প্রতীকী চিত্র।
বিক্ষোভ, প্রার্থী বদলের ‘নাটকের’ মধ্যেই কলকাতা পুরসভার জন্য দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল কংগ্রেস। প্রথম দফার ৬৬ জনের পরে রবিবার ঘোষণা করা হয়েছে আরও ২৯ জন প্রার্থীর নাম। প্রার্থী বদল হয়েছে তিন ওয়ার্ডে। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, বাকি ওয়ার্ডে প্রার্থী ঘোষণার প্রক্রিয়া আজ, সোমবার সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। বামেরা যে হেতু জোটের জন্য ইতিবাচক বার্তা দেয়নি, তাই তাঁরাও যথাসম্ভব আসনে প্রার্থী দিতে চান।
দ্বিতীয় দফার তালিকায় উল্লেখযোগ্য নাম বিবাদী বাগ এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক। আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম ঘোষণার আগে তাঁর ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ দিনই অবশ্য প্রচার শুরু করে দিয়েছেন সন্তোষ। প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি শাদাব খান পুরভোটে প্রার্থিপদ-প্রত্যাশী হলেও তাঁর ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে অন্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। পর্যবেক্ষক কমিটির তরফে প্রাক্তন বিধায়ক অসিত মিত্র জানিয়েছেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মত নিয়েই তাঁরা যাবতীয় পদক্ষেপ করছেন।
বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস রাজ্যে শূন্য হয়ে গেলেও পুরভোটের টিকিট ঘিরে বিধান ভবনে বিক্ষোভের চেনা ছবি ফের দেখা গিয়েছে এ দিন! বন্দর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টিতেই প্রদেশ সহ-সভাপতি মহম্মদ মোক্তারের পছন্দের লোকজনকে টিকিট দেওয়া হয়েছে, ‘যোগ্য’ কর্মীরা সুযোগ পাচ্ছেন না— এই অভিযোগে এ দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ১৪০ নম্বর ওয়ার্ডের এক দল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক। ওই ওয়ার্ডে রাজা মোল্লাকে প্রার্থী করার বিরোধিতা করেছেন তাঁরা। বিধান ভবনের উপরে উঠে এক দল মহিলা-সহ কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা ক্ষোভ জানাতে গেলে ধস্তাধস্তিও হয়েছে বলে অভিযোগ। অসিতবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘জলের বোতল ছোড়াছুড়ি হয়েছে শুনেছি। প্রার্থী নিয়ে অল্প-বিস্তর ক্ষোভ সব সময়েই থাকে। সে সব মিটে যাবে।’’
তবে সব চেয়ে ‘নাটকীয়’ ঘটনা ঘটেছে উত্তর কলকাতার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পার্থ মিত্রের রাতারাতি ভোলবদল ঘিরে! এ বার টিকিট না পাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায়ী কাউন্সিলর পার্থবাবু শনিবার অভিযোগ করেছিলেন, শাসক দলে টাকার বিনিময়ে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলের ‘দুর্নীতির’ প্রতিবাদ করে কংগ্রেসের ‘জনজাগরণ যাত্রা’য় যোগ দেওয়ার পরে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রাথী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করে পার্থবাবু এ দিন দাবি করেন, কংগ্রেসকে তিনি প্রার্থী করার কথা বলেননি। টিকিট না পেলেও তিনি তৃণমূলেই আছেন। ফিরহাদও বলেন, ‘‘উনি বলেছেন, কংগ্রেস প্রার্থী করার লোক পাচ্ছে না বলে এমন করেছে।’’ কংগ্রেস অবশ্য শনিবারের ছবি প্রকাশ করে পাল্টা দাবি করেছে, পার্থবাবুই ‘বিশ্বাসভঙ্গ’ করেছেন। উত্তর কলকাতার জেলা কংগ্রেস সভাপতি রানা রায়চৌধুরী এবং প্রদেশ মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়ের বক্তব্য, ‘‘ভয়, চাপ না অন্য কী কারণে উনি মত বদল করেছেন, তাঁরাই বলতে পারবেন!’’ ওই ওয়ার্ডে তপন শীলের নাম এ দিন প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে পুরনো নাম কেটে শনিবার পার্থবাবুর নাম ঢোকানো হয়েছিল।
পুরভোট ঘিরে কংগ্রেসের কাজকর্ম যে ভাবে চলছে, তাতে অবশ্য প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশও ক্ষুব্ধ। বর্ষীয়ান নেতাদের অনেককেই বিধান ভবনে দেখা যাচ্ছে না। প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের ক্ষোভ, ‘‘সকলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলে দলেরই তাতে ভাল হয়। কিন্তু এখানে নির্দিষ্ট কিছু পছন্দের লোকজনের বাইরে কেউ কিছু জানতে-বুঝতেই পারছে না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy