প্রতীকী ছবি।
বৈঠকের পরে বৈঠক হয়ে চলেছে। কিন্তু বাম ও কংগ্রেসের আসন-রফার বল আর গড়াচ্ছে না! বারংবার ফোন করে, কখনও দলীয় দফতরে আমন্ত্রণ জানিয়ে, কখনও আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বাম নেতারা কংগ্রেসের কাছে আসন সংক্রান্ত বক্তব্য জানতে চাইছেন। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সম্মতি সাপেক্ষে কোনও রূপরেখা এখনও পাওয়া যায়নি, এই বলে প্রতি বারই দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা। সেই বিলম্বের কৌশলেরই পুনরাবৃত্তি হল বৃহস্পতিবারের বৈঠকে!
কংগ্রেস হাইকম্যান্ড জোটে আনুষ্ঠানিক সম্মতি দেওয়ার পরে এ দিনই ছিল বাম ও কংগ্রেসের প্রথম বৈঠক। সেখানে ঠিক হয়েছে, ফেব্রুয়ারির শেষে বা মার্চের গোড়ায় ব্রিগেডে যৌথ সমাবেশ হবে। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যাতে সেই মঞ্চে থাকেন, তার জন্য সনিয়া ও রাহুল গাঁধীকে আবেদন জানাবে প্রদেশ কংগ্রেস। সেই সঙ্গেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ২৩, ২৬, ২৭ ও ৩০ জানুয়ারি যৌথ কর্মসূচি হবে। জোটের সিদ্ধান্তের আগে থেকেই বাম ও কংগ্রেস যৌথ কর্মসূচি নিয়ে চলেছে। ফলে, সেই ব্যাপারে যে বিশেষ আলোচনার দরকার পড়ে না, তা দু’পক্ষের নেতারাই জানেন। বাম শিবিরে বরং উষ্মা তৈরি হয়েছে, সময় গড়িয়ে গেলেও আসন নিয়ে কথা শুরু করতে কংগ্রেসের এত অনীহা কেন! কংগ্রেসের অন্দরের খবর, মুর্শিদাবাদ-মালদহে তারা বামেদের জন্য আসন ছাড়তে চায় না। তার জেরে গত বারের যে যার জেতা আসন বণ্টনেও জটিলতা!
আরএসপি-র মুখপত্রের দফতর ক্রান্তি প্রেসে এ দিন সন্ধ্যার বৈঠকে ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায়, সিপিআইয়ের স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য ও রাজ্য সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরী। কংগ্রেসের তরফে ছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। বামেদের সঙ্গে আলোচনার জন্য চার সদস্যের কমিটি গড়েছে এআইসিসি। তার মধ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ দিন কান্দিতে দলীয় কর্মসূচিতে ছিলেন। কলকাতায় আজ, শুক্রবারই ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থা নিয়ে তাঁর মিছিল করার কথা। মুর্শিদাবাদের কর্মসূচি বা কলকাতায় মিছিলের চেয়ে আসন-রফার আলোচনাকে প্রদেশ সভাপতি কেন অগ্রাধিকার দিচ্ছেন না, প্রশ্ন উঠেছে বাম শিবিরে। আর তাঁর অনুপস্থিতিতে মান্নান-প্রদীপ কোনও বিষয়েই পাকা কথা দিতে পারছেন না! কমিটির চতুর্থ সদস্য, নেপাল মাহাতো পুরুলিয়াতেই ছিলেন।
বৈঠকের পরে এ দিন বিমানবাবু পরিষ্কারই বলেছেন, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপি প্রচারের কাজ শুরু করে দিয়েছে। আমরা তাদের পিছনে পিছনে যেতে চাই না! সাধারণ মানুষের সমস্যা নিয়ে আমরা ময়দানে থাকতে চাই।’’ তাঁর বক্তব্য,আসন-রফা এক দিনে হওয়ার কথা নয়। কিন্তু আলোচনা এখনও শুরুই করা যায়নি। কংগ্রেস নেতারা তাঁদের জানিয়েছেন, প্রদেশ সভাপতির সঙ্গে কথা বলে ফের জানাবেন। বিমানবাবুর পাশে বসে প্রদীপবাবু বলেছেন, ‘‘বিচ্ছিন্ন ভাবে আন্দোলন না করে তাকে বড় চেহারায় নিয়ে যেতে হবে। রাজ্যের সঙ্গে জেলা ও ব্লক স্তরেও যৌথ কর্মসূচি বাড়াতে হবে।’’
এ বারের বৈঠকের একমাত্র অগ্রগতি বলতেবামেদের উদ্যোগে ব্রিগেড সমাবেশ নিয়ে দু’পক্ষের সহমত হওয়া। বিমানবাবু বলেন, ‘‘আমরা যারা একসঙ্গে নির্বাচনে লড়াই করব, তারা এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ের কথাও বলব।’’ প্রদীপবাবুর কথায়, ‘‘কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে সমাবেশে থাকার অনুরোধ করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy