বিতর্কে জড়ালেন দুই তৃণমূল নেতা। প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের দু’প্রান্তে দুই তৃণমূল নেতা ফেসবুকে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন। একইসঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও এক বার বেআব্রু হল।
হাওড়ার আমতার বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা অশোক ভট্টাচার্য বুধবার তাঁর ফেসবুক পেজে দলে গণতন্ত্র, সম্মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে মন্তব্য করেছেন, চোর-ডাকাত না হলে সম্মান নেই। দলে কতদিন থাকতে পারবেন, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন। অন্য দিকে, চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বর্ধমান উত্তরের দলীয় বিধায়ক নিশীথ মালিক টাকা নিয়েছেন, ফেসবুকে এমন অভিযোগ তুলেছেন বর্ধমানের জেলা পরিষদ সদস্য তৃণমূলের নুরুল হাসান। তিনি একটি চিঠির ছবি দিয়ে ওই দাবি করেন। চিঠিটিতে প্রাপক ও প্রেরকের নাম অবশ্য মুছে দেওয়া হয়েছে।
অশোকের ফেসবুক-মন্তব্যকে ঘিরে আমতা বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের অন্দরে শোরগোল পড়েছে। ১৯৯৮ সাল থেকে তিনি টানা দশ বছর এই কেন্দ্রে দলের সভাপতি ছিলেন। ২০১৯ সাল পর্যন্ত দলের গ্রামীণ জেলার সহ-সভাপতিও ছিলেন। বর্তমানে তিনি যে পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা, সেই বাইনানে দলের কোর কমিটির সদস্য। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় তিনি ছিলেন এই কেন্দ্রে দলের চেয়ারম্যান।
দলের জন্মলগ্ন থেকে যুক্ত থাকা এবং দলের বিভিন্ন পদের দায়িত্ব সামলানোর কথা উল্লেখ করে অশোক ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জানি না আর থাকতে পারব কি না! এখন যা চলছে, তার প্রতিকারের লোক নেই। এক জন ভাবে দলটা তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। অভিযোগ জানিয়ে ক্লান্ত। গণতন্ত্র দলে শেষ। তাই বিদ্রোহ ছাড়া গতি নেই। দলে এখন কর্পোরেট (রাজ) চলছে। চোর-ডাকাত না হলে সম্মান নেই’।
কার উদ্দেশে এই মন্তব্য, তা অবশ্য ফেসবুকে লেখেননি অশোক। তবে, বৃহস্পতিবার তাঁর অভিযোগ, ‘‘এখানে বিধায়কই দল চালাচ্ছেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ব্যাপক আকার নিয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি হচ্ছে। এ ভাবে চললে আমতায় দলের খুব ক্ষতি হবে। আরও অনেকেই দলের ভবিষ্যৎ ভেবে উদ্বিগ্ন। বিষয়টি নিয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে যাব। প্রতিকার না পেলে আমরা সবাই একযোগে পদত্যাগ করব।’’
দলের বর্ষীয়ান নেতার অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি আমতার তৃণমূল বিধায়ক সুকান্ত পাল। তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে যা বলার দলের কেন্দ্র সভাপতি সেলিমুল আলম বলবেন।’’ বিধায়ক-ঘনিষ্ঠদের দাবি, বিধানসভা ভোটের আগে টিকিট পাওয়ার জন্য অশোক এ ভাবেই ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। পঞ্চায়েত ভোট আসছে। তাই ফের তিনি প্রচারে আসতে চাইছেন।
দলের পক্ষ থেকে তাঁর সঙ্গে কথা বলা হবে জানিয়ে সেলিমুল বলেন, ‘‘অশোকবাবু দলের বর্ষীয়ান নেতা। হয়তো তাঁর কোনও বিষয়ে অভিমান হয়েছে। তাই সামাজিক মাধ্যমে ওই সব মন্তব্য করেছেন। অশোকবাবু বাইনান বামনদাস হাই স্কুলের বিধায়ক মনোনীত সভাপতি এবং বাইনান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। তাঁর স্ত্রী বাইনান সরকারি গ্রন্থাগারের সম্পাদক। দলের সব গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অশোকবাবুকে ডাকা হয়। তার পরেও কেন এমন মন্তব্য করলেন বুঝতে পারছি না।’’
বর্ধমান জেলা পরিষদের দলীয় সদস্য নুরুল হাসানের পোস্ট করা চিঠির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিকের বিরুদ্ধে কে কাকে ওই চিঠি দিয়েছেন, তা ঠিক সময়ে প্রকাশ করা হবে বলে দাবি করেছেন নুরুল। তৃণমূল সূত্রের খবর, নুরুল ও নিশীথের দ্বন্দ্ব অনেক দিনের। বিধায়কের দাবি, ‘‘কাউকে সাজিয়ে আমাকে বদনাম করার খেলায় মেতেছেন নুরুল।’’ তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, “সমাজমাধ্যমে এ রকম পোস্ট দলবিরোধী কাজ। বিষয়টি দলের নজরে রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy