Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Corona

অতিসক্রিয়! রয়েছেন আবু ধাবিতে, মহিলাকে খুঁজতে ফ্ল্যাটে হানা পুর স্বাস্থ্য কর্মীদের

করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতার মাঝে অনেকেই অতি সক্রিয় হয়ে গিয়ে মানুষকে হেনস্থা করছেন এমন অভিযোগও আসছে বিভিন্ন শহর এবং রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে।

এঁরা প্রত্যেকেই করোনা নিয়ে অতিসক্রিয়তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। — নিজস্ব চিত্র।

এঁরা প্রত্যেকেই করোনা নিয়ে অতিসক্রিয়তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ১৯:৫০
Share: Save:

হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা তিতাস চৌধুরী আবু ধাবির একটি বহুতলের ব্যালকনি থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করছেন রবিবার দুপুরে। তিনি সেই লাইভ পোস্টে জানাচ্ছেন যে তিনি ২৯ ফেব্রুয়ারি আবু ধাবিতে পৌঁছেছেন। আরও একমাস থাকবেন সেখানেই।

কোনও ভাবেই তিনি দেশে ফিরে যাননি। তাঁর অভিযোগ, শিবপুরে তাঁর বাড়ির এলাকায় হঠাৎ করেই গুজব ছড়িয়ে গিয়েছে যে তিনি লুকিয়ে বাড়ি গিয়েছেন। অভিযোগ, সেই গুজবের জেরেই তাঁর সত্তরোর্ধ স্বামী গৌতম চৌধুরীকে হেনস্তা করছেন এলাকার মানুষ।

তিতাসের অভিযোগ, বারে বারে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা তাঁর স্বামীকে বিরক্ত করছেন। এমন কী প্রতিবেশীদের অভিযোগ বাড়িতেও তল্লাশি করা হয় তাঁর খোঁজে। তাঁর স্বামীর কথা কেউ বিশ্বাস করছেন না যে তিতাস আদৌ বাড়ি ফেরেননি। এখনও রয়েছেন আবু ধাবিতেই। দেশে যে তিনি ফেরেননি এবং অযথা যে হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁর স্বামীকে তা জানিয়ে শিবপুর থানার পুলিশকেও ফোন করেছিলেন বলে নিজের লাইভ পোস্টে জানিয়েছেন তিতাস।

আরও পড়ুন: লকডাউনে কী কী খোলা, কী কী বন্ধ? দেখে নিন এক নজরে

তিতাসের স্বামী গৌতম চৌধুরী বলেন, ‘‘ রবিবার সকাল থেকে তিন বার হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের তিনটি আলাদা দল আমার বাড়িতে এসেছেন। তাঁদের কেউ বা কারা ভুল খবর দিয়ে বিভ্রান্ত করছেন যে আমার স্ত্রী বাড়িতে এসেছেন। আমার স্ত্রী বাড়ি ফিরলে তো অভিবাসন দফতরের কাছে নথি থাকবে। কিছু মানুষ ভুল খবর দিয়ে এই স্বাস্থ্য কর্মীদের মূল্যবান সময় নষ্ট করছেন। তেমনি কিছু মানুষকে হয়রান করছেন।”

শুধু তিতাস নন, করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতার মাঝে অনেকেই অতি সক্রিয় হয়ে গিয়ে মানুষকে হেনস্থা করছেন এমন অভিযোগও আসছে বিভিন্ন শহর এবং রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে। বরানগরের যাদব চন্দ্র ঘোষ লেনের বাসিন্দা স্নেহা বিশ্বাস।

কর্মসূত্রে মুম্বইতে থাকেন। কোভিড-১৯-এর জেরে তাঁর দফতর বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ দেয় স্নেহাকে। তাই তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন ১৯ মার্চ। স্নেহার অভিযোগ, ‘‘ ফিরে আমি বাড়িতেই ছিলাম। বাইরে কোথাও যাইনি। সর্বোপরি আমি বিদেশ থেকে আসিনি। তারপরও ক্রমাগত আমাদের হাউজিং সোসাইটির সম্পাদক আমাকে জোর করছেন ফিট সার্টিফিকেট দেখাতে।” স্নেহার অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর ফ্ল্যাটে হাজির হন রবিবার দুপুরে এবং তাঁকে বাধ্য করেন বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে যেতে।

আরও পড়ুন: হাততালি, ঘণ্টায় দেশ জুড়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, মোদীর ডাকে বিপুল সাড়া

জনতা কারফিউয়ের মধ্যে তিনি সেখানে যান পরীক্ষা করাতে। ওই আবাসনের সম্পাদক সুবিমান নন্দীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,‘‘ ওই তরুণী মুম্বই থেকে ফিরেছেন। তার পর তিনি সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এলাকার কিছু বাসিন্দা তা নিয়ে অভিযোগ তোলেন। তাঁকে বলা হয় যে তিনি যেন একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। আমরা কোনও ভাবে তাঁকে হেনস্থা করতে চাইনি। সতর্ক থাকতে বলেছি মাত্র।”

একই রকম অভিজ্ঞতা সদ্য লিথুয়ানিয়া থেকে ফেরা আথিনা দাসের। তাঁরও অভিযোগ বিমানবন্দরে সমস্ত ধরণের নিয়ম কানুন মেনে পরীক্ষা করিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। তার পরেও তিনি নিজে হোম আইসোলেশনেই ছিলেন। তারপরও এলাকার কিছু মানুষ তাঁকে হেনস্থা করছেন এবং জোর করছেন কোয়েরান্টিন সেন্টারে যেতে। পুলিশের হস্তক্ষেপে তিনি রেহাই পেলেও, শনিবার দিনই এ রকমই অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছিলেন বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে ভর্তি হাবরার তরুণীর পরিবার এবং এক বন্ধু।

রাজ্য পুলিশের এক কর্তা স্বীকার করেন এই অতি সক্রিয়তার কথা। তিনি বলেন, ‘‘ একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। আমরা কোনও অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখছি। যদি কোনও অভিযোগ গুজব হয় তা হলে সেই ব্যক্তিকে সতর্ক করা হচ্ছে যাতে তিনি গুজব না ছড়ান।”

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Coronavirus Abu Dhabi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy