ভোটার তালিকায় দেওয়া ঠিকানায় থাকেন না কেউই। এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞাসা করেও কিছু জানা যায়নি। কারণ, স্থানীয়েরা কেউই চেনেন না। বাধ্য হয়েই তালিকায় থাকা নম্বরে ফোন করেছিলেন বুথস্তরের আধিকারিক। গোটা বিষয়টি বলার পরেই ফোনের ও পার থেকে ভারী গলায় নির্দেশ, ‘‘ওটা আমার মেয়ে। নামটা রেখে দিন।’’
যিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন, তিনি কৃষ্ণনগর ২ ব্লকের বিডিও অনুজ শিকদার। গোটা ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে ‘পদের প্রভাব খাটানো’র অভিযোগ উঠেছে। অনুজ অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কর্মসূত্রে আমি কৃষ্ণনগরে থাকি। আমার মেয়ে কৃষ্ণনগর কলেজের ছাত্রী। সেই সূত্রেই ওর নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে।’’
কিন্তু স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ী, যে জায়গায় তিন কূলে কেউ থাকেননি, সেখানকার ভোটার তালিকায় নাম এল কী করে? বিডিওর জবাব, ‘‘আমি এ বিষয়ে কিছু বলব না।’’
ধুবুলিয়া নওপাড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩১ নম্বর পার্টের নতুন ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে ২১ বছর বয়সি সৃজিতা শিকদারের। কিন্তু তাঁকে এলাকার মানুষ কেউই চেনেন না। এমনকি বিএলও তাঁর নাম শোনেননি বলেই দাবি করেছিলেন। তালিকা যাচাইকের কাজে আসা বুথ স্তরের আধিকারিক প্রদীপকুমার দাস যোগাযোগ করেছিলেন পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গেও। প্রদীপের দাবি, প্রধানও সৃজিতার নাম শোনেননি বলেই জানিয়েছিলেন। বিষয়টিতে সন্দেহ হওয়ায় ভোটারের নামের পাশে দেওয়া নম্বরে ফোন করেছিলেন প্রদীপ। সেই সময়েই অনুজ তাঁকে সৃজিতার নাম ভোটার তালিকায় রেখে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
প্রদীপ বলেন, ‘‘সৃজিতা শিকদারের নম্বর দেখে আমি ফোন করেছিলাম। বিডিও সাহেব জানান, এটা ওঁর নম্বর। উনি বলেন, সৃজিতা শিকদার ওঁর মেয়ে। উনি আমাকে নামটি রেখে দিতে বলেন।’’ এ বিষয়ে নদিয়ার জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’