উচ্চ প্রাথমিকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এক যুবকের কাছ থেকে সাত লক্ষ টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠল কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। এমনকি, তাঁর বিরুদ্ধে অগ্রিম বাবদ ওই যুবকের থেকে দেড় লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। তবে, চাকরি না পেয়ে অভিযুক্ত কনস্টেবলের বিরুদ্ধে শেক্সপিয়র সরণি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মালদহের ওই যুবক। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কনস্টেবলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে লালবাজার।
সূত্রের খবর, অভিযোগকারী যুবকের নাম জরিফ শেখ। তিনি মালদহের মোথাবাড়ির নবীনগরের বাসিন্দা। পদার্থবিদ্যায় স্নাতক জরিফ বর্তমানে গৃহশিক্ষকতা করেন।
অভিযুক্ত কনস্টেবল আব্দুল রহিমের বাড়ি মালদহের কালিয়াচকে। জরিফ জানান, ২০১৯ সালে উচ্চ প্রাথমিক টেটে উত্তীর্ণ হন তিনি। এর পরে ওই বছরেই এক আত্মীয়ের সূত্রে কনস্টেবল আব্দুলের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। জরিফের অভিযোগ, উচ্চ প্রাথমিকে চাকরি পাইয়ে দেবেন বলে তাঁর কাছ থেকে সাত লক্ষ
টাকা দাবি করেন আব্দুল। অভিযোগকারীর কথায়, ‘‘প্রথমে বলা হয়েছিল, চাকরি হয়ে গেলে টাকা দিতে হবে। কিন্তু কিছু দিন পরে অগ্রিম বাবদ প্রথমে ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। সেই মতো টাকাও দিয়ে দিই। এর পরে বার বার নানা অজুহাতে টাকা চাওয়া হতে থাকে। মোট ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা আমার থেকে নেওয়া হয়।
বাকি টাকা চাকরি পাওয়ার পরে দিতে হবে বলে ওই কনস্টেবল জানিয়েছিলেন।’’ জানা গিয়েছে, খিদিরপুরের একটি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ওই টাকা নিয়েছিলেন অভিযুক্ত আব্দুল। মোট সাত দফায় টাকা দেওয়া হয়।
যদিও টাকা দেওয়ার পরে কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও চাকরি পাননি জরিফ। ২০২১ সাল থেকে অভিযুক্ত কনস্টেবলের কাছে টাকা ফেরত চাইতে থাকেন তিনি। কিন্তু অভিযোগ, টাকা ফেরত না দিয়ে জরিফকেই পাল্টা হুমকি দিতে থাকেন অভিযুক্ত। এমনকি, তাঁর ফোন নম্বর ব্লক করে দিয়ে জরিফের সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ করে দেন। এর পরেই ওই যুবক গত ১০ এপ্রিল শেক্সপিয়র সরণি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
শুধু ওই যুবকের থেকেই নয়, আরও কয়েক জনের কাছ থেকেও চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা আব্দুল দাবি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জরিফের কথায়, ‘‘একটা চাকরি পাওয়ার আশায় ধার-দেনা করে কোনও মতে টাকা জোগাড় করে দিয়েছিলাম। কিন্তু চাকরি তো হলই না, উল্টে সেই টাকার সুদ এখনও গুনে চলেছি।’’
ওই যুবকের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরেই তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ইতিমধ্যেই অভিযোগকারীকে লালবাজারে ডেকে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন পুলিশকর্তারা। অভিযুক্ত কনস্টেবলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ওই যুবককে টাকা ফেরতের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)