মঙ্গলবার আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদন পড়ে ধৃত ওই দম্পতিকে ফেরানোর উদ্যোগী হলেন অধীর চৌধুরী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
গত আট মাস ধরে বাংলাদেশি সন্দেহে ভিন্ রাজ্যের জেলে বন্দি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বাসিন্দা পলাশ অধিকারী এবং তাঁর স্ত্রী শুক্লা অধিকারী। সঙ্গে রয়েছে তাঁদের দুধের সন্তানও। ছেলে-বৌমাকে উদ্ধার করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে পলাশের বাবারও। মঙ্গলবার আনন্দবাজার অনলাইনে এই প্রতিবেদন পড়ে ওই দম্পতিকে ফেরাতে উদ্যোগী হলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন।
অধীরের দফতর থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের প্রধান সচিব এবং বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করা হয়। বুধবার বেশ কয়েক বার দু’পক্ষের আলোচনা হয়েছে। কী ভাবে ওই দম্পতি এবং তাঁদের সঙ্গে আটকে থাকা অন্যান্যদের বাড়িতে ফেরানো যায়, সে ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে।
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার জৌগ্রাম পঞ্চায়েতের তেলে গ্রামের বাসিন্দা পলাশ এবং শুক্লা। নিম্নবিত্ত ওই পরিবারের সদস্যরা বাড়তি রোজগারের আশায় গত বছরের জুন মাসে বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। উঠেছিলেন মারাথাহাল্লি মহকুমার ভারথুর থানার সুলিবেলা গ্রামে একটি বাড়িতে। হোটেল, রেস্তরাঁ, সিনেমা হল-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বর্জ্যবস্তু, বোতল, প্লাস্টিক জাতীয় সরঞ্জাম বাছাই করা ছিল কাজ। কিন্তু গত ২৭ জুলাই ভারথুর থেকে সস্ত্রীক পলাশকে বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিজেদের ভারতীয় বলে প্রমাণ করতে গিয়ে আধার, প্যান, ভোটার কার্ড ইত্যাদি পুলিশকে দিয়েছিলেন পলাশ। পুলিশ পলাশের বৃদ্ধ বাবা, মা এবং প্রতিবেশী সুনীল অধিকারীকে ছেড়ে দিলেও অদ্ভুত ভাবে তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে ছাড়েনি বলে অভিযোগ। ছেলে-পুত্রবধূ এবং নাতিকে ছাড়িয়ে আনতে প্রচুর চেষ্টা করেছেন বৃদ্ধ পঙ্কজ। কিন্তু দরিদ্র ওই বৃদ্ধ আইনি লড়াই করতে গিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন বলে পরিবারের দাবি। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। মঙ্গলবার গ্রামে বৃদ্ধের দেহ ফিরলে শেষকৃত্য করেন দুই মেয়ে।
কেন পলাশ এবং তাঁর স্ত্রী-পুত্র এখনও বেঙ্গালুরুতে জেলবন্দি, তা নিয়ে বিস্মিত স্থানীয় প্রশাসনও। আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন ভারথুর থানার পুলিশ এসে পলাশদের তথ্য যাচাই করে গিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও তাঁদের বন্দি করে রাখা আশ্চর্যের বিষয়। এই পুরো বিষয়টি আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদন পড়ে অবহিত হন অধীর। নিজের দফতরকে সাংসদ নির্দেশ দিয়েছেন, ওই দম্পতি এবং অন্যান্যদের ফেরানোর পর কলকাতা থেকে জামালপুর পৌঁছে দেওয়ার। প্রতিনিয়ত কর্নাটক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে অধীরের দফতর। অধীর আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘খুব মর্মান্তিক ঘটনা। খবরটি পড়ে আমার খুব খারাপ লেগেছে। আমি ওঁদের সাহায্য করব। চেষ্টা করব ফিরিয়ে আনার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy