এই নিয়ে দ্বিতীয় বার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে ঝালদার পরিস্থিতির সুরাহা চেয়ে চিঠি দিলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
ঝালদায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ফল মানছে না, এমন অভিযোগ জানিয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। ঝালদা পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই তৃণমূল বনাম কংগ্রেস দ্বন্দ্ব চলছে। বাংলার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে দেওয়া চিঠিতে অধীর লিখেছেন, ‘‘শাসক দল নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঝালদায় যে ভাবে নোংরা রাজনীতি করছে এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে, সে ব্যাপারে অবিলম্বে আপনাকে হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করছি।’’
পুরুলিয়ার ঝালদায় পুরসভায় বোর্ড গঠন এবং চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে পুরভোটের পর থেকেই চলছে অশান্তি। পুরভোটে ঝালদায় ১২টি আসনের মধ্যে সমান সমান ফল করেছিল তৃণমূল এবং কংগ্রেস। এর পর থেকেই কোন দল পুরসভায় বোর্ড গঠন করবে, তা নিয়ে শুরু হয় গন্ডগোল। সম্প্রতি তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল কংগ্রেস। তলবি সভায় তারা নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করলে সুরেশ চেয়ারম্যান পদ সরে যান। কিন্তু তার পরও কংগ্রেস ঝালদার পুরবোর্ড গঠনের অনুমতি পায়নি। বদলে সরকারের তরফে শাসক দলের এক কাউন্সিলরকেই প্রশাসক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। সরকারের তরফে এই নিয়োগ হতে চলেছে জানার পরই গত ২৪ নভেম্বর অধীর চিঠি লিখে বিষয়টি জানিয়েছিলেন বাংলার নতুন রাজ্যপালকে। কিন্তু তার পরও তৃণমূল নির্বিঘ্নেই জবা মাছোয়ার নামে দলের এক কাউন্সিলরকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করে। শনিবার সেই নিয়োগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যপালকে আবার চিঠি দিয়ে ঝালদায় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করতে বললেন অধীর।
দ্বিতীয় চিঠিটি রবিবারই অধীরের তরফে পাঠানো হয়েছে রাজ্যপালকে। তাতে অধীর লিখেছেন, ‘‘পুরসভা আইনের সমস্ত ধারা অমান্য করে ওই নিয়োগ করা হয়েছে। কংগ্রেস নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা সত্ত্বেও তাদেরকে বোর্ড গঠন করার অনুমতি না দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। যদি সরকারই জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধির গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করতে উঠে পড়ে লাগে, তবে সাধারণ মানুষের কী হবে?’’
উল্লেখ্য, গত পুর-নির্বাচনে ১২টি আসনের ঝালদা পুরসভায় তৃণমূল ও কংগ্রেস উভয়ই পাঁচটি করে আসন পায়। দু’টি আসনে জয়ী হয় নির্দল। বোর্ড গঠনের কয়েক দিন আগে খুন হন কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। তাঁর পরিবার ও কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, পুরসভার ক্ষমতা দখলের জন্যই খুন করা হয় তপনকে। যদিও সে অভিযোগ ঠিক নয় বলে শুরু থেকে দাবি করে আসছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। গত ২১ নভেম্বর ঝালদায় অনাস্থা সংক্রান্ত তলবিসভায় দুই নির্দলকে নিয়ে কংগ্রেস পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের পরেও তাদের বোর্ড গঠনে প্রশাসনের তরফে সম্মতি না জানানোয় অসন্তুষ্ট কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy