মা-মেয়ে ও তাঁদের এক আত্মীয়ের যাবতীয় খরচ। লকডাউনের সময়ে কিছু পড়শি টাকা তুলে পাঠালে ১৫ মে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে মালদহে ফেরেন তাঁরা। কিন্তু গ্রামবাসীদের একাংশের আপত্তিতে মাঠে আলাদা থাকতে হয় তাঁদের। শেষ পর্যন্ত আমপানের জন্য মা-মেয়ের ঠাঁই হয় স্থানীয় একটি স্কুলে। তখন লালারস পরীক্ষা হলে ২৪ মে ওই বালিকার করোনা ধরা পড়ে। স্বাস্থ্য দফতর জানায়, কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে ওই বালিকাকে। সঙ্গে ছিলেন মা-ও। তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ।
কোভিড হাসপাতালের সুপার অর্ণব প্রামাণিক বলেন, ‘‘ব্লাড ক্যানসারের জন্য এমনিতেই ওই বালিকার প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ছিল। ওকে সুস্থ করাটাই চ্যালেঞ্জ ছিল। আলাদা কেবিনে ওর সঙ্গে একই শয্যায় থাকতেন মা। দু’দিনের মাথায় বালিকার অবস্থার অবনতি হয়। অক্সিজেন দিতে হয়। অ্যান্টিবায়োটিক বদলাতে হয়েছে। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন-এর ডোজ় দেওয়া হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণে রাজ্যে এক দিনে ফের রেকর্ড, আক্রান্ত ৪৪৯
বাড়ি ফেরার পথে মা জানালেন, চিকিৎসক, নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহায্য পেয়েছেন তিনি। বলেন, ‘‘মেয়ে যা খেতে চাইত, জানালেই মিলত। কেক, বিস্কুট, ফলের রস দিতেন সিস্টাররা। একটা লড়াই তো শেষ হল। কিন্তু আরও রয়েছে। সেটাও লড়ব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy