বিনয় মিশ্র। ফাইল ছবি।
এ যাবৎ কয়লা কাণ্ডের তদন্তে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ডস লিমিটেডের পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে অনুপ মাজি, বিনয় মিশ্রের মতো অভিযুক্তদের ‘আঁতাঁতের স্পষ্ট তথ্য’ মিলেছে বলে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে দাবি করল।
সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা ও গ্রেফতারি এড়াতে কয়লা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অনুপ ওরফে লালা সুপ্রিম কোর্টে যান। তাঁর দাবি ছিল, রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া সিবিআই পশ্চিমবঙ্গে তদন্ত করতে পারে না। এই যুক্তিকে রাজ্য সরকারও সমর্থন করেছিল। এ বার সিবিআই পাল্টা যুক্তি দিয়েছে, এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে রেলের এলাকায় বেআইনি ভাবে কয়লা পাচারের ঘটনা ঘটেছে। তাই সিবিআইয়ের তদন্তের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে।
কয়লা কাণ্ডের তদন্তে নেমে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সিবিআই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরাকে বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। এর পর ইডি রুজিরাকে সোমবার দিল্লির দফতরে ডেকে পাঠিয়েছিল। রুজিরা চিঠি দিয়ে জানান, করোনা আবহে দুই শিশুসন্তানকে ছেড়ে তাঁর দিল্লি যাওয়া সম্ভব নয়। কলকাতায় বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সব রকম সহযোগিতা করবেন। ৬ সেপ্টেম্বর অভিষেককেও হাজির হতে বলা হয়েছে। অভিষেক ওই দিন ইডি-র অফিসারদের মুখোমুখি হবেন কি না, এখনও স্পষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার তিনি দিল্লিতেই ছিলেন। তাঁর তরফে এক প্রবীণ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া হয়েছে বলে একটি সূত্রের দাবি। তবে তা কী বিষয়ে, তা নিশ্চিত করে কেউই মুখ খুলতে চাননি।
অনুপ সিবিআইয়ের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলায় শীর্ষ আদালত এ বিষয়ে সিবিআইয়ের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। সিবিআই গত নভেম্বরে লালার পাশাপাশি ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ডস (ইসিএল)-এর দুই জেনারেল ম্যানেজার, সংস্থার নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান ও ইসিএলের কুনুস্তোরিয়া ও কাজোরা এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। সিবিআইয়ের অভিযোগ ছিল, ইসিএলের আধিকারিকদের সঙ্গে লালাদের ‘যোগসাজশের’ মাধ্যমে আসানসোল ও সংলগ্ন অঞ্চলে রেলের সাইডিং এলাকা থেকে কয়লা পাচার করা হয়েছে। সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে দাবি করেছে, এখনও পর্যন্ত তদন্তে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ইসিএলের অধিকারিকদের সঙ্গে অভিযুক্তদের ‘যোগসাজশ’ স্পষ্ট। অভিযুক্তদের উদ্দেশ্য ছিল, প্রাকৃতিক সম্পদ চুরি করে কয়েকশো কোটি টাকা কামানো। এর ফলে কেন্দ্রীয় সরকারেরও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
অনুপের যুক্তি ছিল, রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। এখানে সিবিআইয়ের এক্তিয়ারই নেই। সিবিআই পাল্টা যুক্তিতে জানিয়েছে, দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট আইনে মাজির বিরুদ্ধে কয়লা পাচারের অভিযোগের তদন্তের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। মাজির যুক্তি ছিল, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সিবিআইকে রাজ্যে যে কোনও বিষয়ে তদন্তের সার্বিক অনুমতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। প্রতিটি তদন্তের ক্ষেত্রে সিবিআইকে আলাদা করে রাজ্যের থেকে অনুমতি নিতে হবে। সিবিআই এই তদন্তে অনুমতি নেয়নি।
সিবিআই জবাবে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১৯৮৯-এর ২ অগস্টের বিজ্ঞপ্তিতে সিবিআইকে রাজ্যে তদন্তের সার্বিক অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু ২০১৮-র ১৬ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেই অনুমতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও এই মামলায় কোনও বাধা আসছে না। কারণ, এ ক্ষেত্রে অপরাধ হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন রেলের এলাকায়। এর আগে এম বালকৃষ্ণ রেড্ডি বনাম সিবিআই মামলায় আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, রেলের এলাকা ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ছাড়া রাজ্যের এলাকায় তদন্ত করতে হলে সিবিআইকে অনুমতি নিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy