উদ্দাম: খেজুরিতে ‘পুজো-পার্টি’। নিজস্ব চিত্র
ফাঁকা মাঠে রংবাহারি আলোর ঝলক। সঙ্গে ডিজের কান ফাটা শব্দ। তার মধ্যে উদ্দাম নেচে চলেছেন এক দল যুবক।
রাজ্যে লকডাউন শুরুর রাতে এ ভাবেই রক্ষাকালী পুজোয় মাতলেন পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরির একাংশ বাসিন্দা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সোমবার বিকেল থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করেছে সরকার। তার বহু আগেই জমায়েত না করার নির্দেশিকা জারি হয়েছে। কিন্তু সে নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে সোমবার রাতে যে ভাবে পুজোর নামে ‘পার্টি’ চলল খেজুরি-১ ব্লকে, তাতে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, ‘‘করোনায় আক্রান্ত হলে কে রক্ষা করবে!’’
খেজুরি-১ ব্লকের কটারি এবং ঘোলাবাড় গ্রামের সীমানা এলাকায় গত রবিবার থেকে একাধিক কালীপুজো শুরু হয়েছে। সেই পুজোর আয়োজনে জড়িয়ে রয়েছেন এক শিক্ষকও। সন্ধ্যা নামলেই হচ্ছে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে নানা অনুষ্ঠান। তা দেখতে শয়ে শয়ে মানুষ ভিড় করছেন। যাঁদের মধ্যে অনেকেই ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেছেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। ব্লক প্রশাসন জানাচ্ছে, পুজো উদ্যোক্তাদের ওই অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তা-ও খেজুরির কেউচগেড়িয়া, কটারি, ঘোলাবাড় এলাকায় রোজ রাতেই নাচাগানা চলছে।
বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছিল খেজুরি-১ ব্লক প্রশাসন। তাতে সোমবার রাতে খেজুরি থানা থেকে পুলিশ এলাকায় যায়। কিন্তু জমায়েত হটানো দূরের কথা, ডিজের শব্দও কম করতে পারেনি তারা। মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য শোভাযাত্রা বের করে। খবর পেয়ে খেজুরি-১ এর বিডিও তীর্থঙ্কর ঘোষের নেতৃত্বে সেখানে যায় পুলিশ এবং র্যাফ। পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
পুজোর অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা স্বীকার করছেন কটারি গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় স্কুল শিক্ষক উত্তম পাত্র। তবে তাঁর দাবি, ‘‘এক দিনে দু’টো কালীপুজো এবং আটটি মনসা পুজো হয়। সেগুলোর সঙ্গে আমি সরাসরি যুক্ত নয়। অনুষ্ঠানে যাওয়া উচিত হয়নি।’’ খেজুরির ব্যাপারে কাঁথির এসডিপিও অভিষেক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ডিজে, সাউন্ড বক্স। এ দিন থেকেই গোটা খেজুরিতে পুলিশের রুট মার্চ শুরু হয়েছে।’’
খেজুরির ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। সোমবার ঘাটালের গোকুলনগরে কালীপুজো উপলক্ষে জমায়েত হয়েছিল। সেখানে তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতদের ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার খড়্গপুর শহরের সুভাষপল্লি ঘোষপাড়ায় একটি বাড়িতে কালীপুজো উপলক্ষে পাত পেড়ে খাওয়াদাওয়া চলছিল। পুলিশ বাড়ির মালিককে আটক করে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘কেউ পুজো করতেই পারেন। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে জমায়েত বরদাস্ত করা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy