ফাইল চিত্র।
দ্বিতীয় ঢেউয়ে দাপট বাড়ছে করোনার। আর হুহু করে কমতে শুরু করেছে বিমানযাত্রীর সংখ্যা। এপ্রিলের মাঝামাঝি কলকাতা থেকে সারা দিনে গড়ে যাতায়াত করছেন মাত্র ২৯ হাজার যাত্রী। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে উড়ান সংস্থা, বিমান পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা ভীষণ চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন।
অতিমারির জন্য গত বছর ২৪ মার্চ দেশে সব ধরনের উড়ান পরিষেবার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। তা শিথিল করা হয় ২৫ মে। কলকাতা থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ উড়ান পরিষেবা ফের শুরু হয় ২৮ মে। ২০২০ সালের অগস্টে কলকাতা থেকে যাতায়াত শুরু করেছিলেন ২৫ হাজার যাত্রী। তার পর থেকে যাত্রী-সংখ্যা নিয়মিত বাড়তে থাকে। এর মধ্যে করোনা সংক্রমণের দরুন জুলাইয়ে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই-সহ দেশের ছ’টি শহর থেকে কলকাতার সরাসরি উড়ান বন্ধ করে দেয় রাজ্য সরকার। অক্টোবরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ওই ছ’টি শহর থেকে সপ্তাহে তিন দিন করে উড়ান চলবে।
অক্টোবর-নভেম্বরে কলকাতায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ অভ্যন্তরীণ যাত্রী বেড়েছিল বলে বৃহস্পতিবার জানান কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি খুব ভাল যাত্রী পাওয়া গিয়েছে। এখন দিল্লি থেকে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু মুম্বই, চেন্নাই, আমদাবাদ, পুণে ও নাগপুর থেকে সপ্তাহে শুধু তিন দিন (সোম, বুধ ও শুক্রবার) উড়ান যাতায়াত করছে। বাকি চার দিন বন্ধ থাকছে।’’
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, যে-তিন দিন সব উড়ান চালু রয়েছে, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে যাতায়াত মিলিয়ে সেই দিনগুলিতে গড়ে ৪৩ হাজার করেও যাত্রী হয়েছে। উড়ান বেড়ে হয়েছে ১৬০। বাকি চার দিন গড়ে ১৩৫টি উড়ান চলেছে এবং যাত্রী হয়েছে ৩৫ হাজারের মতো। “মার্চের মাঝামাঝি থেকে আবার যাত্রী-সংখ্যা কমতে শুরু করে। যে-তিন দিন সব উড়ান চলছে, সেই দিনগুলিতে গড়ে ৩৪ হাজার এবং যে-চার দিন কয়েকটি শহরে উড়ান চলছে না, তখন গড়ে ২৯ হাজার যাত্রী হচ্ছে। উড়ান সংখ্যাও কমে যথাক্রমে ১৬০ এবং ১৩৫ হয়েছে,’’ বলেন কৌশিকবাবুর।
এর পাশাপাশি রয়েছে চারটি রাজ্যের যে-কোনও বিমানবন্দর থেকে আসা যাত্রীদের উপরে নিষেধাজ্ঞা। এখন কেরল, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক ও তেলঙ্গানা থেকে কলকাতায় আসতে হলে সঙ্গে আরটিপিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট থাকা বাধ্যতামূলক। যদিও যাত্রীদের একটি বড় অংশের বক্তব্য, বেঙ্গালুরু বা মু্ম্বই বিমানবন্দরে উড়ানে ওঠার আগে কেউই সেই সার্টিফিকেট দেখতে চাইছেন না। কিন্তু ধরা পড়ার আশঙ্কায় এবং বিমানে উঠতে দেওয়া হবে না, এই ভয়ে সকলেই রিপোর্ট নিয়ে আসছেন। উড়ান সংস্থা জানাচ্ছে, এই কারণে ওই চার রাজ্য থেকে কলকাতার যাত্রীও কমে গিয়েছে।
উড়ান সংস্থার এক কর্তা বলেন, “মুম্বই, দক্ষিণ ভারত থেকে শ্রমিকেরা আবার ফিরতে শুরু করেছেন। যাত্রী বলতে এখন ওইটুকুই। ওড়িশা, তামিলনাড়ুর মতো অনেক রাজ্যও আরটিপিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে নিতে বলছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ওই সব জায়গায় যাচ্ছে না।”
কৌশিকবাবু জানান, সেপ্টেম্বরের পর থেকে যাত্রী-সংখ্যা বাড়ছিল। বিমানবন্দরের ভিতরের বিপণিগুলিও খুলেছিল। কিছু নতুন ব্যবসায়ী এসেছিলেন। কিন্তু যে-হারে যাত্রী কমছে, ওঁরা কত দিন টিকে থাকতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় আছে।”
সাধারণ আন্তর্জাতিক যাত্রী-উড়ান এখন বন্ধ। অন্য দেশের সঙ্গে একক চুক্তির ভিত্তিতে দেশের কিছু শহর থেকে বিদেশে উড়ান চলছে। এই ব্যবস্থাপনায় কলকাতা থেকে সরাসরি লন্ডনের উড়ান চালু হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। এই মুহূর্তে কলকাতা থেকে প্রধানত দুবাই, দোহা ও ঢাকায় আন্তর্জাতিক উড়ান চলছে। সপ্তাহে চার দিন গড়ে ১৬০০ যাত্রী যাতায়াত করছেন। ভয়ঙ্কর ভাবে মার খাচ্ছে ‘ডিউটি ফ্রি’-এর ব্যবসাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy