Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

রবিশঙ্করদের দলবদলে অসন্তোষ শাসকের ঘরে

নেতা দলবদল করেছেন। রাতারাতি তাই বদলের পথে দলীয় কার্যালয়ও।বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতায় একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে তৃণমূলে যোগ দেন কংগ্রেসের প্রাক্তন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে-সহ দলের পাঁচ কাউন্সিলর।

প্রকাশ্যে অবশ্য স্বাগতই। সদ্য তৃণমূলে আসা পাঁচ কাউন্সিলরকে শুভেচ্ছা তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি ও পুরপ্রধানের। নিজস্ব চিত্র।

প্রকাশ্যে অবশ্য স্বাগতই। সদ্য তৃণমূলে আসা পাঁচ কাউন্সিলরকে শুভেচ্ছা তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি ও পুরপ্রধানের। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০১:০৮
Share: Save:

নেতা দলবদল করেছেন। রাতারাতি তাই বদলের পথে দলীয় কার্যালয়ও।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতায় একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে তৃণমূলে যোগ দেন কংগ্রেসের প্রাক্তন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে-সহ দলের পাঁচ কাউন্সিলর। তারপর রাতেই খড়্গপুরের ঝাপেটাপুর মোড়ে কংগ্রেস কার্যালয়ের ব্যানার খুলে ফেলা হল। ওই কার্যালয়টিই রবিশঙ্করবাবুর। তবে শুক্রবারও ওই কার্যালয়ে নতুন কোনও ব্যানার লাগানো হয়নি। তবে, আশা শীঘ্রই সেখানে ঘাসফুলের প্রতীক লাগানো হবে।

এ দিন পুরসভায় রবিশঙ্করবাবুকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শুভেচ্ছাও জানান তৃণমূলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী ও পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। তবে এই সেদিনও পুরসভার বিরোধী দলনেতার পদে থাকা রবিশঙ্করবাবুর অবস্থান দলবদলের পরে ঠিক কী হবে, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ, খড়্গপুরে এমনিতেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। এক দিকে রয়েছেন শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী। অন্য দিকে প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পাল। এই অবস্থায় দাপুটে নেতা রবিশঙ্করবাবু তৃণমূলের নতুন ‘মাথা’ হিসেবে উঠে আসবেন বলেই জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের ধারণা। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, আপাতত সদ্য দলে আসা পাঁচ কাউন্সিলরকে কোনও পদ দেওয়া হচ্ছে না। আগামীতে কী পদ দেওয়া হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

এ দিকে, কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা পাঁচ কাউন্সিলরকে ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে অসন্তোষ ঘনাচ্ছে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কল্যাণী ঘোষ দলবদলের পরে এক তৃণমূলকর্মী বলছেন, “আমাদের ওয়ার্ডে প্রাক্তন কাউন্সিলর বিশ্বনাথ মাইতি এত দিন আমাদের নেতা ছিলেন। এখন কাউন্সিলর কল্যাণী ঘোষ দলে এলেন। কার কথা মানব দল ঠিক করে দিক।”

এই পরিস্থিতিতে অনুগামীদেরও তৃণমূলে টানতে উদ্যোগী হয়েছেন রবিশঙ্করবাবু। আগামী রবিবার নিজের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কর্মীদের নিয়ে তিনি বৈঠকে বসবেন। রবিশঙ্করবাবুর দাবি, “আমার ওয়ার্ডের কর্মীরা আমার সঙ্গেই রয়েছেন। একমাসের মধ্যে খড়্গপুরে অনুষ্ঠান হবে। সেখানেই কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দেবেন।”

রেলশহরের চাচা, বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা জ্ঞানসিংহ সোহনপালের হাত ধরেই শহরের রাজনীতিতে উত্থান রবিশঙ্কর পাণ্ডের। তবে সে ভাবে সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলাতে দেখা যায়নি রবিশঙ্করবাবুকে। বরং ১৯৯৫ সাল থেকে টানা পনেরো বছর খড়্গপুরের পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। সে ক্ষেত্রে একাংশ মনে করেন, তিনি ‘দক্ষ প্রশাসক’। তাই নতুন দলে রবিশঙ্করবাবুর প্রশাসনিক দায়িত্ব পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, তাঁকে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হতে পারে। এখন ওই পদে আছেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি। আবার রবিশঙ্করবাবুকে ফের পুরপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে একাংশের ধারণা। এ নিয়ে শহরে গুঞ্জন চলছে। তৃণমূলের একাংশও পুরপ্রধান হিসেবে রবিশঙ্করবাবুকে দেখতে চাইছেন। যেমন শহরের যুব তৃণমূল নেতা রাজা সরকার বলেন, “রবিশঙ্কর পাণ্ডে আসায় আমরা দক্ষ একজন প্রশাসক পেলাম। আগামী দিনে ওঁকে কী দায়িত্ব দেওয়া হবে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করবেন। তবে রবিদা দীর্ঘবছর যে ভাবে দক্ষতার সঙ্গে পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন তাতে পুরপ্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।” অবশ্য এই বিষয়ে শহরের তৃণমূল নেতারা এখনই মুখ খুলছেন না। দলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বলছেন, “রবিশঙ্কর পাণ্ডেকে কোনও পদ দেওয়া হবে কি না তা দল ঠিক করবে।” একই সুরে তৃণমূলের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের বক্তব্য, “রবিদাকে কোনও পদ দেওয়া হবে কি না সেটা দল বলতে পারবে।” যদিও রবিশঙ্করবাবু নিজে বলছেন, “আমি নিঃশর্তে তৃণমূলে এসেছি। দল যে দায়িত্ব দেবে তা
পালন করব।”

অন্য বিষয়গুলি:

Ravi shankar pandey TMC Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy