ফাইল চিত্র।
বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বিশ্বভারতীর। পাঁচিলের পরে এ বার বিতর্কের কেন্দ্রে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইটে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের জন্য টেন্ডার জমা দেওয়ার ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেই বয়ান সামনে আসতেই বিপুল আর্থিক খরচ ও সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকাগুলি নিয়ে সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের বড় অংশ।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মোট ২৭১ জন নিরাপত্তারক্ষী পিছু দৈনিক খরচ হতে চলেছে প্রায় দুই লক্ষ টাকা। কয়েক দিন আগেই ঐতিহ্যশালী উপাসনা মন্দির সংস্কারের জন্য বিশ্বভারতীর শুভানুধ্যায়ীদের আর্থিক সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সেই প্রসঙ্গ তুলে নিরাপত্তা খাতে এই বিপুল অর্থ ব্যয়ের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন প্রাক্তনী, আশ্রমিকেরা। দর্শন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র, সমাজকর্মী নুরুল হক বলেন, “বিশ্বভারতী চত্বরকে পাঁচিলের ঘেরাটোপ ও নিরাপত্তার বজ্রআঁটুনিতে মুড়ে অচলায়তনে পরিণত করার চক্রান্ত করছেন বর্তমান কর্তৃপক্ষ।’’
সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তিতে বেশ কিছু শর্ত রেখেছে বিশ্বভারতী। যেমন, প্রত্যেক সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীর নামে আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর লাইসেন্স থাকতে হবে, প্রয়োজন হলে প্রথমে আকাশের দিকে ও পরে হাঁটুর নীচে গুলি চালাতে হবে। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন কী পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যেখানে গুলি চালানোর প্রয়োজন পড়বে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশিষ্ট আশ্রমিক শর্মিলা রায় পোমো, প্রাক্তনী মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায়রা। মনীষাদেবীর ক্ষোভ, “রবীন্দ্র শিক্ষাদর্শের বিপরীতে গিয়ে ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা চলছে। আশ্রমিক, পড়ুয়া, প্রাক্তনী, কর্মী— এঁদের মধ্যে ঠিক কাদের ভয়ে সশস্ত্র রক্ষীর প্রয়োজন হল এবং প্রয়োজনে গুলি চালানোর নির্দেশও দেওয়া রইল?” সমাজমাধ্যমে সুনন্দ রায়-সহ একাধিক প্রাক্তনীর যুক্তি, ‘‘এই এলাকায় অপরাধের পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে এই বিশাল বাহিনীর কোনও প্রয়োজন নেই। বরং ওই টাকা শিক্ষা ও গবেষণার উন্নতিতে ব্যয় করলে বিশ্বভারতী র্যাঙ্কিংয়ে উপরে উঠে আসবে।’’
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, এই বিষয়টি নিয়ে অহেতুক বিতর্ক হচ্ছে। ছ’জন মহিলা রক্ষী ছাড়া নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা আগের মতো আছে। নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার নির্দেশেও অস্বাভাবিকতা নেই বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘রবীন্দ্র ভবন মিউজিয়ামে নোবেল পুরস্কারের প্রতিকৃতি-সহ বহু অমূল্য স্মারক, চিত্র ও দলিল রয়েছে। এ ছাড়াও বিশ্বভারতী চত্বরে এমন প্রচুর স্থাপত্য, ভাস্কর্য, নির্মাণ রয়েছে যা জাতীয় সম্পদ হিসেবে মান্যতা পায়। এগুলি রক্ষার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। তাই আগেও যেমন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীরা এই দায়িত্ব সামলেছেন, নতুন টেন্ডারেও সেই একই দায়িত্বের কথাই উল্লেখ রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy