ফাইল চিত্র
সিকিমের পর এ বার দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার পাহাড়ি এলাকা। বুধবার দুপুরে দার্জিলিঙে জেলা প্রশাসন ও জিটিএ কর্তৃপক্ষ জেলার বিভিন্ন পর্যটন, পরিবহণ, হোটেল এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পরেই আজ, বৃহস্পতিবার থেকে দার্জিলিঙের জিটিএ এলাকায় পর্যটকদের প্রবেশ নিষেধ বলে ঘোষণা করেন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা। সন্ধ্যায় দার্জিলিঙের জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি একই নির্দেশিকা জারি করে দেন। কালিম্পঙেও একই নির্দেশ জারি হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত জারি থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
এই ঘোষণার ফলে বিদেশি তো বটেই দেশের কোনও প্রান্ত থেকেই আগামী ১৫ এপ্রিল অবধি দার্জিলিং, কালিম্পং— এই দুই পাহাড়ি জেলায় পর্যটকেরা আর ঢুকতে পারবেন না। সেই সঙ্গে কোনও হোটেল, ভবন, ক্লাব বা সংস্থায় জমায়েত বা কোনও ধরনের সামজিক অনুষ্ঠান না করার নির্দেশেও দিয়েছেন জেলাশাসকরা।
এ দিনের বৈঠকে সমস্ত পর্যটন সংস্থা, হোম স্টে-র মালিকপক্ষ এবং হোটেল মালিকদের নতুন বুকিং বন্ধ করার কথা বলেন অনীত। তবে পর্যটকদের বুকিং বাতিল করে আলাদা করে ফি বা চার্জ নেওয়াটা সমীচিন নয় বলে জানিয়েছেন জিটিএ চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়বাসীর সুরক্ষা, স্বাস্থ্য আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাইরের পর্যটকদের আপাতত পাহাড়ে না আসার জন্যই বলা হয়েছে। সবার মতামত নিয়েই আমরা সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসনগুলিও আমাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে।’’
অনীত এ দিন জানান, ‘‘আমরা অভিভাবকদের বলছি, বয়স্ক লোকজন এবং ছেলেমেয়েদের বাড়িতে রাখুন। জিটিএ এলাকার বাইরে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া না যাওয়াই ভাল। রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি পরামর্শ, সভা, মিছিল-মিটিং আপাতত না করাই ভাল। রেস্তরাঁ চালু রাখলে চূড়ান্ত স্বাস্থ্যসম্মত বিধি মেনে তা চালাতে হবে।’’
জিটিএ সূত্রের খবর, এ দিন থেকে পাহাড়ের সমস্ত হোটেল, লজ এবং হোম স্টে-তে বুকিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনিতেই সিকিম বহিরাগতদের জন্য বন্ধ হওয়ার পর থেকে পাহাড়ে লোক কম আসছিল। নতুন নির্দেশিকায় তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল। শুধু পর্যটক নয়, বাইরে রাজ্য বা জেলা থেকে এসে অস্থায়ী দোকান নিয়ে পাহাড়ে হাটবাজারে ব্যবসা করাও বন্ধ হয়ে গেল এ দিন থেকে। ইতিমধ্যে দার্জিলিং চিড়িয়াখানা, হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এ দিন সন্ধ্যা থেকেই বাইরের জেলার হোটেল, লজের কর্মীরা বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। তেমনিই, পরিবহণ ব্যবসাও কমতে থাকবে। আগামী এপ্রিল অবধি ৯০ শতাংশ হোটেল, গাড়ি বুকিং বাতিল হয়ে গিয়েছে। অনেকেই এদিন সন্ধ্যার পর পাহাড় থেকে নেমে এসেছেন। ভরা পর্যটন মরসুমে আগামী কিছুদিন ভারী লোকসানের আঁচ করছেন পাহাড়ের নানা ক্ষেত্রের ব্যবসায়ীরা।
দুই জেলার পাহাড়ে নিয়ন্ত্রণ জারি হলেও সমতলের জন্য এখনও কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি। পর্যটন ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানাচ্ছেন, শিলিগুড়ি মহকুমায় অবাধে বিভিন্ন জেলা এবং রাজ্যের গাড়ি, লোকজন ঘুরে বেড়াচ্ছে। সিকিম থেকে সব গাড়ি নীচে নামছে। অথচ সে রাজ্যে গাড়ি নিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে। বিদেশিরা নানা এলাকা থেকে এসে বাগডোগরা হয়ে বাইরে যাচ্ছেন। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসনের উচিত, দ্রুত সমতলের বাইরের এলাকার লোকজনের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy