ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
ধর্ষণ করে খুনের ‘সত্য ঘটনার নাট্যরূপান্তর’। আর সেই দৃশ্যে প্রত্যক্ষদর্শীর চরিত্রে অভিনয় করানো হয়েছে দুই শিশুশিল্পীকে দিয়ে। তৃণমূল শাসিত পশ্চিমবঙ্গে ‘নারী নির্যাতনের ছবি’ তুলে ধরতে গিয়ে রাজ্য বিজেপির প্রকাশ করা একটি ভিডিয়ো নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলল রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। শিশু অধিকার আইন লঙ্ঘন হয়েছে দাবি করে, ওই ভিডিয়ো প্রচারের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের কাছে স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চট্টোপাধ্যায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে অবিলম্বে তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ভিডিয়োতে একটি ধর্ষণের দৃশ্যে শিশুদের ব্যবহার করা হয়েছে। যা জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট অনুযায়ী শিশুর অধিকার ভঙ্গের শামিল। এ ক্ষেত্রে ২০১২ সালের পকসো (প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেসেন্স) আইনের ৪৪ ধারা এবং ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৩(১)(জে) ধারা অনুযায়ী কমিশন তদন্ত চাইছে বলে জানানো হয়েছে চিঠিতে।
পুলিশ কমিশনারকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সংবিধানের পাশাপাশি, রাষ্ট্রপুঞ্জের শিশু অধিকার সংক্রান্ত বিধিও উপেক্ষা করা হয়েছে বিজেপির ওই রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনে। কোন নাট্যদল বা গোষ্ঠী ওই ভিডিয়ো নির্মাণের সঙ্গে জড়িত, ভিডিয়োটির পরিচালক ও চিত্রনাট্যকারের নাম, কোন দৃশ্যে কী ভাবে শিশুশিল্পীদের ব্যবহার করা হয়েছে, এমনকি ওই শিশুশিল্পীদের অভিনয়ে অংশ নেওয়ার বিষয়ে তাদের অভিভাবকদের প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে কমিশন। দুই শিশু-সহ ওই ভিডিয়োর নির্মাণ, পরিবেশন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোডে যাঁরা জড়িত, তাঁদের প্রত্যেকের নাম খুঁজে বার করার অনুরোধ জানানো হয়েছে পুলিশ কমিশনারের কাছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর অন্ত্যেষ্টির আয়োজন করে ফেলেছে বিজেপি
আরও পড়ুন: বেড খালি নেই, ফিরিয়ে দিল একাধিক হাসপাতাল, ১১ ঘণ্টা চিকিৎসাহীন থেকে মৃত কিশোর
‘আর নয় অন্যায়’ শিরোনামে, ৫৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োর গোড়াতে দাবি করা হয়েছে, ‘এই ভিডিয়োতে দেখানো ঘটনাটি সত্য ঘটনার নাট্য রূপান্তর’। বিজেপির ওই বিজ্ঞাপনে দুই শিশুকে (দিদি এবং ভাই) তাদের মায়ের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে দেখানো হয়েছে। মায়ের উপর নির্যাতনের সাক্ষী মেয়ে সেখানে বলছে, “তৃণমূলের বাংলায় এটাই বাস্তব। অসুরক্ষিত প্রতিটা নারী।’’
পুলিশ কমিশনারকে দেওয়া চিঠির সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত বিজ্ঞাপনের ‘লিঙ্ক’ও পাঠিয়েছে কমিশন। চিঠি পাওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় তদন্তের অগ্রগতির কথা জানানোর অনুরোধও করা হয়েছে।
শিশুদের দিয়ে খুন-ধর্ষণের দৃশ্যে অভিনয় করানোর প্রসঙ্গে সরাসরি কোনও জবাব দেয়নি বিজেপি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে, কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনে যাঁরা বসে রয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকে তৃণমূল নেতাদের বাড়ির ভৃত্য। তৃণমূল নেতারা যা হুকুম দেন ওঁরা সেগুলোই তামিল করেন। ওঁদের কোনও পদক্ষেপেরই কোনও গুরুত্ব আমাদের কাছে নেই। ক্ষমতা থাকলে রাজ্য সরকার প্রমাণ করুক, এ রাজ্যে নারীদের উপর নির্যাতন হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy