Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Buddhadeb Bhattacharjee Death

সিওপিডিই ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল, ডায়াবিটিসও

শেষ ছ’বছরে ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে দু’বার ও করোনা নিয়ে এক বার আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ছিলেন বুদ্ধদেব। শেষ বারে বেশ কিছু দিন ভেন্টিলেশনেও ছিলেন।

Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৪ ০৭:৩৯
Share: Save:

জ্বর এসেছিল মঙ্গলবার। বুধবার তা কমেও গিয়েছিল। রক্তপরীক্ষায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ফুসফুসে যে সংক্রমণ ছিল, তা ছাড়া উদ্বেগের তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা মারাত্মক ভাবে কমতে থাকে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয়ে মৃত্যু হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের।

দীর্ঘ দিন ধরে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে বাড়িতে দেখতে যেতেন মেডিসিনের চিকিৎসক সোমনাথ মাইতি। এ দিনও সকালে মীরা ভট্টাচার্যের ফোন পেয়ে মিনিট দশেকের মধ্যে পৌঁছন। যদিও কিছু করার সময় পাননি। মাঝেমধ্যে বুদ্ধদেবকে বাড়িতে দেখতে যাওয়া অস্থি চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে একেবারেই বোঝা যায়নি এত বড় বিপদ আসতে পারে।” চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সিওপিডি-ই তাঁকে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল। সঙ্গে ডায়াবিটিসের কারণে বিভিন্ন অসুস্থতার পাশাপাশি কিডনির সমস্যাও ছিল।

শেষ ছ’বছরে ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে দু’বার ও করোনা নিয়ে এক বার আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ছিলেন বুদ্ধদেব। শেষ বারে বেশ কিছু দিন ভেন্টিলেশনেও ছিলেন। তবে চরম অসুস্থতার মধ্যেও নিজস্ব ব্যক্তিত্বের ছাপ এতটুকু ম্লান হত না, জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। বাইপ্যাপ বা নেবুলাইজ়ার কেন, কত ক্ষণ চালানো হবে তাঁকে আগাম বুঝিয়ে বলতে হত চিকিৎসকদের। তার পরে সম্মতি মিলত। সময় বেশি লাগলে তা নিয়ে প্রশ্নও করতেন। তবে রাশভারী ব্যক্তিত্বের বাইরে গিয়ে তাঁর শুশ্রূষার দায়িত্বে থাকা নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের পড়াশোনা, পরিজন, কত বছর কাজ করছেন— সে সব খোঁজ নিতেন। জানাতেন পছন্দের খাবারের কথাও।

এই হাসপাতালে প্রতিবারই মেডিসিনের চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী, পালমোনোলজিস্ট অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায়, কার্ডিয়োলজিস্ট সরোজ মণ্ডল-সহ অন্যান্যদের চিকিৎসাধীন থেকেছেন বুদ্ধদেব। শেষ বার হাসপাতাল থেকে ফেরার পরেও প্রায় এক মাস বাড়িতে বুদ্ধদেবের পরিচর্যার দায়িত্বে ছিলেন সেখানকার চার জন নার্স ও ফিজিয়োথেরাপিস্টেরা। ওই বেসরকারি হাসপাতালে বুদ্ধদেবের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক সৌতিক পান্ডা জানান, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা থাকলেও স্মৃতি ও শ্রবণশক্তি অত্যন্ত প্রখর ছিল তাঁর। কারা দেখতে আসছেন, জানতে চাইতেন। কেবিনে কেউ ঢুকলেই বুঝতে পারতেন।

সৌতিক বলেন, “কিছুটা সুস্থ হলেই বাড়ি ফেরার জন্য উতলা হতেন। জ্বরের কথা জেনে হাসপাতালে আনার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু ওঁর আসতে না চাওয়ার কথাই জানিয়েছিলেন পরিজনেরা।” তিনি বলেন, “তিন বারই অনেক দিন ধরে ওঁকে দেখেছি। ব্যক্তিগত ভাবে মনে হত, মনে বড্ড অভিমান রয়েছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy